শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৪:৫৩ am

সংবাদ শিরোনাম ::
তানোরে শিক্ষক সমিতিকে নিজ পকেটে রাখতে মরিয়া বিএনপি নেতা মিজান অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে চান জেড আই খান পান্না নগরীতে বিএনপি নেতাকে ছুরিকাঘাত আগামী ২৯ নভেম্বর খুলছে রাজশাহী সুগার মিল জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের স্মরণে স্মরণসভা রাজশাহীতে যুবলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ১১ বাগমারা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবু তালেবের ইন্তেকাল তানোরে মসজিদের এসি অফিসার্স ক্লাবে, ইমামের অর্থ আত্নসাৎ প্রমান পেয়েছে তদন্ত কমিটি সাংগঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তানোরে বিএনপির কর্মীসভা নগরীতে ছাত্রলীগ নেতাসহ বিভিন্ন অপরাধে ৮ জন গ্রেপ্তার লীজকৃত পুকুর দখল, মালিককে বুঝিয়ে দিতে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ পুঠিয়ায় ভুয়া ডাক্তার ধরে প্রাননাশের হুমকির মুখে সাংবাদিকরা রাজশাহী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে দুর্নীতির প্রতিবাদে মানববন্ধন তানোর থানায় দালালের দৌরাত্ন্য বৃদ্ধি, অসহায় মানুষ দুর্গাপুরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে আটক ৩ জনের কারাদণ্ড গ্রাহকের ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ, বন্ধু মিতালীর চেয়ারম্যানসহ আটক ৪ রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে আ.লীগকে দূরে রাখতে ছাত্রনেতাদের চাপ অর্ন্তবর্তী সরকারকে নিরপেক্ষ না হওয়ার আহ্বান বিএনপি নেতাদের তানোরে সরকারি কর্মকর্তা ও সুধীজনদের সাথে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সাম্প্রতিক সময়ে অটোরিকশা বন্ধের দাবিতে সচেতন নাগরকবাসী
স্মৃতিতে অম্লান এক মহান কর্মবীর শিল্পপতি

স্মৃতিতে অম্লান এক মহান কর্মবীর শিল্পপতি

তার প্রয়াণে আমরা হারিয়েছি এক মহান কর্মবীর। একজন অভিভাবক। জাতি হারিয়েছে তার সূর্যসন্তান। তার স্মৃতি আজও আমায় কাঁদায়। হৃদয় ভারাক্রান্ত হয়ে যায়। গত বছর ১৩ জুলাই দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতি যমুনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের প্রতিষ্ঠাতা নুরুল ইসলাম দুনিয়ার সব সম্পদ, সব মায়া ত্যাগ করে পরপারে বিদায় নিয়েছেন। তার প্রয়াণে বাংলাদেশ হারিয়েছে এক কৃতী সন্তান।

নুরুল ইসলামের সঙ্গে আমার সম্পর্ক দীর্ঘদিনের- প্রায় ২৩ বছরের। পেশাজীবনের শুরুতেই তার সঙ্গে পরিচয়। অতঃপর ধীরে ধীরে তার সব কাজের আইনজীবী হয়ে উঠি। পরম বিশ্বস্ততায় আর সততায় আমি তাকে মুগ্ধ করতে সক্ষম হয়েছিলাম। সম্পর্কটা এতটাই আস্থা আর ভালোবাসার মিশ্রণে গড়ে উঠেছিল যে, দুজনের মধ্যে কোনো কৃত্রিমতা ছিল না।

জমিসংক্রান্ত একটি মামলায় ২০০৬ সালে যখন আপিল বিভাগে চূড়ান্ত জয়লাভ করি, তিনি আমাকে খুশিতে জড়িয়ে ধরেছিলেন। পাশে বসিয়ে দুপুরের খাবার খাওয়ান। বিদায়ের সময় পাঁচ লাখ টাকার একটি চেক উপহার দেন। সে পর্যন্ত ওটাই ছিল আমার বড় পুরস্কার। কত সুখ, কত স্মৃতি। তার সব বিপদে বুক পেতে সব অপশক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি।

তিনি প্রায়ই বলতেন, ‘আপনি তো আমার পরিবারের সদস্য।’ মাঝেমধ্যে কিছু কর্মকর্তা নিজেদের দোষ ঢাকার জন্য আমার ওপর দায় চাপিয়ে দিতেন। আমি সামনে গিয়ে বোঝালে সঙ্গে সঙ্গে ওই কর্মকর্তাকে ডেকে বকা দিতেন। আমি তখন নিজে এগিয়ে তাকে শান্ত করতাম। তিনি সুখ-দুঃখের অনেক কথা শেয়ার করতেন।

২. লাল-সবুজের পতাকায় মোড়ানো চেয়ারম্যান সাহেবের কফিন। মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবনবাজি রেখে যে লাল-সবুজ পতাকা ছিনিয়ে এনেছেন। দেশ তাকে অসম্মান করেনি। রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মান জাতীয় পতাকায় শোভিত এ মহান বীর মুক্তিযোদ্ধাকে একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার করেছে বিনম্র শ্রদ্ধায়। কফিনের দিকে তাকিয়ে ডুকরে ডুকরে কেঁদে উঠি। গলা ভিজে যায়। আমার জীবনসঙ্গী এসে সান্ত্বনা দেয়। অতঃপর কফিনটি এগিয়ে চলে বনানী কবরস্থানে। পরিবারের সবাই একে একে পবিত্র মাটি তুলে দিল তার সমাধিতে। চেয়ে চেয়ে দেখলাম। চোখের জলে বললাম- ‘হে বন্ধু বিদায়।’

কিছু লোক মাঝেমধ্যে তাকে ভুল বোঝাত, কুপরামর্শ দিতে চাইত। ফলে আমি তিনবার রিজাইন করেছিলাম। পরক্ষণেই আমাকে নিজে কিংবা ওয়াদুদ সাহেবকে কিংবা কাদের ভাইকে দিয়ে ফোন করে অফিসে নিয়ে যেতেন। হাসিমুখে জড়িয়ে ধরতেন। হেসে বলতেন, ‘রাগ করেছেন? জিয়া সাহেব কি আমার ওপর রাগ করতে পারে? আপনাকে তো আমার পরিবারের অংশই মনে করি। ওরা অপদার্থ। আমাকে ভুল বুঝিয়েছিল। আপনিই ঠিক।’ তার সামনে বসিয়ে আদর করে খাওয়াতেন, যেমন করে সন্তান বাবার ওপর রাগ করলে বাবা সন্তানকে কাছে ডেকে আদর করে খাওয়ায়।

নুরুল ইসলাম আপন আলোয় উদ্ভাসিত এক যুগশ্রেষ্ঠ নক্ষত্র- সিংহের মতো যার তেজ, বীরের মতো সাহস আর শিশুর মতো সহজ-সরল আচরণ। কর্মচারীদের প্রতি তিনি ছিলেন একজন অত্যন্ত কঠোর ও দক্ষ প্রশাসক। কিন্তু কোনো জটিল বা কুটিল চিন্তা তার ছিল না। কারও প্রতি রুষ্ট হলে পরক্ষণেই তা ভুলে যেতেন। একজন মানুষের জন্য তার এই গুণ এক বড় সম্পদ। বাইরে বসে অনেকে তার সমালোচনা করত। কিন্তু তার কাছে গেলে ফুটো বেলুনের মতো চুপসে যেত। তবে তাকে কিন্তু আমার কাছে মনে হতো একজন সাদাসিধে ব্যবসায়ী মানুষ।

দীর্ঘদিন আগের কথা। আইন পেশায় এসেই তার নাম শুনেছি। তার স্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামকে চিনতাম। আমার পিতৃতুল্য সিনিয়র এনায়েত হোসেন খান ঢাকা বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন। সালমা ইসলাম স্যারের অত্যন্ত স্নেহধন্য ছিলেন। তার মামা অ্যাডভোকেট সামসুল হক ঢাকার পাবলিক প্রসিকিউটর ছিলেন। স্যার এবং সামসুল ইসলাম খুবই ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। তাই বন্ধুর বাড়িতেই ভাড়া থাকতেন। সালমা ইসলাম সেই বাসায় (মামার) বেড়াতে আসতেন। ফলে স্যারের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। সালমা ইসলামকে চিনি সেই পেশাজীবনের প্রথম থেকে। তিনি ঢাকা বারের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। আমরা সবাই তাকে ভোট দিয়েছিলাম। তিনি খুবই জনপ্রিয় একজন নেত্রী। অমায়িক ব্যবহার। সুন্দর কণ্ঠ এবং মিশুক বটে।

কত কথা, কত স্মৃতি মিশে আছে তার সঙ্গে। দীর্ঘ প্রায় দুই যুগ। লিখতে গেলে বহু সময় লেগে যাবে। তবুও স্মৃতির পাতায় জ্বলজ্বল করে ভেসে ওঠা কিছু স্মৃতি উল্লেখ করতে চাই।

নুরুল ইসলাম একজন সফল পুরুষ। তার মতো সাহসী ও মেধাবী মানুষ খুব কম দেখেছি। তার ব্রেইন ছিল একটা সুপার কম্পিউটার। যে কোনো জটিল ও পুরোনো বিষয় তিনি অনায়াসে বলে দিতে পারতেন। তার ৪১টি কোম্পানির তিন শতাধিক মোকদ্দমা আমার সেরেস্তায় পরিচালিত হচ্ছে। বহু মামলা শেষ করেছি। কিন্তু আশ্চর্য- তিনি সব মামলার বিষয়বস্তু পুঙ্খানুপুঙ্খ মনে রাখতে পারতেন। এ বিধাতার এক অপার মহিমা ও দান।

নুরুল ইসলাম একজন কর্মবীর। তিনি জিরো থেকে হিরো। নিজ প্রচেষ্টায় গড়ে তুলেছেন ৪১টি শিল্পকারখানা, যার প্রতিটি লাভজনক। ফ্যানের ব্যবসা থেকে শুরু করে আজ তিনি বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতি। তিনি তার নিকটাত্মীয়সহ নিজ এলাকার বহু মানুষকে, এক কথায় হাজার হাজার এলাকাবাসীকে চাকরি দিয়েছেন। লক্ষাধিক লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন।

নুরুল ইসলাম ছিলেন এক অনন্যসাধারণ উদ্যোক্তা। তিনি আধুনিক চিন্তা ও ধ্যান-ধারণা পোষণ করতেন। তার চিন্তার ফসল যমুনা ফিউচার পার্ক এক অনন্য সৃষ্টি। এশিয়া মহাদেশের মধ্যে সর্ববৃহৎ ও আধুনিক শপিংমল ও অফিস টাওয়ার সাংহাই ও টোকিও কিংবা দুবাইকে হার মানায়। একজন মানুষ যে এত আধুনিক চিন্তা করতে পারেন এবং তা সফলভাবে বাস্তবায়ন করে যেতে পারেন, তা শুধু নুরুল ইসলাম সাহেবকে দিয়েই সম্ভব- দ্বিতীয়জন এ দেশে বিরল। যমুনা ফিউচার পার্কে ঢুকলে মনেই হবে না যে এটি পৃথিবীর একটি দরিদ্র দেশের শপিংমল। মনে হবে- পৃথিবীর উন্নত দেশের সবচেয়ে উন্নত সংস্করণ। আমি দুবাই, সৌদি আরব, ইংল্যান্ড, ইউরোপ, চীনসহ উন্নত দেশগুলো ঘুরেছি। তাছাড়া ইন্টারনেটের বদৌলতে সারা পৃথিবী দেখছি। কিন্তু ‘যমুনা ফিউচার পার্ক’ এক অনন্য কীর্তি।

৩. নুরুল ইসলাম একজন স্বপ্নদ্রষ্টা। স্বাধীনতা লাভের স্বপ্নে তিনি মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। বিজয়ী হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। পাকিস্তানি হানাদাররা আমাদের সব সম্পদ ধ্বংস করে গেছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে বঙ্গবন্ধু ফিরে দেখেন কিছুই নেই। তিনি আহ্বান করলেন দেশ গড়ার জন্য। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে যাত্রা শুরু হলো। ধ্বংসস্তূপ থেকে যে কয়জন যুবক এগিয়ে এলেন দেশে শিল্পবিপ্লব শুরু করার জন্য, তার মধ্যে তিনি একজন। সামান্য পুঁজি নিয়ে শুরু হলো ব্যবসা।

দেশ তার সূর্যসন্তানকে হতাশ করেনি। তিনি যেখানেই হাত দিয়েছেন, সেখানেই সোনা ফলেছে। ১৯৭৪ সালে তিনি গড়ে তোলেন যমুনা গ্রুপ। তখন দেশে ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদন খুব একটা হতো না। তিনি শুরু করলেন ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদন। অতঃপর তিনি দেখলেন দেশের কোটি কোটি মানুষের বস্ত্রের অভাব নিবারণের জন্য বিদেশ থেকে সুতা আমদানি করতে হয়। তাতে বস্ত্রের দাম বেশি পড়ে। আবার বৈদেশিক মুদ্রা চলে যায়। তাই তিনি গড়ে তোলেন স্পিনিং মিল।

বিদেশি সুতা আমদানি রহিত করে দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ সুতা তিনি একাই উৎপাদন করেন। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানোর ক্ষেত্রে তার অনেক অবদান। তাছাড়া তার ৪১টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানে বিপুল উৎপাদনের বিপরীতে সরকারকে প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি টাকা ভ্যাট-ট্যাক্স ইত্যাদি বাবদ পরিশোধ করেন। সরকারি রাজস্ব প্রদান ও কর্মসংস্থান করার জন্য তার সমমানের দশজন শিল্পপতি থাকলে দেশটা অনেক এগিয়ে যেত। মাঝেমধ্যে আফসোস করে বলতেন, ‘এ দেশের মানুষ ও সরকার আমাকে চিনল না।’ সমৃদ্ধ বাংলার এক দূরদর্শী দিকপাল তিনি।

নুরুল ইসলাম ছিলেন একজন সহজ-সরল, সাহসী ও অকুতোভয় বীরযোদ্ধা। সত্যকে সত্য, মিথ্যাকে মিথ্যা বলার সাহস তার ছিল। তিনি ভয় পেতেন না। উচিত কথা বলার জন্য কিংবা সত্য ঘটনা তুলে ধরার জন্য তার জেল হবে না ফাঁসি হবে- এ চিন্তা করতেন না। সরকারি দপ্তরের বহু দুর্নীতি তিনি ধরিয়ে দিয়েছিলেন তার টিভি ও পত্রিকার মাধ্যমে। বাংলালিংক, রবি, গ্রামীণফোন ইত্যাদি বিদেশি কোম্পানি দুর্নীতির মাধ্যমে জনগণকে শোষণ করে হাজার হাজার কোটি টাকা সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বিদেশে পাচার করেছে। এসব বিষয়ে রিপোর্ট করে তা ধরিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি অসামান্য সাহস ও অবদান রেখেছেন। আমি ক্ষুদ্র মানুষ হিসাবে তার সঙ্গে ছিলাম। পরবর্তী সময়ে মামলা-মোকদ্দমা মোকাবিলা করেছি। কিন্তু আমরা আপস করিনি। শেষ পর্যন্ত সরকারের টনক নড়েছে এবং ফোন কোম্পানি থেকে ইতোমধ্যে হাজার কোটি টাকা আদায় করেছে, যা পদ্মা সেতু নির্মাণে কাজে লাগতে পারে। তবে শুরুটা করেছিলাম আমরা দুজনে।

কোনো প্রকার কপটতা বা কৃত্রিমতা তার মধ্যে ছিল না। ছিল না বড়লোকের অহংকার। অতি সাধারণ জীবনযাপন করতেন। আমি তার সঙ্গে বহুবার দুপুরে ভাত খেয়েছি। টেংরা মাছ, পাবদা মাছ, ডাল, কিছু সবজি ইত্যাদি তার প্রিয় খাবার ছিল। কোরমা-পোলাও কিংবা মসলাযুক্ত রিচফুড তিনি খেতেন না। একজন সাধারণ গ্রামের মধ্যবিত্ত মানুষের মতোই ছিল তার জীবনধারণ।

ভোলেননি প্রিয় স্বদেশ। ভোলেননি প্রিয় মানুষ। তাই সুবিধাভোগীদের মতো তিনি চলেননি। বিদেশে টাকা না জমিয়ে একের পর এক গড়েছেন শিল্পপ্রতিষ্ঠান, করেছেন কর্মসংস্থান সৃষ্টি। তিনি মাঝে মাঝে অনেককেই চ্যালেঞ্জ করে বলতেন, আমার যদি বিদেশে কোনো বাড়ি-গাড়ি, এমনকি একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টও কেউ দেখাতে পারে, তবে দেশের প্রচলিত আইনে আমার বিচার হোক।

স্বদেশের উপকারে নাই যার মন, কে বলে মানুষ তারে পশু সেই জন। সেই অর্থে নুরুল ইসলাম সাহেব ছিলেন একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক ও মাটির মানুষ; বাংলা মায়ের গর্বের ধন। বাংলার মুক্তিযোদ্ধা নিজ গুণে হয়েছেন বটবৃক্ষ, পথপ্রদর্শক। জাতি তাকে ভুলবে না কোনোদিন।

তিনি ছিলেন একজন সৎ ব্যবসায়ী। সুদের ব্যবসা কিংবা অসাধু ব্যবসায়ীর মতো শেয়ারবাজারের ফটকা ব্যবসা তিনি পছন্দ করতেন না। একদিন দুপুরে তার চেম্বারে বসে গল্প করছি। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, সবাই ব্যাংকের মালিক হচ্ছে আপনি কেন নন? তিনি দৃঢ়ভাবে উত্তর দিলেন, ‘আমি সুদের ব্যবসা করি না, করব না। আমার ছেলেমেয়েদের আমি সুদের টাকা দিয়ে খাওয়াব না।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘বিগত অনেক সরকার অনেকবার আমাকে ব্যাংক দিতে চেয়েছে।

বর্তমান সরকারের আমলেও নিতে পারি; কিন্তু আমি সুদের ব্যবসা করব না।’ শেয়ারবাজার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি চাইলে শত শত কোটি টাকা তুলে নিতে পারতাম; কিন্তু আমি কোনোদিনও শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করিনি। মানুষের কষ্টের অর্থ আত্মসাৎ করার মতো ঘৃণ্য কাজ আমি করব না।’ একটা মানুষ কতটা সৎ হলে এ রকম বুকের পাটা থাকতে পারে! আপনাকে সালাম হে সূর্যসন্তান, হে কর্মবীর, দেশ ও জাতির অমূল্য সম্পদ। আপনাকে হারানোর বেদনা আমাদের জন্য অপার বেদনা, হে হারানো মাণিক। আপনি চিরদিন বেঁচে থাকুন আমাদের হৃদয়ে, আমাদের স্মৃতিতে। আপনি বেঁচে থাকুন আপনার কর্মে- কোটি মানুষের শ্রদ্ধায় ও ভালোবাসায়। লেখক :  মো. জিয়াউল হক : অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট. সূত্র : যুগান্তর

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.