সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:৪৭ am
কে এম রেজা, পুঠিয়া (রাজশাহী) :
রাজশাহীর পুঠিয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও গাফিলতির কারণে, সারের কৃত্রিম সংকট দেখা দিয়েছে বলে কৃষকরা অভিযোগ তুলেছেন। বেশি টাকা দিলে, কৃষকের চাহিদা মতো সব সার বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু উপজেরার সরকার অনুমোদিত বিএডিসির ডিলারের নিকট পাওয়া যাচ্ছে না। কৃষকরা বলছে,তাদের সারের সংকটের কথাগুলো উপজেলার সংশ্লিষ্ট কার্মকর্তাদের অভিযোগ করে কোনো উপকার পাচ্ছেন না।
তবে বিষয়টি তদন্তপূর্বক ওই ডিলারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার হবে বলে জানিয়েছেনম, কৃষি কর্মকর্তা শামসুন নাহার ভূইয়া। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় বিসিআইসির ডিলার রয়েছেন ৮ জন ও বিএডিসির ডিলার রয়েছেন ১৩ জন। আর সাব-ডিলার রয়েছে আরো তিন শতাধিকের মতো। শিলমাড়িয়া এলাকার কৃষক মোছাদেক আলি বলেন, সরকার নির্ধারিত ইউরিয়া এবং ডিএপি সার খুচরা মূল্যে ৮০০ টাকা বস্তা।
টিএসপি ১,১০০ টাকা এবং এমপি ৭৫০ টাকা। অথচ ডিলাররা চাষিদের নিকট প্রতি বস্তা ইউরিয়া বিক্রি করছেন ৮৫০-৯০০ টাকা। ডিএপি ১,০০০ থেকে ১,২০০ টাকা, টিএসপি ১,২০০ থেকে ১,৪০০ টাকা এবং এমপি ৮৫০ টাকা দরে। অপরদিকে দেশের উৎপাদিত টিএসপি ও ডিএপি সার দ্বিগুন দামে বিক্রি করা হচ্ছে। বিষয়টি কৃষি অফিসে বলা হলে তারা কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করছে না। ভালুকগাছি ইউপি এলাকার কৃষক সমশের আলি বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের সঙ্গে ডিলারদের বিশেষ চুক্তি রয়েছে।
লোক দেখানো জন মাঝেমধ্যে কর্মকার্তারা সার ডিলাদের গোডাউনে সার ঠিকমতো আছে কী না দেখে থাকেন। তারপর, ডিলাররা চাহিদা অনুসারে সার পাচ্ছেন না বলে প্রচার করছেন। এরপর বেশী দাম দিলেই মিলছে সার। তবে ডিলাররা কোনো চাষিকে সার বিক্রির রশিদ দিচ্ছেন না। কোনো কৃষকরা ডিলারদের নিকট ক্রয় রশিদ চাইলে তাদের কাছে সার বিক্রি করছেন না অভিযোগ উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তিদের অভিযোগ,দেশের উৎপাদিত টিএসপি সার দ্বিগুন দামে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু ডিলারের নিকট টিএসপি সারটি অতীতে এবং বর্তমানে কোনো দিনই ডিলারের নিকট পাওয়া যায়নি। তবে বেশি টাকা দিলে,চাহিদার মতো বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। কৃষি অফিস এবং ডিলাররা বলছে, দেশি টিএসপি সার বর্তমানে সরবরাহ কম রয়েছে। মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন,সাব ডিলাররা অতিরিক্ত মূল্যে সার বিক্রি করছে, এটা সত্য। নিয়মনুযায়ী প্রতিটি ডিলার সারের দোকানে মূল্যে তালিকা লিখে রাখা রয়েছে।
এ ছাড়া বিক্রিত সারের মূল্যে উল্লেখ করে প্রতিটি ক্রেতাকে রশিদ দেয়ার কথা। কিন্তু বর্তমানে এই নির্দেশনা গুলো কোনো ডিলার মানছেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিসিআইসির ডিলার বলেন,বাংলাদেশের তৈরি টিএসপি সার কোনো দিনই ডিলারা গোডাউনে আনেন না। তারা মিল গেটে কালো বাজারীদের নিকট বিক্রি করে দেন। এই পদ্ধিটি অফিসকে জানিয়ে করা হয়ে থাকে। অতীত হতে দেশিও টিএসটি সারটি সাধারণ কৃষকরা চাহিদা মতো পায় না। কিন্তু কালো বাজারে ব্যাপক পাওয়া যায়।
রাজশাহী জেলা সার ডিলার সমিতির সাবেক সভাপতি ওসমান আলী বলেন,বিসিআইসি ডিলাররা কোনো সময়ে সরকার নির্ধারিত সারের দামের বেশি নেয় না। বর্তমানে এমনিতে টিএসপি সারের বরাদ্দে অনেক কম পাওয়া যাচ্ছে। খুচরা বিক্রেতারা একটু বেশি নিতে পারেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামসুন নাহার ভূইয়া বলেন,আমাদের পক্ষ থেকে সব সময় বাজার দেখভাল করে আসছি। টিএসপির চাহিদা কমাতে সরকার ডিএপি সারে অনেক ভূর্তুকি দিচ্ছেন। যারজন্য, বর্তমানে টিএসপির আমদানি কিছুটা কম রয়েছে। বাকি সকল সার পর্যাপ্ত পরিমাণ সরবরাহ রয়েছে।
পুকুরে মাছ চাষের কারণে, এই এলাকায় টিএসটি সারের চাহিদা একটু বেশি দেখা দিয়েছে। ডিলাররা সারের দাম বেশি নিচ্ছে এমন কোনো লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থ গ্রহন করা হবে। আজকের তানোর