শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০১:০৯ am
আজকের তানোর ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আজকে আমার অত্যন্ত আনন্দের দিন। গৃহহীন পরিবারকে ঘর দিতে পারছি, এটি আমার সবচেয়ে আনন্দের। তিনি বলেন, আমার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানুষের কথাই ভাবতেন। আমাদের পরিবারের লোকদের চেয়ে তিনি গরিব অসহায় মানুষদের নিয়ে বেশি ভাবতেন এবং কাজ করেছেন। এই গৃহ প্রদান কার্যক্রম তারই শুরু করা।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে শনিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ঘর হস্তান্তর কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এদিন দেশের ৪৯২ উপজেলার প্রায় ৭০ হাজার পরিবারকে পাকা বাড়ি হস্তান্তর করেন তিনি। এ সময় লাইভে সংযুক্ত ছিল- খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা, চাপাইনবাবগঞ্জ সদর, নীলফামারীর সৈয়দপুর ও হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলা প্রশাসন। পাশাপাশি দেশের সব উপজেলা অনলাইনে এ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়।
এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে অসহায় ভূমিহীন এবং গৃহহীন ৯ লাখ পরিবারের স্বপ্ন পূরণ হবে।
সারা দেশে প্রায় ৮ লাখ ৮৫ হাজারের বেশি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১ লাখ ২৯ হাজার ১৯৭, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৬ হাজার ৩, চট্টগ্রাম বিভাগে ১ লাখ ৬১ হাজার ২৯৭, রংপুর বিভাগে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৮৩৪, রাজশাহী বিভাগে ৯৬ হাজার ৫০৪, খুলনা বিভাগে ১ লাখ ৪২ হাজার ৪১১, বরিশাল বিভাগে ৮০ হাজার ৫৮৪ এবং সিলেট বিভাগে ৫৫ হাজার ৬২২টি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী (মুজিববর্ষ) উপলক্ষে তালিকায় থাকা এসব ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে ঘর করে দিচ্ছে সরকার।
ইতোমধ্যে ২১ জেলার ৩৬ উপজেলায় ৪৪টি প্রকল্প গ্রামে ৭৪৩টি ব্যারাক নির্মাণের মাধ্যমে ৩ হাজার ৭১৫টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। একই সঙ্গে একক গৃহ ও ব্যারাকে মোট ৬৯ হাজার ৯০৪টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে জমি ও ঘর দেওয়ার ঘটনা বিশ্বে এটাই প্রথম।
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে ২৪ হাজার ৫৩৮টি পরিবারের জন্য মোট বরাদ্দ ৪১৯ দশমিক ৬০ কোটি টাকা। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৩৮ হাজার ৫৮৬টি ঘর বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৫৯ দশমিক ৮২ কোটি টাকা।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে গুচ্ছগ্রাম দ্বিতীয় পর্যায়ে সিভিআরপি প্রকল্পের আওতায় ৩ হাজার ৬৫টি ঘর বরাদ্দ করা হয়েছে। এ খাতে বরাদ্দ ৫২ দশমিক ৪১ কোটি টাকা। অতিরিক্ত পরিবহন বাবদ বরাদ্দ (প্রতিটি ঘরের জন্য ৪ হাজার টাকা) মোট ২৬ দশমিক ৪৮ কোটি টাকা।
এছাড়া সব উপজেলায় জ্বালানি বাবদ বরাদ্দ ধরা হয়েছে ১০ দশমিক ৪০ কোটি টাকা। মোট ৬৬ হাজার ১৮৯টি পরিবারের ঘরের জন্য বরাদ্দ ১১৬৮ দশমিক ৭১ কোটি টাকা।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প একক গৃহনির্মাণের সামগ্রিক কার্যক্রম সমন্বয় করছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির মাধ্যমে একক গৃহনির্মাণ করা হচ্ছে। ১৯৯৭ সাল থেকে গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত আশ্রয়ণ প্রকল্পের সংখ্যা ২ হাজার ১৭২টি। নির্মিত ব্যারাক সংখ্যা ২২ হাজার ১৬৪টি। ব্যারাকে পুনর্বাসিত ভূমিহীন পরিবারের সংখ্যা ১ লাখ ৬৫ হাজার ৬৬৮টি। জমি আছে কিন্তু ঘর তৈরির সামর্থ্য নেই এমন ১ লাখ ৫৩ হাজার ৭৮৪ পরিবারকে সহযোগিতা করা হয়েছে।
তিন পার্বত্য জেলায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পরিবারের জন্য নির্মিত বিশেষ ডিজাইনের ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে ৫৮০টি। ২৩ বছরে পুনর্বাসিত পরিবারের সংখ্যা ৩ লাখ ২০ হাজার ৫২টি।
এর আগে মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার হিসেবে কক্সবাজার জেলার খুরুশকুল বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্পে নির্মিত পাঁচতলাবিশিষ্ট ২০টি বহুতল ভবনে প্রথম পর্যায়ে ৬০০টি জলবায়ু উদ্বাস্তু পরিবারকে একটি করে ফ্ল্যাট উপহার দেওয়া হয়েছে।
এ প্রকল্পের আওতায় পাঁচতলাবিশিষ্ট ১৩৯টি বহুতল ভবন নির্মাণ করে ৪ হাজার ৪০৯টি জলবায়ু উদ্বাস্তু পরিবার পুনর্বাসন করা হবে। সূত্র : যুগান্তর।