সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:১২ am
ডেস্ক রির্পোট : থেমে গেল ‘চানঘরে গান’। বাংলা সাহিত্যের বরেণ্য লেখক বুদ্ধদেব গুহ আর নেই। রোববার ভারতীয় সময় রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি পরলোকগমন করেন। দক্ষিণ কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
বুদ্ধদেব গুহ পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হলেও বাংলা সাহিত্য জগতে তিনি ছিলেন এক অসাধারণ ব্যক্তিত্ব। এক সময় তাঁর নেশা ছিল জঙ্গলে জঙ্গলে ঘোরা এবং শিকার করা। তাঁর লেখাতেও ফুটে উঠেছে জঙ্গলের প্রতি তাঁর অগাধ প্রেম। তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘জঙ্গল মহল’। এরপর একে একে তাঁর লেখা ‘কোজাগর’, ‘মাধুকরী’, ‘বাবলি’, ‘চানঘরে গান’ পাঠকদের কাছে জনপ্রিয়তা পায়। গল্প বা উপন্যাসে চরিত্রের নামকরণেও ছিল তাঁর আলাদা মুনশিয়ানা।’ ঋজুদা’ বা ‘ঋভু’ ছদ্মনামে কিশোর সাহিত্যেও তাঁর অসাধারণ অবদান বহুকাল মনে রাখবে বাঙালি পাঠককূল।
বুদ্ধদেব গুহের জন্ম কলকাতায় ১৯৩৬ সালে ২৯ জুন। কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্সের প্রাক্তন ছাত্র বুদ্ধদেব গুহ শুধু গল্প-উপন্যাসেই নয়, গাইতেন পুরাতনী টপ্পা গান। ছবি আঁকাতেও ছিল তাঁর পারদর্শিতা। তিনি ‘আনন্দ পুরস্কার’ পেয়েছিলেন। অগণিত বাঙালি পাঠকের ভালোবাসায় হয়েছেন সিক্ত।
জঙ্গল তাঁর কাছে অত্যন্ত প্রিয় জায়গা ছিল। ভারতের তো বটেই, আফ্রিকার বিভিন্ন জঙ্গলে তিনি ঘুরেছেন। এক সময় শিকারও করেছেন। পরবর্তীতে অবশ্য শিকার নয়, শুধু জঙ্গলের প্রতি ভালোবাসাই তাঁকে টেনে নিয়ে যেত জঙ্গলে। কিন্তু করোনা তাঁকে কাবু করে। গত এপ্রিলে প্রবীণ সাহিত্যিকের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। ৩৩ দিন হাসপাতালে লড়াই করে বাড়ি ফেরেন। কিন্তু শারীরিকভাবে অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েন তিনি। গত ৩১ জুলাই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে দক্ষিণ কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তিনি রোববার হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তাঁর মৃত্যুতে বাংলা সাহিত্য জগতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
সাহিত্য একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক প্রচেত গুপ্ত মনে করেন, ‘বাংলা সাহিত্যের বিরাট ক্ষতি হলো। বুদ্ধদেব গুহ চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবেন বাঙালি পাঠকের মনে। মানুষ হিসেবেও তিনি ছিলেন অত্যন্ত উদার মনের।’ সূত্র : আজকের পত্রিকা