শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০১:২৯ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগমারা : রাজশাহীর বাগমারায় স্ত্রীকে গলাটিপে ও সাত বছরের শিশুকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। শনিবার দুপুরে দুটি মামলায় মোট চার আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এরা হলো গৃহবধূ সাবিনা ইয়াসমিন হত্যা মামলার প্রধান আসামি স্বামী সোহাগ হোসেন (১৭), তার মা রুপালী বেগম (৩৫), শিশু মারুফ হাসান হত্যা মামলার আসামি বাবা শাহাজাহান আলী (৪৫) ও সৎ মা মুক্তা বেগম (২৫)। তারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
গত শুক্রবার রাতে গৃহবধূ সাবিনা ইয়াসমিনকে হত্যার অভিযোগ তার মা ছামেনা বিবি বাদী হয়ে চারজনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবিনার স্বামী, শাশুড়ি, মামা ও নানা শ্বশুরকে আসামি করা হয়েছে। যৌতুকের কারণে গলাটিপে হত্যার পর লাশ ঘরের মধ্যে ফেলে রাখা হয় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। মুঠোফোনে প্রেমের পর দেড়মাস আগে চানপাড়া গ্রামের সোহাগ হোসেনের সঙ্গে ও মাঝগ্রামের সাবিনা ইয়াসমিনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে সোহাগ হোসেন স্ত্রীকে নিয়ে চানপাড়ায় নানার বাড়িতে থাকতো।
অপর দিকে শিশু মারুফ হাসানকে হত্যার অভিযোগে তার বাবা ও সৎ মাকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন শিশুর মা মারুফা বেগম। এর আগে এই ঘটনার সর্ম্পকে জানার জন্য পুলিশ শিশুর বাবা, সৎ মা ও দুই চাচাকে থানায় নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুই চাচাকে ছেড়ে দেওয়া হলেও বাবা শাহাজাহান আলী (৪৫) ও সৎ মা মুক্তা বেগমকে (২৫) গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
নিহত মারুফ হাসান উপজেলার শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের বিনোদপুর গ্রামের শাহাজাহান আলীর দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে। তার মায়ের সঙ্গে ছাড়াছাড়ির পর সৎ মায়ের সঙ্গে থাকতো সে।
শুক্রবার দুপুরে বাগমারা থানার পুলিশ উপজেলার শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের বিনোদপুর গ্রাম থেকে কাফনের কাপড়ে মোড়ানো শিশু মারুফ হাসানের লাশ উদ্ধার করে। শিশু মারুফ হাসানকে জীনে মেরে ফেলেছে বলে প্রচার করা হয়। দ্রুত লাশ দাফনের ব্যবস্থা করেন বাবা ও সৎ মা। লোকজনও জানাজায় আসেন। খবর পেয়ে শিশুর আসল মা (বাবার সাথে ছাড়াছাড়ির পর অন্যত্র বসবাস করেন) আসলে বিপত্তি বাধে। তিনি ছেলে মারুফ হাসানকে হত্যার অভিযোগ তুলেন। পরে পুলিশও ঘটনাস্থলে পৌঁছে। তারা লাশের সঙ্গে শিশুর বাবা, সৎ মা ও দুই চাচাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক সৈবুর রহমান বলেন, পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সৎ মা মুক্তা বেগম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নিজের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। স্বামীর সহযোগিতায় শুক্রবার ভোর রাতে বালিশ চাপা দিয়ে শিশু মারুফ হাসানকে মেরে ফেলা হয়েছে। শিশু মারুফ হাসান দুষ্টুমি করে এটা মানতে পারছিলেন না। এসব ক্ষোভ থেকে শিশুকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।
বাগমারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আফজাল হোসেন বলেন, এসপি মহোদয়ের নির্দেশে ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের (সদর সার্কেল) সহযোগিতায় অতি অল্প সময়ের মধ্যে দুই হত্যা মামলার মোটিভ উদ্ধার ও মূল আসামিদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। আজকের তানোর