রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৯:৪৫ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী জেলা ও মহানগর যুবলীগের নেতৃত্বে দেড় যুগের বেশি সময় ধরে একই ব্যক্তিরা রয়েছেন। সংগঠন দুটিকে কার্যকর করতে আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর বর্ধিত সভা ডাকা হয়েছে। সভায় আহ্বায়ক অথবা সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হতে পারে। এমনটি হলে দেড় যুগের বেশি সময় ধরে যুবলীগের জেলা ও মহানগর কমিটির শীর্ষ পদে থাকা নেতৃত্বের অবসান হবে। সচল হবে প্রায় দেড় বছর পর দলটির সাংগঠনিক কার্যক্রম।
দলটির একাধিক সূত্রমতে, বর্ধিত সভায় যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা থাকবেন। ইতোমধ্যে যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা একাধিকবার রাজশাহী ঘুরে গেছেন। নগর ও জেলা যুবলীগের নেতৃত্বে আসতে আগ্রহী দলের ত্যাগী নেতারাও বর্ধিত সভা, আহবায়ক বা সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির বিষয় নিয়ে খোঁজখবর রাখছেন। জেলা ও মহানগর যুবলীগের নেতৃত্বে আসার জন্য এক ডজন নেতা লবিং-গ্রুপিংয়ে ব্যস্ত রয়েছেন।
এছাড়াও তারা বলছেন, এ বর্ধিত সভায় রাজশাহী যুবলীগের দুই কমিটি ভেঙে আহ্বায়ক অথবা সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হতে পারে। এটি দলটির তৃণমূলের সার্বোজনিন দাবি বলছেন তারা।
তবে আহ্বায়ক অথবা সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠনের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সভাপতি রমজান আলী বলেন, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি করার আগে নগর যুবলীগের ৩৭টি ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা জরুরি। কারণ সাত বছরের বেশি সময় আগে এগুলো গঠন করা হয়েছিল। চার বছর আগে মেয়াদ শেষ হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে ওয়ার্ড কমিটিগুলো করা সম্ভব হয়নি।
তিনি আরও বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ওয়ার্ড কমিটিগুলো গঠন শেষে নগর যুবলীগের সম্মেলন করা হবে। একই পরিস্থিতি জেলা যুবলীগেরও। নেতৃত্ব বদলের জন্য তারাও অপেক্ষা করছেন বলেন প্রায় দেড় যুগ ধরে নেতৃত্বে থাকা এই নেতা।
দলীয় সূত্রগুলো জানায়, নগর ও জেলা যুবলীগের শীর্ষ নেতাদের অনেকের বয়স ৫৫ থেকে ৬০ বছর হয়েছে। এ বয়সে তাদের যুবলীগের নেতৃত্ব ছাড়ার দাবি করে আসছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নগর ও জেলা যুবলীগের একাধিক দায়িত্বশীল নেতা বলেন, আমরা যুবলীগের নেতৃত্ব ছাড়তে তৈরি আছি। নেতৃত্ব ছাড়ার আগে আমরা চেয়েছিলাম মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগে যেন আমাদের জায়গা হয়। নেতাদের কাছে আবেদন-নিবেদন করেও জায়গা পাওয়া যায়নি।
অথচ আন্দোলন সংগ্রামে আমরা সক্রিয়ভাবে মাঠে থেকেছি। সংকটময় পরিস্থিতিতে সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছি। জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটিতে হাইব্রিড নেতারা জায়গা পেয়েছেন। কিন্তু আমাদের কোনো জায়গা নেই।
যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক (১) রফিকুল ইসলাম সৈকত জোয়ার্দ্দার বলেন, স্বচ্ছ ভাবমূর্তিসম্পন্ন শিক্ষিত, কর্মীবান্ধব ও দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তিরা কমিটিগুলোয় জায়গা পাবেন। চাঁদাবাজ, মাদক ব্যবসায়ী বা টেন্ডারবাজদের কোনোভাবেই কমিটিতে জায়গা দেওয়া হবে না।
জানা গেছে, ২০০৪ সালের ১৮ এপ্রিল রমজান আলীকে সভাপতি ও মোশাররফ হোসেন বাচ্চুকে সাধারণ সম্পাদক করে নগর যুবলীগের কমিটি করা হয়। ২০১৬ সালের ৪ মার্চের সম্মেলনেও রমজান আলী ও বাচ্চু কমিটি পুনঃনির্বাচিত হয়। ১৭ বছর ধরে নগর যুবলীগের কার্যক্রম তারাই চালাচ্ছেন।
অন্যদিকে, রাজশাহী জেলা যুবলীগও ১৭ বছর ধরে একই নেতৃত্বে চলছে। জেলা যুবলীগের সভাপতি আবু সালেহ ২০০৪ সাল থেকে এখনো দায়িত্বে আছেন। জেলা সেক্রেটারি খালিদ ওয়ার্সি কেটুর মৃত্যুর পর আলী আহসান সেন্টু ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করছেন।
এছাড়াও নগরের ওয়ার্ডসহ জেলা যুবলীগের ৯টি উপজেলা, ১৪টি পৌরসভা এবং ৭৮টি ইউনিয়নসহ শতাধিক ইউনিট কমিটির মেয়াদ কয়েক বছর আগে শেষ হয়েছে। এসব কমিটির সাংগঠনিক কার্যক্রম নেই। পৌর উপজেলা ও ইউনিয়ন কমিটিগুলোর নেতারা নানা অপকর্মে জড়িয়েছেন। এতে সংগঠনটির ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে।
এজন্য নগর ও জেলা যুবলীগের কমিটি ভেঙে দিয়ে সম্মেলনের দাবি জানিয়ে আসছেন নেতাকর্মীরা অনেক দিন ধরে। কিন্তু করোনার প্রকোপে তা সম্ভব হয়নি। ১৮ সেপ্টেম্বরের বর্ধিত সভায় নেতাকর্মীরা কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে আহবায়ক বা সম্মেলন কমিটি করার এ দাবি জানাবেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল নেতা জানিয়েছেন। আজকের তানোর