বৃহস্পতিবর, ১৯ েপ্টেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:৪৫ pm

সংবাদ শিরোনাম ::
নিখোঁজের সাতবছর পর ছেলেকে ফিরে পেলেন উচ্ছ্বসিত মা তানোরে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত রাসিকের সাবেক কাউন্সিলর মনসুরের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন সেই রুবেল আরও ৭ দিনের রিমান্ডে সিলেবাস সংক্ষিতের দাবিতে রাজশাহীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শেষে সমাবেশ পবায় উপজেলা প্রশাসনে ও কাটাখালি পৌরসভায় ভোগান্তি চিত্র নায়িকা পরীমণি পালন করলেন ‘বিবাহ বিচ্ছেদ’ দিন এক দফা দাবিতে রাজশাহীতে নার্সদের মিছিল শেষে মানববন্ধন প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) বিশ্ববাসীর জন্য রহমত : দুধরচকী রাজশাহীতে শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ডলার সংকটে বাংলাদেশকে সার দিচ্ছে না সরবরাহকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূসের নাগরিক সংবর্ধনা বাতিল রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে বিচারিক ক্ষমতা পেলো সেনাবাহিনী আন্দোলনের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করলেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ বাগমারায় অধ্যক্ষ ও সভাপতির অনিয়মের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়টি গুজব : আসিফ মাহমুদ একদিনের জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা রাজশাহী আসছেন আজ বাংলাদেশ ও ভারত ভিসা জটিলতায় চার যৌথ সিনেমা একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির শাহরিয়ার কবির আটক বৈরী আবহাওয়ার অজুহাতে বিদ্যুতের লোডশেডিং, অসহায় মানুষ
বাগমারায় প্রকৌশলীর হয়রানিতে থমকে আছে উন্নয়ন

বাগমারায় প্রকৌশলীর হয়রানিতে থমকে আছে উন্নয়ন

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগমারা : রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় ১৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের জন্য টেন্ডার হয় গতবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে। চলতি বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে সবকটি স্কুলের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা। প্রতিটি কাজের ব্যয় এক কোটি টাকার বেশি।

এই কাজগুলোর অধিকাংশই এখনো শুরু করতে পারেননি ঠিকাদাররা। আবার যারা কাজ শুরু করেছেন, তাঁরাও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিডি) উপজেলা প্রকৌশলীর স্বেচ্ছাচারিতা ও হয়রানির কারণে কাজ শেষ করতে পারছেন না। ফলে সরকারের নেওয়া এই উদ্যোগটি ভেস্তে যেতে বসেছে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী সানোয়ার হোসেনের কারণে।

অভিযোগ উঠেছে, এই প্রকৌশলী গত সাত বছর ধরে একই স্থানে কর্মরত থেকে নিজের বলয় তৈরী করে ঠিকাদারদের নানাভাবে হয়রানি করছেন। ফলে এ উপজেলায় স্কুল নির্মাণ, রাস্তা নির্মাণ, সংস্কার থেকে শুরু করে সব ধরনের উন্নয়নকাজ গত দুই বছর ধরে থমকে আছে। কোনো কোনো রাস্তা ৫ বছরেও ঠিকাদাররা শেষ করতে পারছেন না প্রকৌশলীর স্বেচ্ছাচারিতার কারণে।

এর বাইরে স্থানীয় সাধারণ মানুষকেও নানাভাবে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রকৌশলী সানোয়ারের বিরুদ্ধে। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার বাগমারার সাজিপুর গ্রামের আকবর আলী নামের এক ব্যক্তিকে সানোয়ার হোসেনের নির্দেশে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। এরপর তাঁকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করে শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়। কৃষক আকবর আলীর জমির ধারের ছোট একটি নিমগাছ কেটে ফেলেছিলেন, যেটির কারণে তাঁর ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার দামনাশ থেকে ফতেপুর রাস্তাটির কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। কিন্তু এখনো এই কাজটি শেষ না হওয়ায় এলাকাবাসী চরম ভোগান্তির মধ্যে আছেন। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ওয়াসিমের একজন ঘনিষ্ট ব্যক্তি অভিযোগ করেন, উপজেলা প্রকৌশলীর নানা রকম হয়রানির কারণেই রাস্তার কাজটি শেষ করতে পারছেন না তিনি।

অভিযোগ উঠেছে, যেসব ঠিকাদার উপজেলা এলজিইডি দপ্তরকে ম্যানেজ করতে পারেন, তাঁদের কাজে কোনো বাধা দেওয়া হয় না। এরই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার উপজেলার হাটগাঙ্গপাড়া এলাকায় একটি রাস্তা নির্মাণের জন্য ঠিকাদার নিম্নমাণের ইট সরবরাহ করেন। এতে বাধা দেন স্থানীয় এলাকাবাসী। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মারপিটের ঘটনাও ঘটে।

উপজেলার মাথাভাঙ্গা-হাটগাঙ্গপাড়া সড়কটির কাজ গত এপ্রিল মাসে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রকৌশলী সানোয়ার হোসেনের হয়রানির কারণে ঠিকাদার সেই কাজটি সময়মতো শেষ করতে পারেননি। ফলে জনগুরুত্বপূর্ণ ওই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষকে দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।

উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ করেন ঠিকাদার এমদাদুল হক। তিনি বলেন, ‘নানা হয়রানির কারণে গত এক বছরেও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণকাজ শেষ করা যাচ্ছে না। কিন্তু মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। আবার অনেক ঠিকাদার বছরের পর বছর ধরেও কাজ শেষ করতে পারছেন না। এতে করে চরমভাবে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে বাগমারার উন্নয়নকাজ।’ আরেক ঠিকাদার মাজেদুল হক বলেন, একজন ঠিকাদার বাগামারার ১২টি স্কুলের কাজ পেয়েছেন। কিন্তু নানা হয়রানির কারণে তিনিও কাজ শেষ করতে পারছেন না।

বাগমারার ভবানীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আব্দুল মালেক বলেন, ‘উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ-হামিরকুৎসা রাস্তার ধারে একজন শিক্ষক বাড়ি নির্মাণ করেন। কিন্তু ওই বাড়ির সিঁড়ির কিছু অংশ রাস্তার ধারে আসায় উপজেলা প্রকৌশলী সানোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে ওই শিক্ষককে ধরে নিয়ে এসে সারাদিন তাঁর কার্যালয়ে আটকে রাখাও হয়েছিল। শেষে আমরা নেতাকর্মী গিয়ে ওই শিক্ষককে ছাড়িয়ে নিয়ে আসি। এভাবে তিনি সাধারণ মানুষকেও নানাভাবে হয়রানি করছেন।’

একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, বাগামারায় গত সাত বছর ধরে কর্মরত আছেন উপজেলা প্রকৌশলী সানোয়ার হোসেন। এই সময়ে তিনি তাঁর কার্যালয়ে তাঁর অধিনস্ত কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পছন্দের ঠিকাদারদের নিয়ে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। ফলে অন্যান্য ঠিকাদাররা তাঁর দ্বারা নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। মাঝে দুই বার বদলির আদেশ এলেও অজানা কারণে এই প্রকৌশলী বাগমারা থেকে বদলিকৃত স্থানে যোগদান করেননি। তাঁর পছন্দের উপসহকারী প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন রয়েছেন গত সাত বছর ধরে এই বাগমারাতেই। তাঁর বাড়ি এবং উপজেলা প্রকৌশলী সানোয়ার হোসেনের বাড়ি নাটোরের বড়াইগ্রামে।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী সানোয়ার হোসেন বলেন, ‘কাজ যেন দ্রুত শেষ হয় তার জন্য ঠিকাদারদের সহায়তা করি। কিন্তু কোন অন্যায় হতে দেই না। আমি কোনো অনিয়মের সঙ্গে জড়িত নই বলেই গত সাত বছর ধরে এখানে সুনামের সঙ্গে কর্মরত আছি।’ তিনি বলেন, ‘সঠিকভাবে কাজ আদায় করে নিচ্ছি বলেই কিছু ঠিকাদার আমার ওপর ক্ষুব্ধ হতে পারেন। কিন্তু আমি কোনো অনিয়মের আশ্রয় নিব না। সরকারি টাকার যথেষ্ট হিসাব আদায় করেই কাজ শেষ করে নিব।’ আজকের তানোর

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.