শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১২:০৯ am

সংবাদ শিরোনাম ::
তানোরে শিক্ষক সমিতিকে নিজ পকেটে রাখতে মরিয়া বিএনপি নেতা মিজান অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে চান জেড আই খান পান্না নগরীতে বিএনপি নেতাকে ছুরিকাঘাত আগামী ২৯ নভেম্বর খুলছে রাজশাহী সুগার মিল জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের স্মরণে স্মরণসভা রাজশাহীতে যুবলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ১১ বাগমারা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবু তালেবের ইন্তেকাল তানোরে মসজিদের এসি অফিসার্স ক্লাবে, ইমামের অর্থ আত্নসাৎ প্রমান পেয়েছে তদন্ত কমিটি সাংগঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তানোরে বিএনপির কর্মীসভা নগরীতে ছাত্রলীগ নেতাসহ বিভিন্ন অপরাধে ৮ জন গ্রেপ্তার লীজকৃত পুকুর দখল, মালিককে বুঝিয়ে দিতে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ পুঠিয়ায় ভুয়া ডাক্তার ধরে প্রাননাশের হুমকির মুখে সাংবাদিকরা রাজশাহী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে দুর্নীতির প্রতিবাদে মানববন্ধন তানোর থানায় দালালের দৌরাত্ন্য বৃদ্ধি, অসহায় মানুষ দুর্গাপুরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে আটক ৩ জনের কারাদণ্ড গ্রাহকের ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ, বন্ধু মিতালীর চেয়ারম্যানসহ আটক ৪ রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে আ.লীগকে দূরে রাখতে ছাত্রনেতাদের চাপ অর্ন্তবর্তী সরকারকে নিরপেক্ষ না হওয়ার আহ্বান বিএনপি নেতাদের তানোরে সরকারি কর্মকর্তা ও সুধীজনদের সাথে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সাম্প্রতিক সময়ে অটোরিকশা বন্ধের দাবিতে সচেতন নাগরকবাসী
হেফাজতের নতুন কমিটি ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতি

হেফাজতের নতুন কমিটি ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতি

গত কয়েক বছর থেকে নানা কারণে আলোচনায় আসা সংগঠন হেফাজতে ইসলামের ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে ৭ জুন। ১৫১ সদস্যের অবশিষ্টদের পরে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। অরাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেও হেফাজতে ইসলাম রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়েই আলোচনায় এসেছে। নারীনীতির বিরোধিতা দিয়ে শুরু করে হেফাজত কার্যত সাম্প্রদায়িক ধারার রাজনীতিকে এগিয়ে নেওয়ার কাজই করছে। ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে জমায়েত হয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের খোয়াব দেখেছিল হেফাজত। আওয়ামী লীগনিরোধী সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে গোপন সম্পর্ক গড়ে হেফাজত তার শক্তি প্রদর্শন করেতে দ্বিধা করেনি। তবে শাপলা চত্বরের নাশকতার পর হেফাজতের সঙ্গে সরকারের একটি গোপন সমঝোতা হয় বলে অনেকেই বিশ্বাস করেন। হেফাজতের প্রথম আমির শাহ আহমেদ শফীর সঙ্গে কৌশলের মৈত্রী করে সরকার হেফাজতকে আন্দোলনবিমুখ করতে সক্ষম হলেও তাদের এমন কিছু দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে, যা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। পাঠ্যসূচিতে পরিবর্তন এনে হেফাজতের মন রক্ষা করার সুদূরপ্রসারী কুফল পুরো জাতিকেই বহন করতে হবে।

হেফাজতে সরকারবিরোধী অংশ গত বছর থেকেই নেতৃত্ব কবজা করার পাঁয়তারা করে সফল হয় আহমেদ শফীর মৃত্যুর পর। আহমেদ শফী মৃত্যুবরণ করেন গত বছর ১৮ মার্চ। ১৫ নভেম্বর সম্মেলনের মাধ্যমে শফী অনুসারীদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। জুনায়েদ বাবুনগরীকে আমির এবং নূর হোসেন কাসেমীকে মহাসচিব করে যে কমিটি গঠন করা হয় তাতে বিএনপি-জামায়াত জোটের সঙ্গে জড়িতদের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়। হেফাজত সরকারবিরোধী অবস্থান দৃশ্যমান করে তোলে। যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ আরো কয়েকজন উগ্র সাম্প্রদায়িক ব্যক্তি হেফাজতের নেতৃত্বে এসে ওয়াজ মাহফিলের নামে দশে উগ্র সাম্প্রদায়িক প্রচারণা চালাতে থাকে। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্য দিয়ে তারা সরকারকে তাতিয়ে তোলে।

“বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্রের একটি অন্যতম মূলনীতি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলেও বাস্তবে কি ব্যক্তিজীবনে, কি রাষ্ট্রীয় বিধিব্যবস্থায় ‘ধর্ম’ একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবেই থেকে যায়। সাধারণ মানুষের মনোজগতে পরিবর্তন আনার জন্য যে রকম প্রচার-প্রচারণার প্রয়োজন ছিল, শিক্ষা-সংস্কৃতি ক্ষেত্রে অসাম্প্রদায়িক ধ্যান-ধারণার অনুকূলে যে রকম মজবুত গাঁথুনি তৈরি করা দরকার ছিল তার কোনো কিছুই পরিকল্পিতভাবে করা হয়নি”

এরপর মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের বিরোধিতা করতে গিয়ে হেফাজত দেশের বিভিন্ন স্থানে যে সহিংসতার আশ্রয় নেয় যা হজম করা সরকারের পক্ষে কঠিন হয়ে যায়। সরকার হেফাজতের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করায় হেফাজত কিছুটা বিপদের মধ্যেই পড়ে। আলোচিত- বিতর্কিত নেতা মামুনুল হকসহ অনেকেই গ্রেপ্তার হওয়ায় হেফাজত দিশেহারা হয়ে পড়ে। এই অবস্থায় সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত করা হয় ২৫ এপ্রিল রাতে। এটা হয়তো সরকারকে শান্ত করার একটি হেফাজতি কৌশল। তবে সরকারের কাছে যেসব তথ্য আছে তা থেকে মনে হয় না যে হেফাজত এবার শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে পারবে। মামুনুল হকসহ গ্রেপ্তারকৃত নেতাদের নতুন কমিটিতে ঠাঁই না দেওয়া মানে অবশ্যই এটা নয় যে হেফাজত তার দৃষ্টিভঙ্গি বদল করেছে। হেফাজত সরকারি চাপের মুখে হেফাজত কৌশল বদল করলেও বাংলাদেশকে পাকিস্তানের আদলে একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্য থেকে সরে আসেনি।

অজ্ঞাত উৎস থেকে অর্থ প্রাপ্তি, পাকিস্তানি জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগসহ যেসব তথ্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পেয়েছে, গণমাধ্যমে যেসব খবর প্রকাশ হচ্ছে, তার ভিত্তিতে সরকার কি ব্যবস্থা গ্রহণ করে সেটাই এখন দেখার বিষয়। হেফাজতকে নিয়ন্ত্রণ নয় শুধু সমূলে উৎপাটনের কার্যকর উদ্যোগ এবং পরিকল্পনা থাকতে হবে। হেফাজত যেমন বাংলাদেশ চায়, একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধারা তেমন। বাংলাদেশ চাননি।

মানুষকে সংখ্যা দিয়ে গণনা করে সংখ্যাগুরু এবং সংখ্যালঘু হিসেবে বিভাজন করাটা সমীচীন না হলেও এটা বিশ্বব্যাপীই হয়ে আসছে। সংখ্যালঘুরা সব দেশে, সব সমাজেই কিছুটা আলাদা, তাদের অধিকার ও মর্যাদা সব ক্ষেত্রে এক রকম নয়। মূলত ধর্মবিশ্বাসের ভিত্তিতে এটা নির্ধারণ করা হলেও বাস্তবে আরো নানাভাবেই এই ভাগ-বিভক্তি করা যায়, করা হয়। ধর্ম ছাড়াও মানুষের বর্ণ (গায়ের রং), বিশ্বাস, চিন্তা ইত্যাদি দিয়েও সংখ্যাগুরু সংখ্যালঘু নিরূপিত হয়ে থাকে।

মোটা দাগে পৃথিবীতে ধর্মবিশ্বাসীরা সংখ্যাগুরু আর ধর্মে অবিশ্বাসীরা সংখ্যালঘু। আস্তিক-নাস্তিক লড়াই নতুন নয়। কোথাও সাদা রঙের মানুষ সংখ্যাগুরু, কোথাও কালো রঙের। কোথাও মুসলমান সংখ্যাগুরু, কোথাও হিন্দু, কোথাও খৃস্টান, কোথাও বৌদ্ধ কিংবা অন্য কোনো ধর্ম বিশ্বাসী। এক ধর্মের মানুষের মধ্যেও সংখ্যালঘু সংখ্যাগুরু আছে থাকতে পারে । যেমন কোথাও শিয়া মুসলমান সংখ্যালঘু, কোথাওবা সুন্নী। খৃস্টানদের মধ্যে ক্যাথলিক প্রোটেস্টান আছে। হিন্দুদের বর্ণ বিভাজন তো মারাত্মক। লেখক : বিভুরঞ্জন সরকার, সূত্র : জাগোনিউজ

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.