রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:৪১ am
নিজস্ব প্রতিবেদক : ঈদের কয়েক দিন আগে ও পরে রাজশাহীর কাঁচাবাজারে খুব বেশি ক্রেতার সমাগম ছিল না। তবে ঈদ শেষে সপ্তাহ খানেক পর কাঁচাবাজারসহ ভোজ্যপণ্যের বাজারগুলো ফের জমে ওঠেছে। বাজারে ক্রেতার সমাগম হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম।
শুক্রবার (২৯ মে) নগরীর সাহেব বাজারসহ অন্যান্য বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, আগের মতো ফের ক্রেতা সমাগম বেড়েছে। সপ্তাহ ঘুরে আবারও জমে উঠছে কাঁচাবাজার। ফলে ঈদের মধ্যে সবজিসহ বিভিন্ন কাঁচাপণ্যের দাম কমলেও আবারও তা বাড়তে শুরু করেছে।
বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের মধ্যে মানুষ সবজি কম এবং মাছ-মাংস বেশি খায়। ফলে বাজারে সবজির চাহিদা ছিল কম। এ কারণে দাম কমেছিল। ঈদের পরে আবার চাহিদা বাড়ছে। যার ফলে সবজির কেজিতে দুই-পাঁচ টাকা করে বেড়েছে। এদিকে ক্রেতারা বলছেন, ঈদের আগে ও এক সপ্তাহ পরে সবজির দাম খুব বেশি ছিল। কিন্তু ঈদ শেষে রাজশাহীতে মানুষজন বেড়ে যাওয়ায় আবারো শাক-সবজির দাম বেড়ে গেছে।
রাজশাহীর সাহেব বাজার, শিরোইল কাঁচাবাজার, সাগরপাড়া কাঁচাবাজার, কোর্ট বাজার, লক্ষ্মীপুর বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, ঢেঁড়স ১৫-২০ টাকা, পটল ৩০-৩৫ টাকা, ঝিঙে ২৫-৩০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২০-২৫ টাকা, বরবটি ৩০-৩৫ টাকা, সজনে ডাটা ৬০-৭০ টাকা, বেগুন ৩০-৩৫ টাকা, করলা ৪৫-৫০ টাকা, কচুর লতি ৩৫-৪০ টাকা, পেপে ৩৫-৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি পিস লাউ ২৫-৩০ টাকা ও কলা ৩০-৪০ টাকা হালি দরে বিক্রি হচ্ছে বাজারগুলোতে।
অন্যদিকে, লাল শাক, সবুজ শাকের দাম আটিতে ১৫-২০ টাকা, পুঁইশাক ২০-২৫ টাকা কেজি। এছাড়াও পাটের শাক কেজিতে ২০-২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মিশালি শাক ৩০-৩৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৩৮-৪০ টাকা, আদা ৬৫-৭০ টাকা, রসুন ৬৫-৭০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৪০-৫০ টাকা ও শুকনো মরিচ ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
কোর্ট বাজারে আসা গৃহিণী রিমা বেগম বলেন, কিছু জিনিসের দাম কম থাকলেও কিছু কিছু জিনিসের দাম অনেক বেড়েছে। তবে ঈদের আগে ও পরে কয়েকদিন কাঁচাপণ্যের দাম বেশ সস্তায় পাওয়া গিয়েছিল। এখন দাম বাড়তি। তবে এটা যে খুব বেশি তা বলা যাবে না।
বাজারে বোতলজাত প্রতি পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল ৬৪৫ টাকা ও সরিষা প্রতি কেজি ১৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও প্রতি কেজি চিনি ৬৮ টাকা, মসুর ডাল ১০০ টাকা, সোনামুগ ১৪০ টাকা, ছোলাবুট ৬৭ টাকা, খেসারি ৮০ টাকা, বুটের ডাল ৯০ টাকা, মটর ৯৫ টাকা ও এ্যাংকর ডাল ৪৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছে সাহেব বাজারের টুটুল ভ্যারাইটি স্টোরের ম্যানেজার মো. গোলাম হোসেন।
সাগরপাড়া কাঁচাবাজারের মাছ ব্যবসায়ী রমজান আলী বলেন, মাছের বাজারে রকমভেদে প্রতি কেজি ইলিশ ৮০০-১২০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। তিনি জানান, করোনাকালে মাছের আমদানি কম। তাই দামটা একটু বেশি।
এছাড়া অন্যান্য মাছের রকমভেদে মৃগেল ১২০-১৮০ টাকা, রুই ১৬০-২২০ টাকা, পাঙ্গাস ১২০ টাকা, সিলভার ৯০-১৫০ টাকা, কালবাউস ১৫০ টাকা, তেলপিয়া ১৪০ টাকা, শোল মাছ ৪০০ টাকা, ট্যাংরা ৬০০ টাকা, পাবদা ৩৫০ টাকা ও টাকি মাছ ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
মাংসের বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস দশ টাকা বেড়ে ৫৬০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়াও খাশির মাংস ৮০০ টাকা ও ছাগলের মাংস ৬৫০-৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। সাহেব বাজারের মাংস বিক্রেতা সাইদুর রহমান বলেন, বাজারে গরুর সরবরাহ কম। ঈদের মধ্যে মাংসের চাহিদা বেশি ছিল। সে কারণে এখন দাম ১০-২০ টাকা বেশি।
এছাড়াও ব্রয়লার মুরগি ১২৫-১৩০ টাকা, সোনালী ২৩০ টাকা, লেয়ার ২০০ টাকা, দেশি মুরগি ৪৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এদিকে, মুরগি বিক্রেতা মো. কাজিম বলেন, মুরগির দাম কিছুটা কমেছে। কয়েকদিন আগেও ব্রয়লার ১৪০ টাকা, সোনালী ২৫০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। এছাড়াও লেয়ার ও দেশি মুরগির দামও কেজি ১০ থেকে ২০ টাকা কমেছে।
এদিকে বাজারে উঠতে শুরু করেছে নতুন চাল। নতুন চালের দাম কিছুটা কম হলেও পুরোনো চালের দাম স্থির রয়েছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, প্রতি কেজি স্বর্ণা ৪৫ টাকা, নতুন আটাশ ৫০-৫২ টাকা, পুরোনো আটাশ ৫৫ টাকা, নতুন মিনিকেট ৫২-৫৫ টাকা, পুরোনো মিনিকেট ৬০-৬২ টাকা, অটো স্বর্ণা ৪৫-৪৬ টাকা, পোলাও চাল ৮০-৯০ টাকা, কাটারীভোগ ৭০ টাকা, গোল্ডেন পোলাও চাল ৬৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
নগরীর হড়গ্রাম কোর্ট বাজারে অবস্থিত সালাম চাউল স্টোরের প্রোপাইটার মো. আব্দুস সালাম বলেন, বাজারে নতুন আসায় চালের দাম কিছুটা কম। তবে পুরোনো চালের দাম আগের মতই রয়েছে। তবে চালের বড় বড় চাল ব্যবসায়ীদের কাছে শুনেছি কৃষকরা যদি ধান ঠিকভাবে ঘরে তুলতে পারেন, তাহলে চালের দাম আরেকটু কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাল মিল ও ব্রয়লার হাউজ থেকে চাল কিনে কেজি প্রতি ২ থেকে ৩ টাকা লাভে ছেড়ে দেই। চালের মুকামে দাম বেশি হলে আমাদেরও বাধ্য হয়ে বেশি দামে বিক্রয় করতে হয়। তবে এক্ষেত্রে দাম নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে বড় বড় চাল সিন্ডিকেটরা চালের দাম উঠা-নামার বিষয়টি নির্ধারণ করে থাকেন।’ আজকের তানোর