শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৪:৩৮ am
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো জয় পেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস। সব মিলিয়ে ২১৩ আসনে জয়ী হয়েছে তারা।
ভারতের নির্বাচন কমিশন সোমবার সকালে সর্বশেষ এতথ্য দিয়েছে। নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) জয়ী হয়েছে ৭৭ আসনে। কংগ্রেস-বাম দল ও আইএসএফের গড়া সংযুক্ত মোর্চা পেয়েছে মাত্র একটি আসন। আরেকটি আসন পেয়েছে অন্যান্যরা।
তবে নির্বাচনের ফল নিয়ে বড় নাটকীয়তা তৈরি হয় মমতার নন্দীগ্রাম আসন নিয়ে। রোববার সকাল থেকে ভোটের খবরের বড় আকর্ষণ ছিল এই আসন। সেখানে দীর্ঘ সময় পিছিয়ে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেলা ২টার পর থেকে পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকে। আবার সন্ধ্যায় ঘটে নাটকীয়তা। শেষ পর্যন্ত এই আসনে মমতাকে হারিয়ে জয়ী হন শুভেন্দু অধিকারী।
ভোটের এই ফলের মধ্য দিয়ে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির যে বেসামাল ঢেউ শুরু হয়েছিল, তাও আপাতত থামল। মাসব্যাপী আট ধাপের বিশাল নির্বাচনযজ্ঞে শুধু ভারত নয়; সংগত কারণেই প্রতিবেশী দেশগুলোরও এ নির্বাচনের দিকে দৃষ্টি ছিল।
বিজেপির হয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যেভাবে মাঠে নেমেছিলেন, তাতেই এ লড়াই শেষ পর্যন্ত মোদি বনাম মমতার যুদ্ধে পরিণত হয়। খেলা হবে- স্লোগান নিয়ে ভোটের মাঠে নামা মমতা তাতে জিতলেন; হেরে গেলেন মোদি। ‘নিজের মেয়েকেই বেছে নিল বাংলা’র মানুষ।
নিজের আসন নন্দীগ্রামে রাজনৈতিক শিষ্য শুভেন্দু অধিকারীর কাছে মাত্র ১৭৩৬ ভোটের ব্যবধানে হারলেও তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন মমতাই। রোববার দলীয় কার্যালয়ে এসে বিষয়টি তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের জানান।
ভারতের সংবিধান অনুযায়ী, কোনো অনির্বাচিত ব্যক্তি মুখ্যমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রী হলে তাকে ছয় মাসের মধ্যে কোনো আসনে জয়ী হয়ে আসতে হবে। সে সুযোগ মমতার জন্য খোলা।
করোনার কারণে জয়ী প্রার্থীদের সনদ দেওয়া স্থগিত রেখেছে নির্বাচন কমিশন। সনদ দেওয়ার পর তাদের শপথ অনুষ্ঠিত হবে। তবে সেই তারিখ এখনও ঘোষণা করা হয়নি।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ২৯৪ আসনের মধ্যে দুটির ভোট গ্রহণ প্রার্থীর মৃত্যুতে স্থগিত ছিল। সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজন ১৪৮টি আসন।
করোনা মহামারির ভয়াবহতার মধ্যে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে ২৯২ আসনের ভোট গণনার পর বেসরকারি ফল ঘোষণা করে ভারতের নির্বাচন কমিশন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ বিজেপি, কংগ্রেস ও অন্যান্য দলের শীর্ষ নেতারা মমতাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। অসাম্প্রদায়িক ভারতের পক্ষে লড়াই করা লেখক, বুদ্ধিজীবী ও অ্যাক্টিভিস্টরাও মুখ্যমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল এককভাবে ২১১টি আসনে জিতেছিল। ২০১১ সালে ১৮৪ আসনে জিতেছিল। তবে টানা দু’বার ক্ষমতায় থাকায় অ্যান্টি-ইনকামবেন্সি মনোভাব বাড়তে দেখা যায়।
মমতার এবার নির্বাচনের স্লোগান ছিল ‘খেলা হবে’। এ স্লোগানেই প্রচারের জন্য গান বাঁধা হয়, পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে যায় নির্বাচনী এলাকা। সেই স্লোগান দিয়েই বাজিমাত করেছে তৃণমূল।
গত ২৭ মার্চ পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের ভোট শুরু হয়। শেষ হয় গত বৃহস্পতিবার। আট দফায় ভোট পড়ার গড় হার ৮১ দশমিক ৬ শতাংশ। সূত্র : এফএনএস। আজকের তানোর