নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহীতে বৃষ্টিতে জমছে প্রধান রাস্তাগুলোতে হাঁটু পানি। সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় বাড়ছে জনদুর্ভোগ। বিশেষ করে বৃষ্টিতে নগরীর নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় দোকনপাট ও
বাসা-বাড়িতেও ঢুকছে পানি। এতে করে লকডাউনে বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে নগরবাসীকে।
আজ বৃহস্পতিবার ভোররাত থেকে রাজশাহীতে বৃষ্টি শুরু হয়। এতে রাজশাহীর আবহাওয়া অনেকটা ঠাণ্ডা হয়। কিন্তু ভারী বৃষ্টিতে নগরীর বহু জায়গায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। নগরীর বর্ণালীর মোড়, উপশহর, দড়িখরবোনা মোড়, জিরোপয়েন্ট, তেরখাদিয়া, হেতেম খাঁ, সাধুর মোড়, মালোপাড়া, টিকাপাড়া, কোর্ট, সোনাদিঘী, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল সহ নগরীর বহু জায়গায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
বৃষ্টিতে এসব এলাকার বেশ কিছু বাসাবাড়িতে পানি ঢুকেছে বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা।
নগরবাসী অভিযোগ করে বলেন, সামান্য বৃষ্টি নামলেই সাধারণ মানুষের পথচলা বন্ধ হয়ে যায় জলাবদ্ধতার কারণে। তাহলে কোটি কোটি টাকার ড্রেন নির্মাণ করে লাভ কি? এছাড়া বর্ষা মৌসুমে ড্রেন নির্মাণ করতে যেয়ে অনেক ড্রেন অকেজো হয়ে পড়ে ফলে এইসময় ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এ বর্ষা মৌসুম ছাড়া কি ড্রেন নির্মাণ করার অন্য কোন কি সময় নেই। এ বিষয়ে তারা কতৃপক্ষের সুদৃষ্টিও কামনা করেন।
নগরীর সুলতাম মাহমুন নামে এক বাসিন্দা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেন, অতিবর্ষণ হলেই রাজশাহী মহানগরীর অধিকাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। এতে জনসাধারণের ভোগান্তি বেড়ে যায়, পায়ে হেঁটে এমনকি যানবাহনে চলতে গিয়ে বিপদের শিকার হতে হয়। নাম প্রকাম না করা শর্তে উপশহর এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, অন্য সময়ের মতো বৃহস্পতিবার ভোরের বৃষ্টিতে রাজশাহীতে কিছু কিছু এলাকা হাঁটু থেকে তার কিছু কম পানিতে তলিয়ে যায়। এ সময় বেশ কিছু নিচু বাসাবাড়িতে পানি উঠে গেছে।
নগরীর আরেক বাসিন্দা মেহেদী বলেন, ভোর থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে রাজশাহীর বিভিন্ন সড়ক হাঁটুপানিতে তলিয়ে যায়। পরে দুপুরে বৃষ্টি কমে যাওয়ার আস্তে আস্তে তা নেমে যেতে থাকে। তবে এদিন লকডাউন থাকায় সড়াকে তেমন ভোগান্তি সৃষ্টি হয়নি।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোররাত ৩টা থেকে রাজশাহীতে বৃষ্টি শুরু হয়। দুপুর ২টা পর্যন্ত ৯২ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। দুপুর ২টার দিকে আবারো নগরীতে বৃষ্টিপাত থেমে আসে। তবে আকাশ মেঘলা রয়েছে।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক দেবল কুমার জানান- রাত তিনটা ২০ মিনিট থেকে বৃষ্টি শুরু হয়ে সকাল ৬ টা পর্যন্ত ৩ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। এছাড়া সকাল ৬টা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত ৮৮ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়া অফিসের হিসাবে, ২৪ ঘণ্টায় ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হলে তাকে অতি ভারি বর্ষণ বলা হয়। বৃহস্পতিবার রাজশাহীতে এই ধরণের বৃষ্টিই হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে ভারি বর্ষণ ও কঠোর লকডাউনের ফলে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই নগরীতে মানুষের চলাচল দেখা যায়নি। রোগী নিয়ে দু’একটি রিকশা হাসপাতালের দিকে গেলেও অন্য কোন যানবাহনও দেখা যায়নি। তবে বৃষ্টি ভেদ করে রাস্তায় টহলে ছিল পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, সেনাবাহিনী এবং আনসার সদস্যদের গাড়ি। জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতও মাঠে ছিল।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ শরিফুল হক বলেন, লকডাউন বাস্তবায়নে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তৎপর আছেন। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরাও কাজ করছেন। লকডাউনের প্রথম দিন রাজশাহীতে খুব বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে শহর একেবারেই ফাঁকা রয়েছে। আজকের তানোর