সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১২:৩৫ pm
আর কে রতন : বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে সৃষ্ট দুর্যোগে কর্মহীন হয়ে পড়ছেন রাজশাহী সদরসহ ৯ উপজেলার প্রায় শতাধিক বিউটি পার্লার মালিক-কর্মচারী। এর ফলে অন্যান্য খাতের মতো মুখ থুবড়ে পড়েছে সৌন্দর্য সেবা খাতটি। স্বামী পরিত্যাক্তা, বিধবাসহ অসহায় অনেক নারী এ পেশায় ফিরে পেয়েছেন একটি নতুন ঠিকানা এবং হয়েছেন স্বালম্বি। কিন্তু চলমান করোনা পরিস্থিতি দীর্ঘায়ত হওয়ায় এই খাতের শত শত মালিক-কর্মচারী কর্মহীন হয়ে পড়ায় মানবেতর জীবন যাপন করছে তারা।
কয়েক মাস ধরে পার্লারগুলো বন্ধ থাকার পর কিছুটা শীতিল হলেও করোনার ২য় ঢেউয়ের কারনে আবারো বন্ধ হয়ে যায় পার্লারগুলো। ফলে আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। এতে দুর্দিন কাটছে না তাদের। প্রতিষ্ঠানের ঘর ভাড়া, বিদ্যূৎ বিলসহ নিজেদের সংসার চালানো নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন তারা। এদিকে কর্মহীন হয়ে পড়া বিভিন্ন পেশার লোকজন সরকারি অনুদান পেলেও তা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন বলে তাদের আক্ষেপ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা সদরসহ মোহনপুর, কেশরহাট, বাগমারা, ভবানীগঞ্জ, তাহেরপুর. পুঠিয়া, বাঘা, চারঘাট, গোদাগাড়ী, তানোর, পবা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় শতাধিক বিউটি পার্লার রয়েছে।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে নারী উদ্যোক্তারা এসব পার্লার ব্যবসার মাধ্যমে স্বাবলম্বী হওয়ার মনোনিবেশ করছিল। এতে অনেকের স্বচ্ছল ভাবে কাটছিল তাদের জীবন। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট দুর্যোগে তারা কর্মহীন জীবন যাপন করছেন। বিয়েসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায় মেয়েরা পার্লারমুখী হচ্ছেন না। যারা নিয়মিত রূপচর্চা করতেন তারাও অনেকে আর্থিক সংকটে আবার কেউ করোনার ভয়ে বাইরে কাজ করাচ্ছেন না। এতে অনেকটাই দুর্দিন কাটাতে হচ্ছে পার্লার ব্যবসায়ীদের।
মোহনপুর সদরে অবস্থিত সোনালী বিউটি পার্লারের স্বর্ত্তাধিকারী সোনালী রানী বলেন, আমরা পার্লার মালিকরা ভালো নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আজকে দীর্ঘ দিন যাবৎ আমাদের ব্যবসা প্রায় বন্ধ, সামনেও কবে পরিস্থিতি ঠিক হয় কি না জানি না। আমরা ত্রাণ বা এককালীন সাহায্য চাই না। আমাদের যদি সহজ শর্তে এক বছর মেয়াদী লোনের ব্যবস্থা করে দেন, তাহলে আমরা সেই লোন দিয়ে এই দুঃসময়ে ব্যবসা ও জীবন পরিচালনা করতাম এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কাজ করে লোন পরিশোধ করতাম।
কেশরহাট পৌরসভার পম্পা বিউটি পার্লারের স্বর্ত্তাধিকারী পম্পা রানী জানান আমাদের সারা বছরই কম বেশি কাজ হয়ে থাকে, কিন্তু বড় টার্গেট থাকে দুটি ঈদ। অথচ করোনার মধ্যে ৩টি ঈদ চলে গেলো আমাদের কোন আয় নেই। ঘর ভাড়া, বিদ্যূৎ বিলসহ নিজের খরচ সবমিলে বর্তমানে প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখায় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে।
রাজশাহী সদরের সিপাইপাড়ায় ওমেন্স ডল পার্লারের ম্যানেজার গুলসানারা এ প্রতিবেদককে জানান, চলমান পরিস্থিতিতে ব্যবসার অবস্থা প্রচন্ড লাজুক। কাষ্টমার নেই বললেই চলে। যারা আসছে তাদের অর্ধেক টাকায় বাধ্য হয়ে কাজ করে দিচ্ছি। এ আয় দিয়ে পার্লার ভাড়া, ১৫জন স্টাফের বেতন, বিদ্যূৎ বিলসহ অন্যান্য খরচ জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন সরকারী ভাবে যদি লোনের ব্যবস্থা করত, তাহলে হয়তো আমাদের এ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো টিকে থাকত।
এ বিষয়ে নারী নেত্রী প্রভাষক মেহেবুব হাসান চপলা এ প্রতিবেদককে কর্মক্ষেত্রে বিউটি পার্লার খাতে নারীদের একটি বড় গোষ্ঠি এ পেশায় নিয়োজিত আছেন এবং অনেক অবহেলিত মেয়ে পার্লারের কাজ করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। কিন্তু মহামারি করোনার প্রাদুর্ভাবে তাদের কাজ না থাকায় তারা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় সংশ্লিষ্টরা বিউটি পার্লাদের খোজ নিয়ে তালিকা করে তাদের পাশে দাড়ানো প্রয়োজন। আজকের তানোর