বাদীর আইনজীবী সালাউদ্দিন খান জানান, ট্রাইবুনাল আদেশে উল্লেখ করেছেন বাদীর অভিযোগের প্রাথমিক উপাদান মামলার আরজিতে রয়েছে। তাই এজাহার হিসেবে গণ্য করার নির্দেশ দেওয়া হলো।
বাদী মামলার অভিযোগে বলেন, দীর্ঘদিন পুলিশে সুনামের সঙ্গে কাজ করায় ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষীবাহিনী মিশনে সুদানে পাঠান। সুদানের দারফুর সদর দপ্তরে পদায়ন করা হয় তাঁকে। অভিযুক্ত মোক্তার হোসেনকে পুলিশ সুপার (এসপি) ও বাংলাদেশ পুলিশ কন্টিনজেন্ট কমান্ডার হিসেবে হিসেবে ২০১৯ সালের মে মাসে জাতিসংঘ মিশনে সুদানে পাঠানো হয়। একই বছরের অক্টোবরে এসপি মোক্তার হোসেন দারফুরে যোগ দেন।
বাদী মামলার আরজিতে বলেন, এসপি প্রায়ই তাঁর পারিবারিক অশান্তির কথা বাদীকে বলতেন। শুনতে না চাইলেও তাঁকে জোর করে শোনাতেন। ২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর বাদীকে তাঁর ইচ্ছের বিরুদ্ধে ধর্ষণ করেন। বাদী কান্নাকাটি করলেও তাঁকে ছাড়েননি মোক্তার হোসেন। পরে মোক্তার হোসেন ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চান। সেই সঙ্গে তাঁকে হুমকি দেন, এই ঘটনা বলাবলি করলে তোমার চাকরি থাকবে না। দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এরপরও কয়েক দফায় সুদান বিমানবন্দরের পাশের হোটেলে বাদীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করেন মোক্তার হোসেন। আশ্বাস দেন দেশে গিয়ে তাঁকে বিয়ে করবেন।
২০২০ সালের ২৬ জুলাই ভুক্তভোগীর মিশন শেষ হয়। এরপরও পাঁচ দিন সুদানের খার্তুম বিমানবন্দরের পাশের একটি হোটেলে রাখেন অভিযুক্ত এসপি। ৩০ জুলাই তিনি দেশে ফেরেন। অভিযুক্ত এসপি গত বছর নভেম্বরে ছুটিতে দেশে আসার পর ১০ থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত বাদীকে উত্তরার হোটেল ডি মেরিডিয়ানে রাখেন।
এ বছরের গত ১৪ ফেব্রুয়ারি মিশন শেষ করে দেশে আসার পর মোক্তার হোসেন বাদীকে নিয়ে ২১ থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউস হোটেলের ২০৯ নম্বর কক্ষে ওঠেন এ সময় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আবারও ধর্ষণ করেন।
গত ১২ এপ্রিল বাদী অভিযুক্তের বাসায় গেলে (রাজারবাগ মধুমতি অফিসার্স কোয়ার্টার) তাকে মারধর ও অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। নারী পুলিশ পরিদর্শকের অভিযোগ এসপির কথামতো তিনি তাঁর স্বামীকে তালাক দেন। আদতে তাঁকে বাধ্য করেন তালাক দিতে। কিন্তু তালাকের পর তাঁকে বিয়ে করতে অস্বীকার করেন।
বাদীর আইনজীবী সালাউদ্দিন খান বলেন, ভুক্তভোগী পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ঘটনা জানিয়েছেন। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাননি। আবার থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে থানা মামলা নেননি। জানান, মোক্তার হোসেনকে গ্রেপ্তারের দাবি করেছেন মামলার বাদী।
২৪ বিসিএস ব্যাচের কর্মকর্তা মোক্তার হোসেন। গত ৪ জুলাই পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) বাগেরহাট জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে যোগ দেন। অভিযোগের বিষয়ে বেশ কয়েকবার ফোনসহ নানা মাধ্যমে বক্তব্য জানার চেষ্টা করেও মোক্তার হোসেনের কাছ থেকে কোনো উত্তর মেলেনি। তবে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জানা গেছে, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সূত্র : আজকের পত্রিকা