বুধবা, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:১৮ am
ক্রীড়া ডেস্ক : বাংলাদেশে পুরুষ ক্রিকেটের ইতিহাস ও বিবর্তন নিয়ে অনেক বই এরই মধ্যে লেখা হয়েছে। কিন্তু সে তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে নারী ক্রিকেটের ইতিহাস তুলে আনার কাজ। এটি অনেকটা কষ্টসাধ্য বিষয়ও বটে। সেই কষ্টসাধ্য বিষয়কেই সহজ করে তোলা হয়েছে, ‘মেয়েরাও পারে’ বইতে।
বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটের বিবর্তন, সাফল্যের ওপর প্রথম লেখা হলো ইতিহাসভিত্তিক বই ‘মেয়েরাও পারে’। বইটির মোড়ক উন্মোচন ও প্রকাশনা উৎসব হলো রোববার দুপুরে।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলানামার প্রকাশনায়, মনোয়ার আনিস খান মিনুর গ্রন্থনা এবং ক্রীড়া সাংবাদিক শামীম চৌধুরীর সম্পাদনায় প্রকাশিত গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন ও প্রকাশনা অনুষ্ঠান হয়েছে ঢাকা ক্লাবের স্যামসন এইচ চৌধুরী সেন্টারে।
ওই অনুষ্ঠানেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কার্যনির্বাহী পরিষদের প্রথম নারী সদস্য মনোয়ার আনিস খান মিনু তার এ গ্রন্থ রচনার প্রেক্ষাপট ও কারণ উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, এ গ্রন্থে নারীদের সংগ্রাম ও ক্রিকেটের সাফল্যগুলো রয়েছে। এ গ্রন্থ আশা করি নারী ক্রিকেট উন্নয়ন ও নারীদের ক্রিকেটে আগ্রহ বাড়াতে সক্ষম হবে।
প্রকাশনা উৎসবে গ্রন্থটির ওপর আলোচনা করেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি, বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা, বিসিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পরিচালক এবং এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের সাবেক সিইও সৈয়দ আশরাফুল হক, বাংলাদেশ মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সভানেত্রী রাফিয়া আক্তার ডলি, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক রকিবুল হাসান, জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার শাকিল কাশেম ও ইশতিয়াক আহমেদ।
বিসিবির সাবেক সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, আমি যখন বিসিবির সভাপতি ছিলাম, তখন মেয়েদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে ক্রিকেটার হিসেবে তৈরির কাজটা শুরুটা করেছিলাম। বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটারদের অর্জিত সাফল্য এখন গর্ব করার মতো। এশিয়ান ওম্যান্স টি-টোয়েন্টিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এটা অনেক বড় অর্জন। এশিয়ান গেমসেও নারীদের পদক রয়েছে। সামনে কমনওয়েলথ গেমসে নারী ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত থাকছে। আশা করি সেখানে আমরা পদকের জন্যই যাবো।
বিসিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও এসিসির প্রধান নির্বাহী সৈয়দ আশরাফুল হক বলেন, নিঃসন্দেহে এটি দারুণ উদ্যোগ। এ বইটি ইংরেজিতে অনুদিত হলে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের নারীদের ক্রিকেট সম্পর্কে জানতে পারবে।
মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি বিওএ মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা বলেন, এশিয়ান গেমসে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে সোচ্চার ছিলাম। বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন এরকম যে কোনো উদ্যোগের সঙ্গে থাকবে। যে কোনো সহায়তা আমরা পাশে থাকবো।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক রকিবুল হাসান বলেন, ১৯৮৩ সালে আমরা পশ্চিমবাংলা সফরে গিয়েছিলাম। তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ-ভারত টেস্ট চলছিল ইডেনে। আমাদের স্বপ্ন ছিল ইডেনে খেলা। ইডেনে গিয়ে আমরা জেনে গর্বিত হই, আমাদের আগে নারীরা ইডেনে খেলেছেন।
আলোচকরা এ গ্রন্থ রচনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরায় মনোয়ার আনিস খান মিনু ও শামীম চৌধুরীর প্রশংসা করেছেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে বিভিন্ন খেলাধুলার ওপর ইতিহাসভিত্তিক গ্রন্থ রচনায় ক্রীড়া গবেষক ও সংশ্লিষ্ট ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটের শুরু থেকে এ পর্যন্ত প্রতিটি ঘটনার বিবরণ, নেপথ্য ঘটনা, ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের লেখা, ঘটনাকালের ছবি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বইটিতে। ম্যাট পেপারে চার রঙা ছাপার বইটির মূল্য ৫০০ টাকা। বইটি পাওয়া যাবে প্রকাশক বাংলানামার স্টলে (১২০/৫ পূর্ব রাজাবাজার, ঢাকা, ১২১৫)। সূত্র : জাগোনিউজ