শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৪:৩৪ pm
আর কে রতন :
বাংলাদেশকে এক সময় বলা হতো সোনালি আঁশের দেশ। সে সময় রাজশাহী অঞ্চলেও ব্যাপক হারে পাটের চাষাবাদ হত। কিন্তু পরবর্তীতে সঠিক ভাবে রপ্তানি না হওয়ায় এবং দাম কমে যাওয়ায় লোকসান গুণতে হত চাষিদের। ফলে সেই ধারাবাহিকতা থেকে ধীরে ধীরে থমকে যায় এবং কৃষক পাট চাষ হতে দিনে দিনে মুখ ফিরিয়ে নিতে থাকে। তবে কয়েক বছর হতে প্রতিবারও পাট রফতানি অনেক বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা পাটের দামও ভাল পেতে শুরু করেছে চাষিরা। যার জন্য বর্তমানে পাটের দাম নিয়ে সংশয় নেই কৃষকদের। এখানে বলা যেতেই পারে এ অঞ্চলে আবারও সোনালি আঁশ চাষে কৃষকের সুদিন ফিরতে শুরু করেছে। পূর্বে পাট ওঠার শুরুর দিকে ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হলেও গত মুওসুমে সাড়ে ৫ হাজার টাকা মন দরে পাট বিক্রি হচ্ছে। যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এমন দাম এই প্রথম বলে জানিয়েছেন চাষিরা। তারা পাটের বেশি মূল্যে বিক্রি করতে পেরে ভিষন আনন্দিত ।
বাগমারা উপজেলার পাট ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন জানান, গত বছর প্রতি মন পাট বিক্রি হয়েছে ৮০০-১২০০ টাকায়। পাট উঠার শুরুর সময় তা বেড়ে ১৫০০-২০০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে। এভাবে বাড়তে বাড়তে সাড়ে ৫ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে পাটের দাম। তবে এখনও বলা যাচ্ছে না, পাটের দাম আরও বাড়বে কিনা। কারণ বিশ্ব বাজারে সুতার দাম বেড়েছে, তাই পাটের দাম বেড়েছে বলে বড় বড় আড়ৎদাররা জানায়।
মোহনপুর উপজেলার বাকশিমইল গ্রামের পাটচাষি আব্দুর রশিদ জানান, ২ বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছিলাম। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও ভালো হয়েছিল। দাম পাবো না ভেবে কিছু পাট আগে বিক্রি করেছিলাম। তবে সেই তুলনায় এখন ডাবল পাটের দাম। ভাবতে পারিনি পাটের মূল্য এতো বেড়ে যাবে। পবা উপজেলার পাট চাষি ইনছান আলী জানান, আগে প্রতি বছর ৩-৪ বিঘা জমিতে পাট চাষ করতাম। কিন্তু বাজারে বিক্রি করে ক্সেতের ভরচের টাকা হত না। তাই এ আবাদ বাদ দিয়েছিলাম। এখন বাজারে মূল্য বেড়ে যাওয়ায় এ বছর ২ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি এবং এখন পর্যন্ত জমিতে গাছ খুব সুন্দর আছে আশা করছি এবারও ভাল দাম পাবো।
এবিষয়ে রাজশাহী রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর সহকারী পরিচালক কাজী সাইদুর রহমান জানান, রাজশাহী থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এক কোটি ৮৮ লাখ ১৫ হাজার ৫৮৫.৭৪ ডলার, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এক কোটি ৯৯ লাখ ৯০ হাজার ৮৭৯. ৫৫ ডলার ও ২০১৯-২০ অর্থবছরে দুই কোটি ৩৪ লাখ ৭ হাজার ৫২৮.১৫ ডলারের পাট রফতানি হয়েছে। আর রফতানি বাড়ার কারনে দামও বেড়েছে।
অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোছা. উম্মে ছালমা জানান, রাজশাহী জেলার নয় উপজেলায় গেল বছর (২০২০) ১৪ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু চাষাবাদ হয়েছে ১৪ হাজার ১৯৬ হেক্টর জমিতে। অর্থাৎ আরও ২৬ হেক্টর বেশি জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে ১৩ হাজার ৮৪৬ হেক্টর জমিতে পাটের চাষাবাদ হয়েছিল।পাটের চাষ বেশি, ফলন ভালো ও দামও বেশি। পাটের সম্ভাবনার বিষয়ে তিনি আরো বলেন, পাটের দাম ভালো থাকায় কয়েক বছর থেকে পাটের আবাদ বেড়েছে। পাট বিক্রিতে কৃষকের সমস্যা হবে না। এছাড়া বিদেশে পলিথিন ও প্লাস্টিক জাতীয় জিনিস থেকে মানুষ ফিরে আসছে। তাদের মধ্যে পাটের তৈরি ব্যাগের চাহিদা বেশি। আর তাই পাট চাষে কৃষকের সুদিন ফিরেছে। আজকের তানোর