শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:০০ am
ডেস্ক রির্পোট : আজ পবিত্র ঈদুল আজহা। চারদিকে উৎসবের আমেজ থাকলেও আছে শঙ্কা। করোনা মহামারিতে আনন্দ ও শঙ্কা নিয়েই দিনটি কাটছে। ঈদের নামাজের পর পশু কোরবানির মাধ্যমে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন সবাই। কিন্তু হাসপাতালগুলোতে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। এখানে ঈদের আমেজ নেই। চারদিকে শুধু স্বজন হারানোর শঙ্কা।
প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে ফুসফুসের ইনফেকশনে ভুগছেন মমেনা খাতুন (৫৫)। শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় তাঁকে প্রথমে পাবনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এরপর অবস্থার অবনতি হলে আজ বুধবার তাঁকে রাজধানীর মহাখালীর ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে আনা হয়। কিন্তু মায়ের জীবন নিয়ে শঙ্কায় আছেন ছেলে মেহেদি হাসান।
আজকের পত্রিকাকে মেহেদি বলেন, মায়ের শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় পাবনা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। দুদিন সেখানে থাকার পর আইসিইউ প্রয়োজন বলে জানায় চিকিৎসকেরা। পরে আজ বুধবার ঈদের দিন ভোর চারটার দিকে ঢাকার কল্যাণপুরে ইবনে সিনা হাসপাতালে নিয়ে আসি। কিন্তু সেখান থেকে বলা হয় আইসিইউ নেই। পরে এক আত্মীয়ের মাধ্যমে মহাখালী মহাখালীর ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে এনেছি। কিন্তু মায়ের অবস্থা বেশি ভালো না। বাঁচবে কিনা জানি না।
শুধু মমেনা নয়, মহাখালীর এই কোভিড হাসপাতালে ঈদের দিনেও রোগীদের চাপ অন্যান্য দিনের মতোই বলছেন দায়িত্বরত চিকিৎসকেরা।
বুধবার ঈদের দিন এই হাসপাতালটিতে সরেজমিনে দেখা যায়, কিছুক্ষণ পরপর বিভিন্ন জেলা থেকে রোগীরা আসছেন। যেসব জেলায় আইসিইউ ও অক্সিজেন সংকট আছে সেসব জেলা থেকেই রোগী আসছে বেশি।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বুধবার দুপুর পর্যন্ত ২৫ জন রোগীকে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার সৌরভ নাথ শুভ আজকের পত্রিকাকে বলেন, আজ ঈদের দিন। সবাই যখন আনন্দ করছে আমরা তখন মানুষকে সেবা দিচ্ছি। কেউ যখন চিকিৎসা নিতে আসে, তখন যদি তাঁকে সেবার মাধ্যম সুস্থ করে তোলা যায় সেটিই আমাদের কাছে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি ও আনন্দের।
আরেকজন চিকিৎসক জানান, গত বছর ঈদেও দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে। এবারও মা-বা ও স্ত্রী-সন্তানদের রেখে হাসপাতালে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। এরপরও মানুষ যখন সুস্থ হয়ে আপনজনদের কাছে ফিরে যায় এর চেয়ে বেশি আনন্দ আর কিছুই হতে পারে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু মহাখালীর এই হাসপাতাল নয়, রাজধানীর ১৬টি কোভিড হাসপাতালেই অন্য দিনের মতোই আজ রোগীদের চাপ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশের আট জেলায় সেন্ট্রাল অক্সিজেনের পাশাপাশি ৩৫ জেলায় নেই আইসিইউ সুবিধা। বর্তমানে কোভিড রোগীদের ৯০ শতাংশরই অক্সিজেন সহায়তার প্রয়োজন হচ্ছে। সূত্র : আজকের পত্রিকা