মঙ্গবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৪:৩২ pm
ডেস্ক রির্পোট : কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর থেকে ২২টি গরু নিয়ে চট্টগ্রাম যাচ্ছিলেন চারজন কৃষক। পথে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগের যৌথ চেকপোস্টে গরুগুলো আটকানো হয়। ভারতীয় গরু দেখিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সেগুলো নিলামে বিক্রিও করে দেওয়া হয়েছে। কৃষকদের দাবি, গরুগুলো তাঁদের বাড়িতে পোষা। শুধু যৌথ চেকপোস্টে টাকা না দেওয়ার কারণে এগুলো জব্দ করে নিলামে পানির দরে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।
গরুর মালিকদের বাড়ি গোমস্তাপুর উপজেলার বাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের বেগুনবাড়ি ও ব্রজনাথপুর গ্রামে। নিলামে বিক্রি করা গরুর মধ্যে বেগুনবাড়ি গ্রামের মো. রহিমের পাঁচটি, মো. মইদুলের চারটি, মো. সেলিমের আটটি এবং ব্রজনাথপুরের সাদিকুল ইসলামের আটটি গরু ছিল।
সাদিকুল ইসলাম বাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্যও। গরুগুলো চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে চট্টগ্রামে নেওয়ার জন্য বাঙ্গাবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান সাদেরুল ইসলাম একটি প্রত্যয়নপত্রও দিয়েছিলেন তাঁকে। এতে প্রত্যেকের নাম ও গরুর সংখ্যা উল্লেখ করে চেয়ারম্যান লিখে দিয়েছিলেন, বাড়ির পোষা গরু বিক্রির জন্য তাঁরা চট্টগ্রামের বিবিরহাটে নিয়ে যাচ্ছেন।
গতকাল বিকেলে যোগাযোগ করা হলে ইউপি চেয়ারম্যান এই প্রত্যয়নপত্র দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। চেয়ারম্যান বলেন, ‘গরুগুলো বাড়িতে পোষা। এটা ভারতীয় গরু নয়। তা–ও ধরে নিলাম দিয়েছে।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গতকাল দুপুরে রাজশাহী নগরীতে কাস্টমসের গুদাম থেকে গরুগুলো নিলামে তোলা হয়। নিলামে ২২টি গরু মাত্র ৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। প্রতিটির দাম গড়ে ৪২ হাজার ৫০০ টাকা। মুন্না নামের এক ব্যক্তি গরুগুলো কিনেছেন। তবে সাদিকুল জানান, কোরবানির হাটে তাঁদের এসব গরুর প্রতিটির দাম হতো আনুমানিক ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা।
গুদামের দায়িত্বরত কর্মকর্তা কাস্টমসের পরিদর্শক শাহরিয়ার হাসান সজীব বলেন, বিজিবি ও কাস্টমসের সদস্যরা তাঁদের গুদামে গরু দেওয়ার সময় বলেছেন, কোনো মালিক পাওয়া যায়নি। ট্রাক থামানো হলে ভারতীয় এসব গরু ফেলে সবাই পালিয়ে গিয়েছেন। জব্দ তালিকায় বিজিবি উল্লেখ করেছে, প্রতিটি গরুর দাম আনুমানিক ৮০ হাজার টাকা।
গরুর মালিক পাওয়া যায়নি বলে বিজিবি ও কাস্টমস দাবি করলেও ইউপি সদস্য সাদিকুল ইসলাম বলছেন, তাঁরা পালিয়ে যাননি। ট্রাকের চালক-হেলপারও পালাননি।
কথা বলতে গতকাল বিকেলে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমানের কার্যালয়ে গেলে তাঁকে পাওয়া যায়নি। কার্যালয়ের কেউ তাঁর ফোন নম্বর দিতেও রাজি হননি। রাজস্ব কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম বলেন, তিনি করোনাক্রান্ত হয়ে ঘরবন্দী। সূত্র : আজকের পত্রিকা