শাহিন সাগর, নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর মোহনপুরে ডিজিটাল প্রিন্টার মেশিন কিনে টাকা না দিয়ে প্রতারণা করায় বেলনা কারিগরি কলেজ প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে মোহনপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মেশিনের মালিক ভুক্তভোগী হাবিবুর রহমান।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর বেলনা কারিগরি কলেজের প্রিন্সিপাল মোহনপুর উপজেলার বাকশৈল গ্রামের মৃত মছির উদ্দিনের ছেলে মনোয়ারুল ইসলাম ১টি ডিজিটাল প্রিন্টার মেশিন, যার মডেল নম্বর DIGI TECH CH -১৮ ও ১টি এয়ার কন্ডিশনার (এসি) এবং ১টি অনলাইন আইপিএস ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় একই উপজেলার ধুরইল গ্রামের মৃত ফজর আলীর ছেলে হাবিবুর রহমান নীল ও সাংবাদিক শাহীন সাগরের কাছ থেকে কিনে নেন।
মেশিনটি মোহনপুর উপজেলা সদরের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফের ভাড়াকৃত বাড়ি হতে প্রিন্সিপাল মনোয়ারুল ইসলাম উপস্থিত স্বাক্ষীগনের সামনে নগদ ৫ হাজার টাকা বায়নামা দিয়ে ট্রাক ভাড়া করে প্রিন্টার মেশিন, এসি, অনলাইন আইপিএস তুলে নিয়ে যান। ৯০ দিন পরে বাঁকী ৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা পরিশোধ করার কথা। মেশিনটি কেশরহাট বাজার নিয়ে গিয়ে মুনা প্রিন্সিপাল রীতিমতো ব্যবসা শুরু করেন। মেশিন নিয়ে ব্যবসা শুরুর ২ মাস পরে প্রিন্টার মেশিনের হেড নষ্ট হয়ে যায়।
এ জন্য তিনি মেশিনের মালিক হাবিবুর ও শাহীন সাগরকে ডেকে তাদের কাছ থেকে নতুন হেড কেনার জন্য পঞ্চাশ হাজার টাকা দাবি করেন। মানবিক কারণে হাবিবুর ও শাহীন সাগর হেড কেনার জন্য ৪ লাখ ৭০ হাজার টাকার মধ্যে মেশিনের হেড বাবদ ৫০ হাজার টাকা বাদ দেন। এসময় মুনা প্রিন্সিপাল তাদেরকে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কিছুদিন পর থেকে মেশিনের টাকার জন্য মুনা প্রিন্সিপাল হাবিবুর ও শাহীন সাগরকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ২ লাখ ৫ হাজার টাকা প্রদান করেন।
গত ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ৪ তারিখে বাঁকী ২ লাখ ৭০ হাজার টাকার জন্য স্থানীয় স্বাক্ষীদের উপস্থিতিতে ৩’শত টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে একই সালের অক্টোবর মাসের ৩০ তারিখে সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধে করবেন বলে মুনা প্রিন্সিপাল প্রিন্টার মেশিন বিক্রয় চুক্তিনামায় নিজ নাম স্বাক্ষর করেন। চুক্তিনামার শর্ত মোতাবেক তিনি অক্টোবর মাসের ২০ তারিখে আবারো ১ লাখ ২০ হাজার টাকা প্রদান করেন এবং বাঁকী ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা নির্ধারিত সময় অক্টোবর মাসের ৩০ তারিখে পরিশোধ করবেন বলে ফটোকপি করার জন্য ৩’শ টাকা মূল্যের ৩ পাতা স্ট্যাম্প নিয়ে আর ফেরত দেননি।
নির্ধারিত তারিখে হাবিবুর রহমান ও শাহিন সাগর তার কাছে থেকে টাকা চাইলে আজ দিব কাল দিবো বলে দিন পরিবর্তন করতে থাকেন এবং বেশ কয়েকবার সময় নিয়ে টাকা দিতে ব্যর্থ হন। গত ২৪ মে মনোয়ারুল প্রিন্সিপালের কাছ থেকে শাহিন সাগর ও হাবিবুর পাওনা টাকা চাইলে তিনি খুন খজমের বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে পারলে টাকা তুলে নিস বলে চলে যায়। তবে, প্রিন্সিপাল মনোয়ার হোসেন বলেন, টাকা পাবে, সময় হলে দেবো বলে এড়িয়ে যান।
মনোয়ারুল প্রিন্সিপালের কাছ থেকে ডিজিটাল প্রিন্টার মেশিন বিক্রয় সংক্রান্ত পাওনার টাকার বিষয়ে স্বাক্ষী কেশরহাট পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শাহিনুর রহমান বলেন, মুনার বাড়াবাড়ির একটা সীমা থাকা দরকার। বন্ধুর জন্য তো আর মিথ্যা বলতে পারি না সর্বোচ্চ আদালতে গেলে আমি বলবো শাহিন ও হাবিবুর মুনার কাছে টাকা পাবে।
এ বিষয়ে কেশরহাট মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ তাজরুল ইসলাম বলেন, টাকা পাওয়ার বিষয়টি চরম পর্যায়ে পৌছে গেছে। এ বিষয়টি নিয়ে আমি খুবই মর্মাহত আমি মনাকে অনেক দিন বলেছি টাকাগুলি দেওয়ার জন্য তিনি আমার কথায় কোন গুরুত্ব দেননি। আইন আদালতে আমি সত্যি কথাই বলবো।
বেলনা গ্রামের মনোয়ারুল প্রিন্সিপালের বন্ধু ডাবলু প্রামানিক বলেন, আমি মনাকে বলেছি অনেকদিন হয়ে গেল ওদের টাকাগুলি দিয়ে দাও। সে আমাকে বলেছে আমি কোন টাকা দিতে পারবোনা। এতদিন পর একজন মানুষ কোন বিবেকে এসব কথা বলে আমার বুঝে আসেনা!
এ বিষয়ে মোহনপুর থানা কর্মকর্তা ওসি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আজকের তানোর