শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৫:১৭ am

সংবাদ শিরোনাম ::
তানোরে শিক্ষক সমিতিকে নিজ পকেটে রাখতে মরিয়া বিএনপি নেতা মিজান অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে চান জেড আই খান পান্না নগরীতে বিএনপি নেতাকে ছুরিকাঘাত আগামী ২৯ নভেম্বর খুলছে রাজশাহী সুগার মিল জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের স্মরণে স্মরণসভা রাজশাহীতে যুবলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ১১ বাগমারা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবু তালেবের ইন্তেকাল তানোরে মসজিদের এসি অফিসার্স ক্লাবে, ইমামের অর্থ আত্নসাৎ প্রমান পেয়েছে তদন্ত কমিটি সাংগঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তানোরে বিএনপির কর্মীসভা নগরীতে ছাত্রলীগ নেতাসহ বিভিন্ন অপরাধে ৮ জন গ্রেপ্তার লীজকৃত পুকুর দখল, মালিককে বুঝিয়ে দিতে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ পুঠিয়ায় ভুয়া ডাক্তার ধরে প্রাননাশের হুমকির মুখে সাংবাদিকরা রাজশাহী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে দুর্নীতির প্রতিবাদে মানববন্ধন তানোর থানায় দালালের দৌরাত্ন্য বৃদ্ধি, অসহায় মানুষ দুর্গাপুরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে আটক ৩ জনের কারাদণ্ড গ্রাহকের ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ, বন্ধু মিতালীর চেয়ারম্যানসহ আটক ৪ রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে আ.লীগকে দূরে রাখতে ছাত্রনেতাদের চাপ অর্ন্তবর্তী সরকারকে নিরপেক্ষ না হওয়ার আহ্বান বিএনপি নেতাদের তানোরে সরকারি কর্মকর্তা ও সুধীজনদের সাথে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সাম্প্রতিক সময়ে অটোরিকশা বন্ধের দাবিতে সচেতন নাগরকবাসী
স্বাস্থ্যবিধিতে অবহেলা ও ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শঙ্কা : অলোক আচার্য

স্বাস্থ্যবিধিতে অবহেলা ও ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শঙ্কা : অলোক আচার্য

করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি ক্রমেই বাংলাদেশে ভয়াবহ রুপ ধারণ করছে। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে ক্রমেই পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে বৃহস্পতিবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য কঠোর লক ডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কতৃপক্ষ। এই সিদ্ধান্ত মেনে চলার দায়িত্ব মূলত আমাদের। আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে আমরা প্রকৃতপক্ষে কি চাই?

করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা একদিনে রেকর্ড শতাধিক পার করেছে। আক্রান্তের সংখ্যাও রেকর্ড সংখ্যক। এভাবে চলতে থাকলে পরিস্থিতির ক্রমাবনতি ঘটবে। আর পরিস্থিতির ক্রমাবনতি ঘটতে থাকলে আমাদের পরিস্থিতিও ভারতের মতোই হবে। আমরা মাত্র কয়েকদিন আগেই প্রতিবেশী দেশ ভারতের মৃত্যুর মিছিল দেখেছি। সেখানে শ্মশানে মৃতদেহ দাহ করার মতো সিরিয়ালও পাওয়া দুষ্কর হয়ে উঠেছিল।

রাস্তায় করোনায় মৃত রোগীর লাশ পশু টানাটানি করার ছবিও দেখেছি। এসব দেখেও যদি আমারা সচেতন না হই তাহলে আমাদের জন্যও সেই পরিণতিই অপেক্ষা করছে। এই সময় ভাবাচ্ছে ডেল্টা এবং নতুন ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট। এর মধ্যে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়েছে বিশ^জুড়ে। আর ডেল্ট প্লাস ভ্যারিয়েন্ট এখন কেবল ভারতেই পাওয়া গেছে। বিভিন্ন প্রতিবেদনে জানা গেছে, বিশে^র ৮৫ টি দেশে ছড়িয়ে গেছে করোনার এই মারাত্বক রুপ ডেল্টা। বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা আশংকা প্রকাশ করে বলেছে, যেল্টা ভ্যারিয়েন্ট বিশ^জুড়ে তান্ডব চালাতে পারে। ইতিমধ্যেই ফ্রান্স,জার্মানি এবং ইংল্যান্ডে এই ভ্যারিয়েন্টের কারণে সংক্রমণ বেড়েছে। শহর থেকে করোনা ভাইরাস এখন গ্রামে ছড়িয়ে পরেছে।

সংক্রমণ এখন দেশব্যাপী ছড়িয়েছে। মানুষ ছুটছে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শহরমুখে। অক্সিজেন যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা এই সময় আমরা ভালোভাবে বুঝতে পারি।  গত ঈদে লকডাউন ও বিধিনিষেধ দিয়েও বাড়িফেরা মানুষের উপচে পরা ভিড় আমরা দেখেছি। সেসময় পাশর্^বর্তী দেশ ভারতে করোনা ভাইরাস তান্ডব চালাচ্ছিল। এই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পরার শংকা তৈরি হয় তখন থেকেই। সেই শঙ্কা এখন আমাদের নতুন করে ভাবাচ্ছে।

বাংলাদেশের ৪০ টি জেলা করোনা ভাইরাস সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে আছে বলে বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে। মানুষ গ্রাম থেকে শহরমুখী হচ্ছে চিকিৎসার জন্য। ফলে হাসপাতালগুলোতে চাপ বাড়ছে প্রতিনিয়ত।  কিন্তু গত ঈদে যেমন মানুষকে আটকানো যায়নি, এবারও মানুষ ঢাকায় লক ডাউনের খবরে যেকোনো উপায়ে ঢাকা ছাড়ছে।  সেই সাথে বেড়েছে ঝুঁকি। করোনা সংক্রমণের এই উর্ধ্বমুখী ঠেকাতে পুনরায় লক ডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। লক ডাউনের উদ্দেশ্য এবং কার্যকারিতার সুফল পেতে আমাদের নির্দেশনাগুলো মেনে চলতে হবে। মানতে হব স্বাস্থ্যবিধি। করোনার শুরু থেকেই স্বাস্থ্যবিধির ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে বিশ^জুড়েই।

এখনও তাই করা হচ্ছে। কিন্তু এই স্বাস্থ্যবিধি যাদের মেনে চলার কথা সেই সাধারণ মানুষের মাঝে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রবণতা একেবারেই কম। পরিতাপের বিষয় হলো সবচেয় কার্যকর উপায় বলে স্বীকৃত মাস্ক পরার অভ্যাসও এখ পর্যন্ত বেশিরভাগের মধ্যেই তৈরি হয়নি। এখন তো প্রায় নেই বললেই চলে! অথচ হওয়ার কথা ছিল উল্টোটা। করোনা ভাইরাস মানুষের মাঝে যে আতংকের সৃষ্টি করেছে তা থেকে মানুষ স্বাস্থ্যবিধিতে পাকাপাকিভাবে অভ্যস্থ হওয়ার কথা ছিল।

যে অভ্যাস মানুষ পালন করতো করোনা ভাইরাস চলে গেলেও। অথচ ঘটছে তার উল্টোটা। বারবার বলা হচ্ছে যে ভ্যাকসিন গ্রহণ করলেও করোনার স্বাস্থ্যবিধি ঠিকঠাক মেনেই চলতে হবে, তা সত্ত্বেও এই অসচেতনতার পরিণতি আমাদের দেশে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে মাস্ক ব্যবহার করা, সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা, হাত বারবার সাবান দিয়ে পরিষ্কার করা, হ্যান্ডশেক বা কোলাকুলি থেকে বিরত থাকা বা সংস্পর্শে না আসা, হাঁচি-কাশির সময় মুখ ঢেকে দেয়া, কাপড় চোপড়সহ সবকিছু জীবাণুমুক্ত রাখা ইত্যাদি সহ আরো বেশকিছু নিয়ম কানুন। এসব করার প্রধান উদ্দেশ্যই ছিল করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধ করা। তা সত্ত্বেও প্রাণহানির সংখ্যা বাড়ছে। প্রথম দফা সংক্রমণ শেষে কোনো দেশে দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণ হয়েছে।  আবার তৃতীয় দফা সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে দেশ।

কঠোর লক ডাউন মানার দায়িত্ব আমাদের। যদি না মেনে চলি তাহলে কি ঘটতে পারে তার কিছুটা আন্দাজ করা যায়। পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। তখন সামাল দেওয়াটা কষ্টসাধ্য হয়ে পরবে। লক ডাউন শেষে অর্থনীতিকে সচল রাখতে, জীবকার কল্যাণে মানুষ কাজে ফিরবে। কিন্তু সেই সময়ের মধ্যে করোনা ভাইরাস কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসবে কিন্তু তা একেবারে দূরিভূত হবে না। ফলে আবারও করোনার প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়া অস্বাভাবিক নয়। করোনা টিকা প্রতিটি মানুষের জন্যই নিশ্চিত হবে কিন্তু তা সম্পূর্ণ হবে কতদিনে তা নিশ্চিত হয়।

কারণ টিকার জন্য আমরা সহ অধিকাংশ দেশই কয়েকটি দেশের ওপর নির্ভরশীল। ফলস্বরুপ নিয়মিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাই একমাত্র সংক্রমণ ঠেকানোর কার্যকর ভরসা। সেই ভরসা যারা বাস্তবায়ন করবে তারা সাধারণ জনগণ। আইন না মানলে তার জন্য শাস্তি দেওয়া হবে কিন্তু এভাবে আইনের মাধ্যমে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অভ্যাস করানোর চেয়ে তাদের সচেতনের মাধ্যমে হলে তা সহজতর হবে। একটু মেনে চললেই যখন দেশটাকে আরো সুন্দর করে তোলা যায় কিন্তু আমরা তা করতে নারাজ।

আর করোনার সময়ে মেনে চলা আবশ্যকীয় স্বাস্থ্যবিধি নিজের জীবনের প্রশ্ন। নিজের সাথে আরো অনেক মানুষের জীবনের প্রশ্ন। কারণ একজন থেকে অনেকে ছড়ায় এই ভাইরাস। অথচ সামান্য একটু অভ্যাস পরিবর্তন করলেই আমরা নিজেদের সুরক্ষিত করার পাশাপাশি অন্যদেরও সুরক্ষিত রাখতে পারি। করোনা মহামারীর শুরুর পর থেকে সবাইকে মাস্ক ব্যবহার করা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা,বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়া এসব স্বাস্থ্যবিধির অনুশীলন করার ওপর জোর দেয়া হয়েছে। এখনো তাই বলা হচ্ছে।

কারণ প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছে এবং আক্রান্তও হচ্ছে। কতদিনে ভ্যাকসিন আমাদের দেশে আসবে ততদিন আরও প্রাণহানি ঘটবে। যদি আমরা সবাই চাই তাহলে এই প্রাণহানি এবং আক্রান্তের সংখ্যা কমিয়ে আনতে পারি। এটা করা সম্ভব কেবল স্বাস্থ্যবিধি সঠিকভাবে অনুসরণ করলে। কিন্তু আমাদের সেই চিরাচরিত জীবন যাপন আমরা আজও ছাড়তে পারিনি। এই করোনার সময়েও আমরা প্রায়ই স্বাস্থ্যবিধি মানতে অস্বিকার করছি।

করোনা শুরুর পর কিছুটা নিয়মের মধ্যে জীবন যাপন করলেও দিন গড়ানোর সাথে সাথে আমাদের মধ্যে থেকে সেই প্রবণতা হ্রাস পাচ্ছে। যা আমাদের দেশের জন্য আশংকাজনক। এতে কোনোভাবেই ভালো হবে না। করোনা নিয়ন্ত্রণের যে প্রচেষ্টা তা সফল ভাবে সম্ভব হবে না। কারণ এর অনেকটা দায় আমাদের ওপরেও বর্তায়। সূত্র : এফএনএস. অলোক আচার্য, সাংবাদিক ও কলাম লেখক

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.