বৃহস্পতিবর, ২১ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১১:৫৬ pm

সংবাদ শিরোনাম ::
তানোরে শিক্ষক সমিতিকে নিজ পকেটে রাখতে মরিয়া বিএনপি নেতা মিজান অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে চান জেড আই খান পান্না নগরীতে বিএনপি নেতাকে ছুরিকাঘাত আগামী ২৯ নভেম্বর খুলছে রাজশাহী সুগার মিল জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের স্মরণে স্মরণসভা রাজশাহীতে যুবলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ১১ বাগমারা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবু তালেবের ইন্তেকাল তানোরে মসজিদের এসি অফিসার্স ক্লাবে, ইমামের অর্থ আত্নসাৎ প্রমান পেয়েছে তদন্ত কমিটি সাংগঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তানোরে বিএনপির কর্মীসভা নগরীতে ছাত্রলীগ নেতাসহ বিভিন্ন অপরাধে ৮ জন গ্রেপ্তার লীজকৃত পুকুর দখল, মালিককে বুঝিয়ে দিতে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ পুঠিয়ায় ভুয়া ডাক্তার ধরে প্রাননাশের হুমকির মুখে সাংবাদিকরা রাজশাহী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে দুর্নীতির প্রতিবাদে মানববন্ধন তানোর থানায় দালালের দৌরাত্ন্য বৃদ্ধি, অসহায় মানুষ দুর্গাপুরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে আটক ৩ জনের কারাদণ্ড গ্রাহকের ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ, বন্ধু মিতালীর চেয়ারম্যানসহ আটক ৪ রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে আ.লীগকে দূরে রাখতে ছাত্রনেতাদের চাপ অর্ন্তবর্তী সরকারকে নিরপেক্ষ না হওয়ার আহ্বান বিএনপি নেতাদের তানোরে সরকারি কর্মকর্তা ও সুধীজনদের সাথে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সাম্প্রতিক সময়ে অটোরিকশা বন্ধের দাবিতে সচেতন নাগরকবাসী
হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় এনজিও : সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করা উচিত

হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় এনজিও : সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করা উচিত

দেশের সরকারি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা এনজিওর হাতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত বিস্ময়কর। সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এক চিঠিতে বলেছে-‘স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে পাইলট প্রকল্প আকারে কতিপয় সরকারি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা যথা পদ্ধতিতে সক্ষম ও অভিজ্ঞ বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) কাছে হস্তান্তরের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। হাসপাতালগুলোর ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করতে হবে।’

ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ার সঙ্গে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির কথা বলা হলেও বাস্তবে তা কতটা ফলপ্রসূ হবে, এ ব্যাপারে সংশয় রয়েছে। বস্তুত ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম ব্যবস্থাপনা আর স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনা যে এক নয়-এ বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের মাথায় রাখতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা, মুখে জনকল্যাণ-জনস্বার্থ রক্ষার বুলি আওড়ালেও অধিকাংশ এনজিও ব্যবসায়িক স্বার্থে পরিচালিত হয়। কাজেই তাদের হাতে জনস্বাস্থ্য রক্ষার ভার ন্যস্ত হলে হিতে বিপরীত হতে পারে।

দেখা গেছে, বর্তমানে দেশে চিকিৎসাসেবা সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হওয়ার পরও ‘আউট অব পকেট এক্সপেনডিচার’ সবচেয়ে বেশি। সেক্ষেত্রে এর ব্যবস্থাপনা এনজিওর হাতে গেলে এ ব্যয় আরও বেড়ে যেতে পারে। এমনকি চিকিৎসা ব্যয় এমন পর্যায়ে পৌঁছতে পারে যে তাতে শুধু দরিদ্র জনগোষ্ঠী নয়; নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের চিকিৎসাসেবাও নাগালের বাইরে চলে যাবে।

সবচেয়ে বড় কথা, বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা কোনো এনজিওর আছে কিনা, সেটিও দেখতে হবে। উল্লেখ্য, ইতঃপূর্বে বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল; কিন্তু অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, এতে সেবার মান তো বাড়েইনি; বরং সেবা পেতে মানুষকে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে।

এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের অভিমত হচ্ছে, সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্ত অজ্ঞতাপ্রসূত তো বটেই; অবৈজ্ঞানিকও। মূলত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ। এর বাইরে কোনো কিছু চিন্তা করা হলে সেবার মান তো বাড়বেই না; বরং সরকারি স্বাস্থ্য খাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে স্বাস্থ্য খাতে সেবার মান বাড়াতে জাতীয় বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপকদের উন্নত প্রশিক্ষণের প্রয়োজন বলে মনে করি আমরা।

বস্তুত এদেশে এনজিগুলোর দু-একটি সাফল্যের কাহিনী থাকলেও তাদের কর্মকাণ্ড নানা কারণে বিতর্কিত। বেশিরভাগ এনজিওর কাজ হচ্ছে অর্থ লগ্নি করা এবং সুদে-আসলে আদায় করা। অর্থ গ্রহণকারীরা সেই অর্থ দিয়ে তাদের ভাগ্যের কোনো উন্নয়ন করতে পারল কিনা, তা তাদের দেখার বিষয় নয়। অতীতে জয়পুরহাট জেলায় এনজিওর জাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে মানুষ কিডনি ও লিভার বিক্রি করেছে, এমন ঘটনাও গণমাধ্যমে এসেছে।

তাছাড়া আমাদের মনে রাখতে হবে, হাসপাতালের ব্যবস্থাপনার ভার এনজিওগুলোর হাতে ন্যস্ত করার সিদ্ধান্ত সঠিক হলে বিশ্বের অন্যান্য দেশে এ চিত্র দেখা যেত। প্রকৃতপক্ষে দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ‘মিস হ্যান্ডলিং’ হচ্ছে। এ অবস্থায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় অটোনমি দরকার। প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সম্পূর্ণ সরকারি ব্যবস্থাপনায় থাকবে, জেলা হাসপাতাল আংশিক অটোনমি এবং টারশিয়ারি হাসপাতাল সম্পূর্ণ অটোনমি করতে হবে।

সব কার্যক্রমের সুপারভিশন ও ফলোআপের ব্যবস্থা করতে হবে। এর বিকল্প হিসাবে এনজিওর হাতে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা প্রদান কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাই সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করা উচিত বলে মনে করি আমরা।

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.