শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৪:৪০ am
ডেস্ক রির্পোট : বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় ছাগলকাণ্ডের ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সীমা শারমিনকে অবশেষে বদলি করা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আদেশে তাকে ঢাকায় জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটে ন্যস্ত করা হয়েছে।
পরিষদের বাগানের ফুলগাছ খাওয়ায় তিনি একটি ছাগল পাঁচদিন আটকে রাখার পর অসহায় মালিক এক দরিদ্র নারীকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে দুই হাজার টাকা জরিমানা করে বহুল আলোচিত হন।
বুধবার বিকালে বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) উজ্জ্বল কুমার ঘোষ এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম খান রাজু জানিয়েছেন, তিনিও ইউএনওর বদলির কথা শুনেছেন। তবে ইউএনওকে ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, সম্প্রতি আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সীমা শারমিন পরিষদের ভিতরে ফুলের বাগান করেন। উপজেলা পরিষদের পাশে বসবাসকারী জিল্লুর রহমানের স্ত্রী সাহেরা খাতুন সংসারের অভাব দূর করতে হাঁস-মুরগি, ছাগল পালন করেন। তার একটি ছাগল গত ১৭ মে ওই বাগানে ঢুকে ফুলগাছের পাতা খায়।
ইউএনও সীমা শারমিনের নির্দেশে নিরাপত্তা প্রহরীরা ছাগলটিকে আটক করেন। সাহেরা বেগম খোঁজ পেয়ে পরিষদে গেলে তাকে ছাগল ফেরত না দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর তিনি ইউএনওর কাছে পাঁচদিন ধরনা দিলেও লাভ হয়নি। তাকে জানানো হয়, ছাগল ফুলগাছ খাওয়ায় অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালতে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। টাকা জামা দিয়ে ছাগল নিয়ে যেতে বলা হয়।
এদিকে সাহেরা খাতুন জরিমানার টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় ইউএনও গত ২২ মে পাঁচ হাজার টাকায় ছাগল বিক্রি করে দেন। ইউএনওর বাংলোর কর্মচারীরা সাহেরা বেগমকে বিষয়টি জানিয়ে, জরিমানার দুই হাজার টাকা বাদ দিয়ে অবশিষ্ট তিন হাজার টাকা নিয়ে যেতে বলেন। এরপর থেকে সাহেরা খাতুন বিভিন্ন স্থানে ধরনা দিয়েও তার ছাগল ফেরত পাননি।
এ নিয়ে ২৬ মে বিভিন্ন স্থানীয়, জাতীয় ও অনলাইন মাধ্যমে ফলাও করে খবরটি প্রকাশ হয়। ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হলে ইউএনও পরদিন নিজে জরিমানার টাকা পরিশোধ করে মালিকের কাছে ছাগলটি ফিরিয়ে নেন।
এ প্রসঙ্গে ইউএনও সীমা শারমিন জানান, তিনি ছাগল বিক্রি করেননি। ছাগল ফুলবাগান নষ্ট করায় মালিককে তিনদফা সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি কর্ণপাত না করায় ছাগল আটক করে একজনের জিম্মায় রাখা হয়েছিল। এছাড়া আদালতে মালিককে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এদিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আদেশে ইউএনও সীমা শারমিনকে ঢাকায় জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটে ন্যস্ত করা হয়।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) উজ্জ্বল কুমার ঘোষ জানান, ইউএনওকে বদলির খবর তিনিও পেয়েছেন। বগুড়া জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক সাংবাদিকদের জানান, এটা তার নিয়মিত বদলি। সূত্র : যুগান্তর