শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১২:২১ am
নিজস্ব প্রতিবেদক, গোদাগাড়ী :
আগামী ১৬ জানুয়ারি রাজশাহীর কাঁকনহাট পৌরসভার নির্বাচন। এ নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে লড়ছেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মাহালী সম্প্রদায়ের প্রার্থী ববিতা মার্ডি। ২০১৫ সালের নির্বাচনেও তিনি এ পদে লড়েছিলেন। ওই সময় তিনি ২০০ ভোটে হেরে যান। কিন্তু থেমে যাননি। আরও উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে এবারও এসেছেন ভোটের মাঠে। তার বিশ্বাস, এবার ভোটাররা তাকে নিরাশ করবেন না।
ববিতা মার্ডির বসবাস কাঁকনহাট পৌর এলাকার সুরশুনিপাড়া মহল্লায়। তার স্বামীর নাম সিলভেস্টার টুডু। ববিতা দুই কন্যাসন্তানের জননী। ববিতা মার্ডি পড়াশোনা করেছেন উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত। তিনি পৌরসভার ২নং সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হয়েছেন এবার। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আরও তিনজন নারী। ববিতা মার্ডি এবার নির্বাচনে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ করবেন বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। নির্বাচনে তিনি বেছে নিয়েছেন ‘জবা ফুল’ প্রতীক। ফুল তার পছন্দের জিনিস।
গত বুধবার সকালে প্রতীক বরাদ্দের সময় গোদাগাড়ীতে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দফতরেই ববিতা মার্ডিকে পাওয়া যায়। সেখানেই তার সঙ্গে কথা হয়। ববিতা মার্ডি বলছিলেন, গোটা কাঁকনহাট পৌর এলাকায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ভোটার প্রায় আড়াই হাজার। কিন্তু তাদের সম্প্রদায় থেকে কেউ জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হননি। তাদের কোনো প্রতিনিধি থাকে না। কেউ তাদের কথাও বলে না। সরকারি কর্মসূচিতে তাদের কোনো অংশীদারিত্বও নেই। এ জন্যই তিনি নির্বাচনে এসেছেন।
ববিতা আরও বলছেন, শুধু ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীই নয়, সবার ভোট নিয়েই তিনি নির্বাচিত হতে চান। কাজ করতে চান সব মানুষের জন্যই।
এদিকে রাজশাহীর কোনো পৌরসভাতেই এবার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কেউ নির্বাচন করছেন না। ২০১৫ সালের নির্বাচনেও ববিতা মার্ডি এই জনগোষ্ঠী থেকে একমাত্র প্রার্থী হয়েছিলেন।
সেই নির্বাচনে পরাজয়ের কারণ জানতে চাইলে ববিতা মার্ডি বলেন, ‘কাঁকনহাট প্রথম শ্রেণির পৌরসভা। সেখানে ভোট করা খুব কষ্টকর। নানারকম পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হয়।’
তিনি বলেন, ‘প্রতীক পেলাম। মানুষের দ্বারে দ্বারে যাব। বোঝাব যে, আমি গরিব মানুষ, আপনারাও গরিব। আমরা একে-অপরের সহযোগী হিসেবে কাজ করতে চাই। এবার তারা নিশ্চয় বুঝবেন। আমাকে ভোট দেবেন।’
রাত ৯টার দিকে ববিতা মার্ডির মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার স্বামী সিলভেস্টার টুডুকে পাওয়া যায়। তিনি জানালেন, পোস্টার ছাপানো হয়েছে। স্বামী-স্ত্রী মিলে পোস্টার টানানোর কাজ করছেন।
সিলভেস্টার বলেন, ‘আমাদের টাকা-পয়সা নাই। তাই প্রচারণায় খুব বেশি খরচ না বাড়িয়ে বাড়ি বাড়ি যাব। গতবার ভোটে হেরেও তো পাঁচটা বছর ধরেই ববিতা আপদে-বিপদে মানুষের পাশে থেকেছে। মানুষ এটা দেখেছে। এবার তারা নিশ্চয়ই এটার মূল্যায়ন করবেন।’