সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৯:৫৩ am
বিনোদন ডেস্ক : চিত্রনায়িকা পরীমনি ইস্যুতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির আচরণে হতবাক ও বিস্মিত হয়েছেন ঢাকাই ছবির শীর্ষ নায়ক শাকিব খান। শনিবার তিনি বলেন, ‘একজন সহকর্মী হিসেবে যতটা জেনেছি, পরীমনি বাবা-মা হারা একটি মেয়ে। তার বেড়ে ওঠার সঙ্গে আর দশটা তরুণ-তরুণীর বেড়ে ওঠার মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য আছে। তার স্ট্রাগল এবং আর দশটা মানুষের স্ট্রাগল এক হবে না।
হয়তো অভিভাবকের অভাবেই অনেক সময় সঠিক সিদ্ধান্তটা নিতে পারেনি।’ পরীমনিকে আটক করা হয়েছে ৪ আগস্ট। আর শাকিব তার অভিমত প্রকাশ করেছেন ১৪ আগস্ট। ১১ দিন পর শাকিবের এই অভিমতে হতবাক হয়েছেন নেটিজেন ও সহশিল্পীরা। অনেকেই মনে করছেন, ‘শাকিব সেইফ সাইডে খেলছেন।’ কেননা পরীমনি তার সহ-অভিনেত্রী। দুটি চলচ্চিত্রে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন। নায়িকা আটকের পর শাকিবের একটা বিবৃতি প্রয়োজন ছিল শীর্ষ নায়ক হিসেবে।’
নেটিজেনরা বলছেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে বিশিষ্ট নাগরিকরা পরীমনির মুক্তির বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। এরপর হাওয়া একটু ঘুরতে থাকে, তারপর শাকিব অনুকূল আবহাওয়ায় বিদ্রোহীর মতো পোস্ট দিলেন। যেন খুব শুভাকাক্সক্ষী।’ কয়েকজন শিল্পী বলছেন, ‘শিল্পী সমিতি এমন একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, শাকিবের খারাপ লেগেছে, হতবাক হয়েছেন তিনি। এত দেরি করে কেন হতবাক হলেন? তার তখনই কথা বলা উচিত ছিল না?’ যারা পরীমনিকে বিপথে নিয়ে গেছে, তাদেরও বের করতে হবে- শাকিবের এমন মন্তব্যে নায়কের দিকে তীর ছুড়েছেন একজন তরুণ গায়ক।
তিনি বলেছেন, আপনি কি এতদিন জানতেন না যে পরীমনি বিপথে না সুপথে চলছে তখন কই ছিলেন?’ শাকিব খান বলেন, গত ১০ আগস্ট আদালত চত্বরে পরীমনির শতবর্ষী নানা তার নাতনিকে দেখতে ছুটে গিয়েছিলেন। করোনার ভয়াবহতাও তাকে আটকাতে পারেনি। রক্তকে উপেক্ষা করতে পারেনি রক্ত। কিন্তু সময় কী নিষ্ঠুর! নাতনির সঙ্গে দেখাই হলো না তার নানার। আদালত চত্বরেই তার নানাকে বলতে শুনেছি, নিজের জন্য জীবনে কিছুই করেনি পরীমনি। সব মানুষের জন্য দান করে গেছে।
আর এখন পরিস্থিতির শিকার হয়েছে।’ শাকিব লিখেছেন, ‘বিষয়টা এখন বিচারাধীন, ওই বিষয়ে কিছু বলছি না। তিনি যে মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে গেছেন, তার কী অপরাধ সেটা বিশ্লেষণে যাচ্ছি না। দেশের প্রচলিত আইন-আদালতে যা আছে, নিশ্চয়ই নিরপেক্ষ তদন্ত শেষে সঠিক বিচার হবে। শুধু অভিযোগের ভিত্তিতে পরীমনিকে গ্রেপ্তারের পর তার প্রতি কোনো ধরনের সহযোগিতার হাত না বাড়িয়ে, দুঃসময়ে শিল্পীর পাশে না থেকে, উল্টো তড়িঘড়ি করে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি। কোনো কিছু না ভেবে পরীমনির সদস্যপদ সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে। এটা কাটা ঘায়ে নুনের ছিটার মতো।
সমিতির এই আচরণ ব্যক্তিগতভাবে আমাকে হতবাক ও বিস্মিত করেছে। আমি মনে করি, সহশিল্পীর সঙ্গে সংগঠনের এটি একটি অমানবিক আচরণ। প্রশ্ন থেকে যায়, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি তাহলে কাদের স্বার্থে?’ শাকিব খান বলেন, ‘যারা পরীমনিকে বিপথে নিয়ে গেছে, তাদেরকেও খুঁজে বের করা উচিত। ৩০টির বেশি সিনেমার সঙ্গে তিনি জড়িত বলে জানতে পেরেছি। তার হাতে আছে আরো বেশ কিছু সিনেমা। কিন্তু যারা বছরের পর বছর একটি সিনেমায়ও কাজ না করে দিনের পর দিন শিল্পী সাইনবোর্ড ব্যবহার করে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে, তাদেরও আয়ের উৎস খুঁজে বের করা উচিত।
‘ ‘সহশিল্পী হিসেবে আশা রাখি, পরীমনির ক্ষেত্রে আইন তার স্বকীয়তা বজায় রাখবে। পরীমনি যখন ফিরবে, তার ভুল থেকে শিক্ষাও নেবে। যে শিক্ষা তার আগামী জীবনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে। খেয়াল করছিলাম, অপেক্ষাও করছিলাম। প্রত্যাশা ছিল, বিপরীতে বেড়েছে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা। গত কয়েক দিন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে থেকে শুক্রবার আদালতের নির্দেশে পরীমনিকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
উল্লেখ্য, শাকিব খান পরীমনি ‘ধূমকেতু’ ও ‘আরো ভালোবাসবো তোমায়’ নামের দুই ছবিতে জুটি হয়ে অভিনয় করেছেন। নায়িকার এহেন পরিস্থিতিতে শাকিবের এতদিন চুপ থাকায় হতবাক হয়েছেন কিছু শিল্পী ও নেটিজেনরা। সূত্র : এফএনএস