বুধবা, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:৩৫ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক : দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম বলেছেন, যা লিখবেন সাহসের সঙ্গে লিখবেন। সত্য লিখবেন। লেখার সপক্ষে প্রমাণ রাখবেন। কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে লিখবেন না। অন্যায় আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে লিখবেন। মানুষের ভোগান্তি নিয়ে লিখবেন।
তিনি বলেন, যুগান্তরের সাংবাদিকরা দেশ, মাটি ও মানুষের পক্ষে থাকবেন। দৈনিক যুগান্তর সূচনালগ্ন থেকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। নিপীড়িত ও বঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। যুগান্তর বহু প্রতিষ্ঠান ও দুর্নীতিবাজের মুখোশ উন্মোচন করেছে। যুগান্তর কখনো অন্যায়ের সঙ্গে আপস করে চলেনি। এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
রোববার দুপুরে দৈনিক যুগান্তরের রাজশাহী বিভাগীয় প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজশাহী মহানগরীর একটি রেস্টুরেন্টে যুগান্তরের সিনিয়র রিপোর্টার রাজশাহী ব্যুরোপ্রধান আনু মোস্তফার সভাপতিত্বে এবং ব্যুরোর স্টাফ রিপোর্টার ও রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের (আরইউজে) সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হকের সঞ্চালনায় এ প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিনিধি সম্মেলনে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম বলেন, একজন পরাধীন মানুষের পক্ষে স্বাধীনভাবে চিন্তা করা অসম্ভব। যে কারণে বাংলাদেশের গণমাধ্যম গণমানুষের মুখপত্র হয়ে উঠতে পারেনি। দেশের গণমাধ্যম গণমানুষের মুখপত্র হিসেবে গড়ে উঠুক। আর এক্ষেত্রে গণমাধ্যমকর্মীদের মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে মর্যাদার জায়গায় নিয়ে যেতে হবে।
সাইফুল আলম বলেন, করোনায় দেশের স্বাস্থ্য খাতসহ সব প্রতিষ্ঠানে বিপর্যয় ঘটেছে। করোনাকালে আমরা যুগান্তরের স্বপ্নদ্রষ্টা যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামকে হারিয়েছি। তিনি যুগান্তরের সব শক্তির আধার ছিলেন। তিনি আমাদের সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলার সাহস জুগিয়েছেন। তার অকাল প্রয়াণ শুধু যমুনা গ্রুপ নয়, যুগান্তরের জন্য বড় ক্ষতি। এ ক্ষতি অপূরণীয়। আমরা নুরুল ইসলামের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। তবে নুরুল ইসলামের সহধর্মিণী সালমা ইসলামের নির্দেশনায় যুগান্তর তার অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছে। আমরা নুরুল ইসলামের স্বপ্ন বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাব।
সাইফুল আলম বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনায় দেশের অধিকাংশ গণমাধ্যমে বেতন কর্তন এবং কর্মী ছাঁটাই হলেও যুগান্তরের অবস্থান ছিল ব্যতিক্রম। গত ১৮ মাসে একজন কর্মীকেও যুগান্তর ছাঁটাই করেনি। যুগান্তরে কর্মরতদের নিয়মিত বেতন-ভাতা দিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এজন্য যুগান্তর প্রকাশক ও যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। প্রকাশকের নির্দেশনায় সাহসের সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে পাঠকপ্রিয় যুগান্তর।
প্রতিনিধিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, একজন সাংবাদিক অফিসে সংবাদ প্রেরণের মধ্যেই তার দায়িত্ব শেষ নয়। যুগান্তরের ভালো অবস্থানের জন্য বিজ্ঞাপন এবং সার্কুলেশনেও নজর দিতে হবে। সার্কুলারের জন্য নিজ নিজ এলাকায় সব প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক এবং সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। এটাও খেয়াল রাখতে হবে, নিজস্ব অঞ্চলের মধ্যে যুগান্তরের প্রচার সংখ্যা বাড়লে ওই এলাকার প্রতিনিধির সম্মানও বাড়বে।
প্রতিনিধি সম্মেলনে মফস্বল সম্পাদক নাঈমুল করীম নাঈম বলেন, রাজশাহী বিভাগীয় প্রতিনিধি সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য যুগান্তর আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। যারা ভালো রিপোর্ট করবেন তাদের পুরস্কৃত করা হবে। ইতোমধ্যে যুগান্তরের সাংবাদিকদের ভালো রিপোর্টের জন্য পুরস্কার প্রদান শুরু হয়েছে। মফস্বল পর্যায়ের সাংবাদিকরাও ভালো রিপোর্টের জন্য পুরস্কৃত হবেন।
মফস্বল সম্পাদক আরও বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে যদি কোনো প্রতিনিধি সমস্যার সম্মুখীন হন তাহলে যুগান্তর তার পাশে দাঁড়াবে। এর আগেও অনেক প্রতিনিধি পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মামলা-হামলা ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। সব সময় যুগান্তর বলিষ্ঠভাবে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আগামীতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
প্রতিনিধি সম্মেলনে রাজশাহী বিভাগের আট জেলা এবং বিভিন্ন উপজেলার প্রতিনিধিরা তাদের মতামত উপস্থাপন করেন। এ সময় তারা বিভিন্ন সমস্যা এবং সম্ভাবনার কথা বলেন। যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম এবং মফস্বল সম্পাদক নাঈমুল করীম প্রতিনিধিদের বক্তব্য শোনার পর তাৎক্ষণিক দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন।
সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিদের যুগান্তরের পক্ষ থেকে উপহারসামগ্রী প্রদান করা হয়। বেলা সাড়ে ১০টায় প্রতিনিধি সম্মেলনের শুরুতেই যুগান্তরের স্বপ্নদ্রষ্টা যমুনা গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিটি নীরবতা পালন করা হয়।
এদিকে প্রতিনিধি সম্মেলন শেষ হওয়ার পর যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম এবং মফস্বল সম্পাদক নাঈমুল করীম রাজশাহীর প্রবীণ সংবাদপত্র এজেন্ট রেলওয়ে বুক স্টলের স্বত্বাধিকারী অসুস্থ হেকমত উল্লাহকে তার বাসায় দেখতে যান। এ সময় হেকমত উল্লাহর শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন তারা। সাইফুল আলম হেকমত উল্লাহর দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন। এ সময় হেকমত উল্লাহ যুগান্তর সম্পাদক এবং মফস্বল সম্পাদকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এছাড়া যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলমকে শুভেচ্ছা জানান রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের (আরইউজে) সভাপতি রফিকুল ইসলাম।
প্রতিনিধি সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মানিক রাইহান বাপ্পী, রাজশাহী ব্যুরোর ফটোসাংবাদিক আজম খান, বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি শরিফুল ইসলাম, বাঘা প্রতিনিধি আমানুল হক আমান, চারঘাটের মিজানুর রহমান, পুঠিয়ার কেএম রেজা, তানোরের ইমরান হোসাইন, সিরাজগঞ্জের চৌহালীর প্রতিনিধি রফিক মোল্লা, বগুড়ার শেরপুর প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর ইসলাম, পাবনা জেলার সাঁথিয়া প্রতিনিধি অধ্যাপক আব্দুদ দাইন সরকার, চাটমোহরের পবিত্র তালুকদার, সুজানগরের আল আমিন রিপন, ফরিদপুরের আব্দুল হাফিজ, নাটোর জেলা প্রতিনিধি শহীদুল হক সরকার, বাগাতিপাড়ার মঞ্জুরুল আলম মাসুম।
এছাড়াও নলডাঙ্গার প্রতিনিধি মো. আলভী শরীফ, সিংড়ার সাইফুল ইসলাম, লালপুরের সাহীন ইসলাম, বড়াইগ্রামের অহিদুল হক, গুরুদাসপুরের দিল মোহাম্মদ, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি আবু সাঈদ, নিয়ামতপুরের রেজাউল ইসলাম সেলিম, মান্দার রেজাউন নবী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি মনোয়ার হোসেন জুয়েল, শিবগঞ্জের জোবদুল হক, গোমস্তাপুরের নাহিদ ইসলাম, জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি শাহজাহান সিরাজ মিঠু, কালাইয়ের এম সেলিম সরোয়ার, ক্ষেতলালের হাসান আলী, পাঁচবিবির আকতার হোসেন বকুল, শাহজাদপুরের মুমীদুজ্জামান জাহান, প্রমুখ। আজকের তানোর