রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০২:২৪ am
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে প্রতিদিন নগরীর ১২টি পয়েন্টে করোনার র্যাপিড এ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হচ্ছে। এতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে এক হাজার। কিন্তু প্রতিদিনই সেটি ছাড়িয়ে যাচ্ছে। ফলে একটার আগেই পরীক্ষা বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। আবার রাজশাহী সিটি করপোরেশনের এলাকার বাসিন্দারা নগর স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সুপারিশ নিয়ে যে হারে প্রতিদিন ল্যাবে পরীক্ষা করাতে চাচ্ছেন, সেই হারেও পরীক্ষা করানো যাচ্ছে না।
অন্যদিকে জেলার নয়টি উপজেলাতে সেই হারে করোনা পরীক্ষার করাচ্ছে না মানুষ। প্রতিদিন গড়ে ২০-২৫ জনের করে নমূনা নেওয়া হচ্ছে মাত্র। এতে করে শহরে আগ্রহ থাকলেও গ্রামে সেই হারে মানুষ করোনা পরীক্ষা করাচ্ছেন না।
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ করোনা ল্যাবের ইনচার্জ সাবেরা গুলনাহার জানান, এখানে প্রতিদিন এখন ৫ শিফটে ৪৭০ জনের করোনার নমূনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। যার অন্তত অর্ধেক হলেন রাজশাহীর শহরের বাসিন্দা। এর বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, নওগাঁ, পাবনা থেকেও নমূনা আসছে। কিন্তু প্রতিদিন নমূনা আসছে ৬০০-৮০০ পর্যন্ত। ফলে নমূণা জট থেকেই যাচ্ছে। সব নমূনা পরীক্ষা করাতে না পেরে ঢাকাতেও পাঠাতে হচ্ছে।
অন্যদিকে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের গণসংযোগ কর্মকর্তা মোস্তাফিজ মিশু বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে প্রতিদিন নগরীর ১২টি পয়েন্টে করোনার র্যাপিড এ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য প্রতিদিন অন্তত ১০০০ টেস্ট করা। কিন্তু দুপুর ১২টার মধ্যেই তার চেয়ও বেশি মানুষ পরীক্ষা করছে। এই পরীক্ষায় গড়ে অন্তত ১০ ভাগ মানুষের করোনা পজেটিভ পাওয়া যাচ্ছে। সর্বশেষ গতকাল সোমবার ১১০৫ জনের নমূনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে তাৎক্ষণিক পরীক্ষা করে ১৪০ জনের পজেটিভ পাওয়া গেছে। যার গড় হার হলো ১২ দশমিক ৬৬ ভাগ। আগের দিন রবিবার ৯২৮ জনের পরীক্ষা করে পজেটিভ ছিল ১০৪ জনের। যার গড় হার ছিলো ১১ দশমিক ২০ ভাগ।’
তিনি আরও জানান, ‘নগরীর বাসিন্দারা ল্যাবে গিয়ে পরীক্ষার জন্য যে পরিমান সিরিয়াল দিচ্ছেন, সেখানে জনবলের অভাবে সবার নমূনা প্রতিদিন সংগ্রহ করা যাচ্ছে না।’
এদিকে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা প্রতিনিধি গোলাম রসুল জানান, পরীক্ষা করালে এ উপজেলায় গড়ে করোনা আক্রান্তের হার শতকরা ৫০ ভাগের উপরে পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এসে মানুষ নমূনা দিতে চাচ্ছে না। ফলে গড়ে প্রতিদিন ২০-২৫ জনের নমূনা পাওয়া যাচ্ছে।
এ উপজেলায় গত ১০ জুন র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট পয়েন্টে মাধ্যমে করোনা পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু হয়। ওই দিনের টেস্টের মাধ্যমে প্রায় ৫২ ভাগ করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়। ১০ জুন র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট পয়েন্টে মাত্র ১৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ১০ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমন পাওয়া যায়। ১২ জুন ২৩ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয় এর মধ্যে ১৩ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমন পাওয়া যায়। ১৩ জুন ১৭ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ৮ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমন পাওয়া যায়। সর্বশেষ ২৩ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয় এর মধ্যে ১৩জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমন পাওয়া যায়। এ নিয়ে উপজেলায় করোনা পজেটিভ রোগী সংখ্যা মোট ১৬৮জন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহাবুবা খাতুন বলেন, ‘দুর্গাপুরে দিন দিন করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষ কোনো প্রকার করোন পরীক্ষা করাতেই চাচ্ছেন না। এমনকি ভর্তিকৃত রোগীদের করোন পরীক্ষার জন্য বলা হলেও তাঁরাও হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাচ্ছেন। এই উপজেলায় প্রতিটি মানুষ যদি করোনা পরীক্ষা করায়-তা হলে আন্তত ৮০ভাগ মানুষের শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমন পাওয়া যাবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘জ¦র সর্দিতে যারা ভুগছেন তাদের শরীরে শতভাগ করোনা ভাইরাস পাওয়া যেতে পারে।’ এই উপজেলায় অতি দ্রুত কঠোর লকডাউনের মাধ্যেমে সবাইকে করোন পরীক্ষার আওতায় আনা অতি জরুরী।’
অপরদিকে রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন কাইয়ুম তালুকদার বলেন, ‘উপজেলার ইউনিয়ন পর্যায়ে আমরা ক্যাম্পেইন বুথ করে নমূনা পরীক্ষা করছি। গড়ে ৮০-৯০ জন করে করে নমূনা পরীক্ষা করা যাচ্ছে। কিন্তু হাসপাতালে গিয়ে নমুনা মানুষি দিতে চাচ্ছে না। তবে ইউনিয়ন পর্যায়ে করোনা রোগী কি পরিমাণ আছে, সেটি জানতেই সাধারণত একেকটি ইউনিয়নে একদিন করে নমূনা সংগ্রহ করছি।’ আজকের তানোর