শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৮:৪৭ pm
ডেস্ক রির্পোট : করোনার জন্য ব্যবসায় মন্দা যাওয়ায় কিস্তি শোধ করতে পারেননি জাহিদুল ইসলাম (৩৫)। এজন্য ক্ষুব্ধ হয়েছেন এনজিও কর্মীরা। তারা কিস্তির টাকা নিতে এসে না পেয়ে মারপিট করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঋণগ্রহীতার ভাই শহিদুলের (৩০) মাথা ফাটিয়ে দিয়েছেন তারা। তিনি ভাই জাহিদুলকে রক্ষা করতে গিয়ে মারধরের শিকার হন।
বুধবার (২৬ মে) সকাল ১০টার দিকে পাবনার চাটমোহর উপজেলার রেলবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বেসরকারি সংস্থা প্রোগ্রাম ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্টের (পিসিডি) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের ওপর হামলা চালান বলে আহত ব্যবসায়ী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
আহত দুজন উপজেলার অমৃতকুন্ডা গ্রামের মৃত আকবর আলীর ছেলে।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চাটমোহর রেলস্টেশনের দক্ষিণে সিএনজি স্টেশন মোড়ে রয়েছে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ব্যবসায় সচ্ছলতা ফেরানোর আশায় এক বছর আগে বেসরকারি সংস্থা প্রোগ্রাম ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট (পিসিডি) থেকে তিনি চার লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। ১৮ মাসে ১৮টি কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করার কথা। তিনি নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ করে আসছিলেন। কিন্তু করোনা সংকট ও লকডাউনের কারণে ব্যবসা মন্দা যাওয়ায় ২-৩টি কিস্তি দিতে পারেননি। ব্যবসা চালু হলে কিস্তি পরিশোধ করবেন বলে পিসিডির ব্যবস্থাপক আইয়ুব আলীকে আগেই জানিয়ে রেখেছিলেন।
বুধবার সকালে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে পিসিডির ব্যবস্থাপক আইয়ুব আলী ও পিসিডির নির্বাহী পরিচালক শফিকুল আলমের ভাতিজা হাসান, সোহেলসহ কয়েকজন জাহিদুলকে কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে চাপ দেন। করোনার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তিনি কিছুদিন পরে মধ্যে টাকা পরিশোধ করবেন বলে জানান। কিন্তু তারা সেটি না মেনে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন।
এক পর্যায়ে জাহিদুলকে কাঠের বাটাম দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকেন পিসিডির ব্যবস্থাপক আয়ুব আলীসহ অন্যরা। এসময় জাহিদুলের ছোটভাই শহিদুল তাকে রক্ষা করতে গেলে তাকেও বেধড়ক মারপিট করেন তারা। তাদের লাঠির আঘাতে মাথা ফেটে যায় শহিদুলের। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। আহত দুই ভাইকে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
অভিযোগের বিষয়ে বেসরকারি সংস্থা প্রোগ্রাম ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্টের (পিসিডি) ব্যবস্থাপক আইয়ুব আলী অসংলগ্ন কথা বলেন। তিনি একবার বলেন, তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন না, তিনি কিছুই জানেন না। পরক্ষণে জানান, তিনি পরে বিষয়টি জেনেছেন। কী জেনেছেন প্রশ্ন করলে জানান, তাদের কর্মীদেরই ঋণগ্রহীতারা ধাওয়া করে তাড়িয়ে দিয়েছেন। আমাদের লোকও আহত হয়েছেন। তিনি জানান, তারা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
পিসিডির নির্বাহী পরিচালক শফিকুল আলমকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
স্থানীয়রা জানান, পিসিডি কয়েক বছর আগে গাছ লাগানো কার্যক্রম পরিচালনা করত। পরিবেশ রক্ষার নাম ভাঙিয়ে প্রতিষ্ঠানটি ফান্ড সংগ্রহ করে গলাকাটা সুদে মহাজনী কারবার শুরু করেছে। করোনাকালে এমন কাজের জন্য ওই এনজিও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তারা।
এ বিষয়ে চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় দুই পক্ষ থেকে থানায় দুটি আলাদা অভিযোগ এসেছে। অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সূত্র : জাগোনিউজ।