বৃহস্পতিবর, ১৯ েপ্টেম্বর ২০২৪, সময় : ১১:২৩ pm

সংবাদ শিরোনাম ::
ঢাবিতে সব ধরনের রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিখোঁজের সাতবছর পর ছেলেকে ফিরে পেলেন উচ্ছ্বসিত মা তানোরে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত রাসিকের সাবেক কাউন্সিলর মনসুরের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন সেই রুবেল আরও ৭ দিনের রিমান্ডে সিলেবাস সংক্ষিতের দাবিতে রাজশাহীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শেষে সমাবেশ পবায় উপজেলা প্রশাসনে ও কাটাখালি পৌরসভায় ভোগান্তি চিত্র নায়িকা পরীমণি পালন করলেন ‘বিবাহ বিচ্ছেদ’ দিন এক দফা দাবিতে রাজশাহীতে নার্সদের মিছিল শেষে মানববন্ধন প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) বিশ্ববাসীর জন্য রহমত : দুধরচকী রাজশাহীতে শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ডলার সংকটে বাংলাদেশকে সার দিচ্ছে না সরবরাহকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূসের নাগরিক সংবর্ধনা বাতিল রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে বিচারিক ক্ষমতা পেলো সেনাবাহিনী আন্দোলনের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করলেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ বাগমারায় অধ্যক্ষ ও সভাপতির অনিয়মের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়টি গুজব : আসিফ মাহমুদ একদিনের জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা রাজশাহী আসছেন আজ বাংলাদেশ ও ভারত ভিসা জটিলতায় চার যৌথ সিনেমা একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির শাহরিয়ার কবির আটক
হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই পাখি শিল্পের বড়াই করা তাল গাছের বাসা

হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই পাখি শিল্পের বড়াই করা তাল গাছের বাসা

আর কে রতন :
উত্তরের ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীন নিদর্শনের জেলা রাজশাহী। ৯টি উপজেলার সমন্বয়ে গঠিত শিক্ষা, সংস্কৃতি, স্বাস্থ্য, মাঠ পথঘাট, পদ্মা নদী, ও রেল লাইনে আচ্ছাদিত পুরো এলাকা। গ্রামের মেঠোপথ, প্রকৃতির বিশাল সমাহার। দিগন্ত জুড়া নয়নাভিরাম দৃশ্যে এখনো চোখ জুড়িয়ে যায়। প্রকৃতির মনোরম লীলাভূমি হতে হারাতে বসেছে অনেক কিছু। এর মধ্যে বিশেষ করে দেশি ফল ও পাখি ই প্রধান। সময়ের বিবর্তনে পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে রাজশাহী অঞ্চল থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে কবি রজনীকান্ত সেনের কাল জয়ী কবিতার সেই তাল গাছের বাবুই পাখির তৈরী নিখুঁত বাসা।

‘বাবুই পাখিরে ডাকি বলিছে চড়াই, কুঁড়েঘরে থেকে করো শিল্পের বড়াই। আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকা পরে, তুমি কত কষ্ট পাও রোদ-বৃষ্টি-ঝড়ে’ কবি রজনীকান্ত সেনের এই অমর কবিতাটি এখন এ দেশে তৃতীয় শ্রেণির বাংলা বইয়ে পাঠ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত। শুধুমাত্র পাঠ্যপুস্তকের কবিতা পড়েই বর্তমান যুগের শিক্ষার্থীরা বাবুই পাখির শিল্পনিপুণতার কথা জানতে পারে। কিন্ত আর চোখে পড়ে না বাবুই পাখি ও তার তৈরি দৃষ্টিনন্দন তাল গাছে সারি সারি সেই ছোট্ট ছোট্ট বাতাসে দুলানো বাসা এবং বাসা তৈরির নৈসর্গিক দৃশ্য।

তানোর সাহিত্য পরিষদের সাবেক সভাপতি কবি স্বপন কুমার বিশ্বাস বলেন, বর্তমানে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে গ্রামাঞ্চল থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে প্রকৃতির এক অপরূপে সৃষ্টি বাবুই পাখি। প্রকৃতির বয়নশিল্পী, স্থপতি ও সামাজিক বন্ধনের কারিগর নামে সমধিক পরিচিত বাবুই পাখি ও তার অপরূপ শিল্পসম্মত বাসা এখন আর চোখে পড়ে না।

তিনি জানান, কীটনাশক ব্যবহারে পরিবেশ অসুস্থ হচ্ছে আর উৎপাদন খরচ বাড়ছে কৃষিতে। পোকা দমন ও পরিবেশ সুস্থ রাখতে পাখির ভূমিকা উল্লেখ করার মতো। পাখি নিয়ে কবি সাহিত্যকরা রচনা করেন গান-কবিতা-গল্প ও ছড়া। কিন্তু আজ বৈষ্মিক উষ্ণতায় হারিয়ে যাচ্ছে জীব বৈচিত্র। ফসলে অতিরিক্তি কীটনাশক ব্যবহার, নির্বিচারে পাখি হত্যা, প্রাচীন বৃক্ষ নিধন ও নিরাপদ আশ্রয়ের অভাবে বংশ বৃদ্ধি হচ্ছে না পাখির। তাই দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে বাবুই সহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি।

কেশরহাট ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ কথা সাহিত্যিক গিয়াস উদ্দিন বলেন, সব কিছুর পরিবর্তনের সাথে সাথে হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির বয়নশিল্পী, স্থপতি এবং সামাজিক বন্ধনের কারিগর বাবুই পাখি ও তার তালগাছে বুনন বাসা। খড়, তালপাতা, ঝাউ আর কাশবনের লতাপাতা দিয়ে বাবুই পাখি উঁচু তালগাছে বাসা বাঁধত। সেই বাসাগুলো দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, তেমনি মজবুত। প্রবল ঝড়েও তাদের বাসা পড়ে যেত না। বাবুই পাখির শক্ত বুননের এ বাসাটি শিল্পের এক অনন্য সৃষ্টি যা টেনেও ছেঁড়া সম্ভব নয়।

তিনি আরও বলেন, একসময় বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে সারি সারি উঁচু তালগাছে বাবুই পাখির দৃষ্টিনন্দন বাসা দেখা যেত। এখন তা আর সচরাচর চোখে পড়ে না। কালের বিবর্তনে ও পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে সেই নয়ন ভোলানো পাখিটিকেও তার নিজের তৈরি বাসা যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরো ফুটিয়ে তুলতো, তা আজ আমরা হারাতে বসেছি।

রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ডক্টর. আজিজুর রহমান বলেন, স্বাধীনতার সুখ’ শিরনামে বাবুই পাখি ও তার বাসা নিয়ে রজনী কান্ত সেনের লেখা একটি বিখ্যাত কবিতা। বাবুই পাখি কে ঘিরে এমন গান, ছড়া ও কবিতা আছে অসংখ্য। কিন্তু বাবুই পাখির কিচিরমিচির ডাক এখন আর শোনা যায় না। কারণ, পাখিটির প্রিয় বাসস্থল তালগাছও আজ হারিয়ে যাওয়ার পথে। ছোট্ট পাখি বাবুই মূলত তাল গাছেই তাদের বাসা বাঁধে এমনটি দেখা যায় আদিকাল থেকেই। শক্ত বুননের বাসা যেন শিল্পের এক অনন্য সৃষ্টি। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য তালগাছ যেমন এখন আর দেখা যায় না, তেমনি দেখা মেলে না কবি রজনী কান্ত সেনের লেখা কবিতার নায়ক বাবুই পাখিও।

গ্রামের মাঠের ধারে, পুকুর পাড়ে, নদীর ধারে একপায়ে দাঁড়িয়ে থাকা তালগাছ কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যাচ্ছে শিল্পীমনা বাবুই পাখিও। সকাল সন্ধ্যায় গ্রামের আঁকা-বাঁকা পথে হেঁটে গেলে এক সময় কিচিরমিচির শব্দ এখন আর শোনা যায় না। নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন, কীটনাশকের ব্যবহার, শিকারিদের দৌরাত্ম্য অপিরকল্পিত বাড়িঘর নির্মাণে মানব বসতি বাড়ায় ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই পাখির কুঁড়ে ঘর থেকে শিল্পের বড়াই করা তাল গাছের বাসা। আজকের তানোর

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.