শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:৩৩ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক, গোদাগাড়ী : রাজশাহীর গোদাগাড়ী পৌরসভার মাসিক সভা থেকে ওয়াকআউট করেছেন ৯ কাউন্সিলর। আগের সভার গৃহীত সিদ্ধান্তবলী, কার্যবিবরণী সরবরাহ না করা ও আয়-ব্যয়ের কোনো হিসাব উপস্থাপন না করায় কাউন্সিলররা একযোগে সভা ছেড়ে চলে যান। ফলে পৌরসভার মাসিক সভাটি ভণ্ডুল হয়ে যায়।
কাউন্সিলরদের অভিযোগ আপদ-মস্তক দুর্নীতিবাজ ভারপ্রাপ্ত মেয়র ওবাইদুল্লাহ সব খাতের বরাদ্দ লোপাট করেছেন। তারা অনেক দিন ধরেই সভার কার্যবিবরণী সরবরাহ ও উপস্থাপনের দাবি করে আসছিলেন। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত মেয়র কোনোভাবেই তা দিচ্ছেন না। কারণ অনেক ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দুপুর ২টায় পৌরসভার সম্মেলন কক্ষে শুরু হয় অক্টোবর মাসের মাসিক সভা। সভার শুরুতেই ভারপ্রাপ্ত মেয়র কাউন্সিলরগণকে সভার কার্যবিবরণীতে স্বাক্ষর করতে বলেন। এ সময় ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ ৯ কাউন্সিলর আগের সভায় আলোচিত সিদ্ধান্তবলী ও কার্যবিবরণী সরবরাহের দাবি জানান।
এ সময় ভারপ্রাপ্ত মেয়র তাদের কার্যবিবরণী সরবরাহ করতে অস্বীকৃতি জানান। কাউন্সিলররা ভারপ্রাপ্ত মেয়রকে চলতি সভার আলোচ্যসূচি প্রকাশসহ উন্মুক্তভাবে আলোচনার দাবি তোলেন। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত মেয়র তা করতে অস্বীকার করেন। এ নিয়ে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের সঙ্গে কাউন্সিলরদের বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ৬ জন সাধারণ ও সংরক্ষিত ৩ নারীসহ মোট ৯ জন কাউন্সিলর সভা থেকে বেরিয়ে যান।
এদিকে কাউন্সিলররা মাসিক সভা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার এক ঘণ্টা পর ৫ হাজার টাকা করে দিয়ে ৩ জন নারী কাউন্সিলরের স্বাক্ষর নেওয়া হয় সভার উপস্থিতি বইতে। সেই সঙ্গে ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোফাজ্জল হোসেন মোফা গিয়ে বইতে স্বাক্ষর করেন।
অন্যদিকে কাউন্সিলরদের আরও অভিযোগ, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের পর বর্তমান পৌর পরিষদ গঠিত হয়। সাবেক মেয়র মনিরুল ইসলাম বাবু গত ২১ এপ্রিল ভারতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এরপর ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওবাইদুল্লাহ প্যানেল মেয়র হিসেবে ভারপ্রাপ্ত মেয়র হন। এরপর তিনি সাতটি মাসিক সভা করেছেন।
কিন্তু সভায় কোনোকিছু আলোচনা না করেই কাউন্সিলরদের স্বাক্ষর নিয়েছেন। কোন সভায় কী সিদ্ধান্ত হয় কাউন্সিলররা কিছুই জানেন না। কারণ কোনো সভার কার্যবিবরণী কোনো কাউন্সিলরকে সরবরাহ করা হয়নি। কাউন্সিলররা পৌরসভার আয়-ব্যয়ের হিসাব, গৃহীত ও বাস্তবায়িত প্রকল্পের বিবরণ, সরকারি অনুদান ইত্যাদি বিষয়ের বিবরণ চাইলেও ভারপ্রাপ্ত মেয়র তা দেননি।
অধিকাংশ কাউন্সিলর পৌরসভার কার্যক্রম সম্পর্কে পুরোপুরি অন্ধকারে আছেন। কাউন্সিলরা আরও বলেন, ভারপ্রাপ্ত মেয়র ও সচিব মিলে অনেক ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ লোপাট করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত মেয়র ওবাইদুল্লাহ বলেন, পৌরসভার উপনির্বাচনে নবনির্বাচিত মেয়রের শপথ ও দায়িত্ব হস্তান্তর প্রসঙ্গে সভায় আলোচ্যসূচি ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে কতিপয় কাউন্সিলর সভা ছেড়ে যান। পরে ভুল বুঝতে পেরে ৪ জন কাউন্সিলর স্বাক্ষর দিয়েছেন। মাসিক সভার কার্যবিবরণী সরবরাহ না করা ও আয়-ব্যয়ের বিষয়ে কোনো আলোচনা না করার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। আজকের তানোর