রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১১:২৮ am
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী মহানগরীতে ভুয়া ও জাল স্বাক্ষরের মাধ্যমে স্ট্যাম্প করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে আরএমপির বোয়ালিয়া থানার ওসি, এটিএসআই ও এক এএসআই’র বিরুদ্ধে। এ নিয়ে চলতি মাসের ১২ জুলাই রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ করেছেন বদরুল আলম নামের একব্যক্তি।
তিনি নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানাধীন শিরোইল এলাকার মৃত নুর মোহাম্মাদের ছেলে। ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে অভিযোগ দেয়ার পর বিষয়টি তদন্ত করছে পুলিশ। তদন্ত করছেন আরএমপির বোয়ালিয়া জোনের এডিসি তৌহিদুল আরিফ।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বদরুল আলমের ছেলে মেহেদী হাসান (২৬) এর ছেলে মানুষিকভাবে অসুস্থ থাকায় তিনি চিকিৎসকের পরামর্শ নেন। কিন্ত সে কিশোর গ্যাংয়ের সাথে ও বোয়ালিয়া মডেল থানার অসৎ কিছু কর্মকর্তার দ্বারা তাকে হয়রানি করা ও বিভিন্ন সময় উৎকোচ দাবি করতে থাকে। নাহলে তাকেসহ তার পরিবারের সদস্যদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার ভয় দেখায়।
চলতি বছরের গত জুন মাসের ৯ তারিখ দেড়টার দিকে পুলিশ হঠাৎ করে তার বাড়িতে প্রবেশ করে ঘিরে ফেলে। এরপর তারা তার ও তার স্ত্রীর খোঁজ করে ও বাড়ি তল্লাশী করে। এরপর তিনি বিষয়টি জানতে পেরে মুঠোফোনে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তাকে জানালে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি ও রাতে থানায় যেতে বলেন। কেন থানায় যেতে হবে তা জানতে চাইলে তিনি কিছু বলতে পারেননি। এর ধারাবাহিকতায় গত জুন মাসের ১৫ তারিখ মাগরিবের দিকে আসাদুজ্জামান রেবুর নের্তৃত্বে কিশোর গ্যাংয়ের ২৫/৩০ জন তার বাড়িতে প্রবেশ করে তার পাঞ্জাবি ধরে ও পরিবারের নারী সদস্যদের বেইজ্জতি করার চেষ্টা করে।
এরপর তিনি তাৎক্ষণিক ৯৯৯ এর মাধ্যমে বোয়ালিয়া থানায় জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসতে দেখে তারা পালিয়ে যায়। তারপর থেকে তারা নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় পড়েন। বিষয়টি তিনি তার ভাতিজা নগরীর আমবাগান এলাকার এসএম আব্দুল কাদেরকে জানালে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে সব শোনার পর মৌখিকভাবে বিষয়টি আরএমপি কমিশনারকে জানান।
তিনি অভিযোগে আরো উল্লেখ করেন, নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প নম্বর-খঘ-৮১৫৪৯৯৬, খঘ-৮১৫৪৯৯৭, খঘ-৮১৫৪৯৯৮ স্ট্যাম্পে আপোষ মীমাংসার নাম করে স্বাক্ষর করিয়ে নেয় এবং এনআরবিসি ব্যাংকের রাজশাহী শাখার চেক নম্বর-সিডিএনও-৫১৯৩৩৪২, তারিখ-২২/৬/২০২১ ইং টাকার পরিমাণ ৪,৫০,০০০/= টাকা যা নগরীর টার্মিনাল পুলিশ বক্সের ইনচার্জ এটিএসআই নাসির নিজ নামে গ্রহণ করেন এবং নিজেই স্বাক্ষরে সেই সাড়ে ৪ লাখ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করেন। এ ছাড়াও বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি নিবারন চন্দ্র বর্মন নিজ হাতে ৫,০০,০০০/- টাকা গ্রহণ করেন। তাই তিনি আরএমপি কমিশনারের কাছে অভিযোগ দিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের সুষ্ঠ বিচার দাবি করেন।
এ বিষয়ে আরএমপির টার্মিনাল বক্সের এটিএসআই নাসির উদ্দিন প্রথমে টাকা নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাকে কেউ টাকা-পয়সা দেয়নি। বিষয়টি মীমাংসা করেছে মোটর শ্রমিকের নেতা ৮ লাখ টাকায়। সাড়ে ৪ লাখ টাকার চেক ও নগদ সাড়ে ৩ লাখ টাকা। আমাকে টাকা তুলে এনে দিতে বলেছিল তাই তুলে দিয়েছি। আপনার নামে কেন এই চেক এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাকে চেক দেয়নি। আমাকে টাকাটা তুলে দিতে বলেছে তাই দিয়েছি।
এডিসি স্যারের কাছে অভিযোগ করেছিল। আমাকে স্যার ডেকেছিল। টাকা তুলে আমি দিয়ে দিয়েছি। স্ট্যাম্পেই লিখিত মীমাংসা হয়েছে। এডিসি স্যারের কাছে বদরুল অভিযোগ দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। আপনি গাজীর চাকুরী করেনা যে সে টাকা তুলে এনে দিতে বললো আর আপনি দিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে নাসির বলেন, একসাথে থাকি। মানবিক কারণে টাকা তুলে এনে দিয়েছি। স্যারের কাছে যে স্ট্যাম্পে বদরুল লিখিত দিয়েছে তা চাইলে দেখাতে পারবো।
নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি নিবারন চন্দ্র বর্মন গণমাধ্যমকে বলেন, মীমাংসা তারা স্থানীয়ভাবে করে জানিয়েছে। অনেক আগের ঘটনা। আমাকে কেউ জানায়নি। আমার থানাতেও বসেনি। এ অভিযোগ সঠিক নয়। তার সাথে আমার কোনো পরিচয় নেই। বদরুল বলেছেন, আমি ওসি স্যারকে চিনিনা। এই অভিযোগ আমার নয়। আমার নামে কেউ প্রতারণা করে দিয়েছে। নাসিরে নামে ব্যাংক থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা উত্তোলন হয়েছে ওসিকে জানালে তিনি বলেন, সেটি নাসির বুঝবে। এটিএসআই নাসির বাদীও নয় সাক্ষীও নয়। অভিযোগ তদন্তের আগেই তারা মীমাংসা করে নিয়েছিল। অভিযোগ পেয়ে এএসআই রানাকে তদন্তভার দেয়া
হয়েছিল। কিভাবে রানা সংযুক্ত হলো তা জানিনা। অভিযোগ তদন্তের আগেই তারা স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করে বদরুল আলমের আইনজীবী মীমাংসাপত্র আমার কাছে দিয়েছিলেন। এ বিষয়ে অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা আরএমপির বোয়ালিয়া জোনের এডিসি তৌহিদুল আরিফ বলেন, অভিযোগটি তদন্তনাধীন রয়েছে। এখন মাঝপথে রয়েছে। আরো তদন্তের পর বিষয়টি জানা যাবে। আজকের তানোর