শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৪:০৪ pm
ভাগাড়, যেখানে বাসাবাড়ির বর্জ্য, এলাকার ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয় তা সাধারণত শহরের বাইরে, বসতি থেকে দূরে করা হয়। কারণ ভাগাড় পরিবেশ নষ্ট করে, দুর্গন্ধ-রোগজীবাণু ছড়ায়। কিন্তু আশ্চর্যের কথা পরিচ্ছন্ন এই নগরীতে স্থায়ীভাবে ভাগাড় নির্মিত হচ্ছে একটি হাসপাতালের সামনে, ডাক্তার-নার্সদের অফিস-হোস্টেলের পাশে, জনবসতির ধারেই। স্বাভাবিকভাবেই প্রতিবাদ উঠেছে। পুলিশ এনে ভুক্তভোগীদের প্রতিবাদ দমন করা হয়েছে। এমন খবরই প্রকাশিত হয়েছে গতকালের বিভিন্ন গণমাধ্যমে।
রাজশাহীর খ্রিস্টিয়ান মিশন হাসপাতালের সামনে আগে থেকেই একটি অস্থায়ী ভাগাড় ছিল যেখানে এলাকার নাগরিক বর্জ্য, ময়লা-আবর্জনা জমা করা হতো। ভাগাড়ের দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী ভাগাড়টি সরিয়ে নেবার দাবি জানিয়ে আসছিল। কিন্তু রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ নাগরিক দাবি অগ্রাহ্য করে সেখানে স্থায়ী ভাগাড় করছে। এই সেকেন্ডারি ট্রান্সফরমার স্টেশন (এসটিএস) নির্মাণে বাধা দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাদের সাথে যোগ দিয়েছেন ডাক্তার, নার্স, কর্মচারীসহ এলাকাবাসী।
ভাগাড়ের কারণে তারা তাদের অতিষ্ঠ জীবনের কথা বলেছেন সংবাদকর্মীদের সামনে। দুর্গন্ধে অফিস করতে পারেন না, হোস্টেলে নার্সদের থাকতে হয় দরজা-জানালা বন্ধ করে। পাশেই নার্সিং ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, একটু দূরে গীর্জা, সেখানেও দুর্গন্ধে টেকা দায়। এলাকাবাসীও একই অভিযোগ। অস্থায়ী ভাগাড়টি সরিয়ে নেবার দাবি জানাচ্ছিলেন তারা দীর্ঘদিন ধরে। অথচ সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্টরা সেখানেই স্থায়ী ভাগাড় নির্মাণ করছে কেন সেটা কারও বোধগম্য নয়।
তবে সিটি কর্পোরেশনের সোজা কথা, জায়গাটির মালিক তারা। তাই তাদের যা ইচ্ছা নির্মাণ করতে পারে। ২৫ লাখ টাকায় এসটিএস নির্মাণ করা হচ্ছে। এটি খোলা ভাগাড় নয়। তাই দুর্গন্ধ ছড়াবে না। এমন সাফ জবাবের পাশে যখন পুলিশ দাঁড়িয়ে যায় তখন সাধারণ মানুষের অসহায়ত্ব কোথায় দাঁড়ায় সেটা কারও না বোঝার কথা নয় !
নাগরিক সেবার প্রতিষ্ঠানের এমন ভূমিকা স্বাভাবিক বলা যায় কি ? নাগরিকদের দুর্ভোগ বাড়িয়ে সেবাদান কিভাবে, সেটা ভেবে দেখার বিষয়। হাসপাতাল, ডাক্তার-নার্সদের অবস্থান, উপাসনালয়, সর্বোপরি জনবসতির ধারে কাছে ভাগাড় কেন সে প্রশ্নের জবাব আশা করা অযৌক্তিক হবে না নিশ্চয়ই!