শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১২:৪৮ am
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগমারা : রাজশাহীর বাগমারায় আবারো আলোচনার শীর্ষে জাবের বাহিনীর প্রধান জাবের আলী (৫০)। জোঁকাবিলে মৎস্য চাষকে কেন্দ্র করে আবারো তিনি আলোচনার শীর্ষে উঠেছেন। বুধবার ভোরে অভিযান চালিয়ে পুলিশ সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ জাবের বাহিনীর পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে বলে বাগমারা থানা পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ জানায়, উপজেলা নরদাশ ইউনিয়নের জোঁকাবিলায় বিলধারের লোকজনদের নিয়ে জেলা পরিষদের সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রশিদ মাস্টারের সভাপতিত্বে মাছ চাষ করে আসছিল। শান্তিপূর্ণ মাছ চাষে বাঁধা সৃষ্টির লক্ষ্যে বাসুপাড়া ইউনিয়নের মন্দিয়াল গ্রামের জাবের আলী পানিয়া, কাষ্টন্যাংলা ও হাটমাধনগর এলাকার কিছু ব্যক্তিদের নিয়ে একটি বাহিনী তৈরী করে বিল দখলের চেষ্টা করেন।
জাবের আলীর কর্মকান্ড দেখে জোঁকাবিল মৎস্য চাষ প্রকল্পের সভাপতি আব্দুর রশিদ মাষ্টার বিলটি ভাগবাটোয়ারার মাধ্যমে মাছ চাষের আহবান জানান। জাবের গ্রুপের কোন খবর না পেয়ে তিনি তাদের জন্য বিলের অর্ধেক অংশ রেখে মাছ চাষের সিদ্ধান্ত নেন। মৎস্য চাষীদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক মাছ চাষের জন্য বিলে জাল ও বানা দিয়ে বেড়া নির্মান করে মাছের পোনা ছাড়েন।
গত ২৬ জুন ভোরে জাবের বাহিনীর প্রধান জাবের আলীর নেতৃত্বে ৬০/৭০ জন সদস্য দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বিলের সমস্ত জাল ও বানা কেটে প্রায় ২৫ লাখ টাকার ক্ষতি করেন। জাল কাটার খবরটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বিলধারের লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে ওই দিন সকালে প্রতিপক্ষ জোনাব আলীর মুরগীরর খামারে হামলা চারিয়ে ভাংচুর করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।
ওই ঘটনার জের ধরে গত ২৯ জুন (মঙ্গলবার) দিন ব্যাপী তান্ডব চালায় জাবের বাহিনীর সদস্যরা। তাদের তান্ডবে পানিয়া, হাটমাধনগর ও কাষ্টন্যাংলা গ্রামে অর্ধশত বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। খবর পেয়ে বাগমারা থানার পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করতে না পেরে শহর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেয়। ঘটনার পর থেকেই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় জোঁকাবিলা মৎস্য চাষ প্রকল্পের সাধারণ সম্পাদক আইনুল হক বাদী হয়ে ৩০ জুন (বুধবার) বাগমারা থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, পানিয়া গ্রামে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আহসান হাবিব (৬৫), তার ভাই আমজাদ হোসেন (৫০), হাটমাধনগর গ্রামের হাবিবুর রহমান (৩২), সাইফুল ইসলাম (৩৮) ও মমিনুল ইসলাম (৩৮)। গ্রেপ্তারকৃতদের বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে বলে থানা পুলিশ জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১৮ এপ্রিল জোঁকাবিলা মৎস্য চাষ প্রকল্পের কোষাধ্যক্ষ আনিছুর রহমানকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। ওই মামলা এখনো আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। ওই মামলার আসামীরা আবারো বিলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করছে বলে এলাকার লোকজন জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বাগমারা থানার ওসি মোস্তাক আহম্মদ জানান, বাড়িঘরে হামলার ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের জন্য মাঠে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছেন। এলাকায় পরিবেশ পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। আজকের তানোর