সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১২:৩০ am
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা গেছে। আগামী কাল শুক্রবার উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল ফিতর। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর এসেছে খুশির ঈদ। পশ্চিম আকাশে শাওয়ালের এক ফালি চাঁদ দেখা দেবার সাথে সাথে ঈদ আনন্দের হিল্লোল ছড়িয়ে পড়বে সমাজের সর্বত্র। বিশ্বনবী হযরত মুহম্মদ (স:) মদিনায় হিজরতের পর মুসলমানদের জন্য আল্লাহর কাছ থেকে বড় দুটি উপহার অর্জন করেন। সে দুটো হলো মহা আনন্দের ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা। দুই ঈদের মধ্যে ঈদুল ফিতরের আনন্দটাই বড়। কেননা ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকল ধমপ্রাণ মুসলমান এক মাস রোজা পালনের পর এই বিশেষ দিনটির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকেন।
দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার মাধ্যমে আল্লাহ্র অশেষ নেকি লাভ করে ইহকাল ও পরকালের কামিয়াবি হাসিলের সুবর্ণ সুযোগ পাওয়া যায় এই দিনে। এর পাশাপাশি ঈদের আনন্দ সকলে মিলে ভাগাভাগি করে নেয়ার মাধ্যমে ঈদুল ফিতরের তাৎপর্য উপলব্ধি করাও সম্ভব হয়। হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে গিয়ে শত্রু-মিত্র, ধনী-গরিব আবালবৃদ্ধবনিতা সকলে মিলে অনাবিল আনন্দে উদ্বেল হবার শিক্ষা দেয়া ঈদুল ফিতর।
ঈদের আনন্দ সবার জীবনকেই আলোড়িত করে তোলে। মুসলিম জাহানের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব ঈদ এখন আর শুধুমাত্র মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এ উৎসবের আনন্দ সমাজের অন্য ধর্মের মানুষও ভাগাভাগি করে নেয়। ঈদের আনন্দ সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে হৃদ্যতা গড়ে তোলে সাম্য-মৈত্রীর বাঁধনে সকলকে আবদ্ধ করে। মানবতার সুমহান আদর্শে উজ্জীবিত সব ধর্মের মানুষের অন্তরকে স্পর্শ করে ঈদের আনন্দ।
পবিত্র রমজানের এক মাস সিয়াম সাধনার পর এই ঈদ শুধু আনন্দের বার্তাই বয়ে আনে না, তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমে আমরা আত্মশুদ্ধিও অর্জন করি। তাই মহান আল্লাহ্র কাছে এই দিন আমাদের আত্মনিবেদনের দিনও। ঈদের দিন আমরা একে অপরের সাথে দেখা সাক্ষাত করি। কুশল বিনিময় করি। প্রাণের সাথে প্রাণের মিলন ঘটাই। দিনটি আরও নিবিড় ও সার্থক করে তুলতে পারিবারিক পরিমণ্ডলকে আনন্দঘন ও উৎসবমুখর করে তোলার প্রয়াস চলে সমাজের সর্বত্র।
সর্বস্তরের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে ঈদের উৎসব বিশেষ তাৎপর্য বয়ে আনে। সামাজিক সম্প্রীতি, জাতিগত সংহতি ও মানবিক মেলবন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করতে এ যেন বহুল প্রতীক্ষিত দুর্লভ আকর্ষণ। ব্যক্তিগত সুখ-দুঃখের গন্ডি পেরিয়ে এক বৃহত্তর প্রীতিময় মাঙ্গলিক উৎসবে যুক্ত হয়ে একে অপরের সাথে একাত্ম হই আমরা। আন্তরিকতার মধুর সম্পর্ক গড়ে ওঠে, মজবুত হয়। সামাজিক সৌহার্দ্য, সম্প্রতি সুরক্ষায় উদ্বুদ্ধ হবার দিনও আজ।
ঈদের দিন হিংসা-বিদ্বেষ, ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে মসজিদে মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাতারবন্দি হয়ে নামাজ পড়ে আমরা একমন, এক আত্মা গড়ে তুলতে সচেষ্ট হই। করোনার কারণে ঈদগাহে না যাওয়ায়, পরস্পরকে বুকে জড়িয়ে ধরে কোলাকুলি করতে না পেরেও একাত্মতার ক্ষেত্রে আমরা যেন পিছিয়ে না পড়ি। এই দিনে বিদুরিত হোক সব দুঃখ-কষ্ট, ব্যথা-বেদনা, হতাশা, নিরাশা, হিংসা-বিদ্বেষ, স্বার্থপরতা-সঙ্কীর্ণতা, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। ঈদের আনন্দ সবার জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল সুখ-আর শান্তির বারতা। জীবনকে মধুময় করে তুলুক। সবাইকে ঈদ মোবারক। আজকের তানোর