রবিবর, ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, সময় : ০৫:০৯ am
নিজস্ব প্রতিবেদক, তানোর :
রাজশাহীর তানোরে বিএমডিএর অপারেটর নিয়োগের প্রতিবাদে বিএনপির নেতাকর্মীরা অফিসে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেছেন। পরে বিক্ষোভ শেষে অফিসের সামনে তানোর-তালন্দ রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে উপজেলা চত্বর থেকে মিছিল বের করা হয়।
আজ ১ জানুয়ারী বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বরেন্দ্র বহুমুখি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) তানোর জোন অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল টহল দেয়। তবে, বিকেল ৩টার দিকে তালা খুলে দেয়া হয়।
পরে বিক্ষোভ মিছিলটি উপজেলা সদরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়। প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন, তানোর উপজেলা বিএনপি আহবায়ক ও তালন্দ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আখেরুজ্জামান হান্নান, তানোর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও রাজশাহী জেলা বিএনপির সদস্য মিজানুর রহমান মিজান, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক চাঁন্দুড়িয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দিন, তানোর পৌর বিএনপির আহবায়ক একরাম আলী মোল্লা ও বিএনপি নেতা ফিরোজ কবির ছাড়াও বিএনপির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মিরা উপস্থিত ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, পুরো উপজেলায় বিএমডিএর ৫৩৬টি গভীর নলকুপ রয়েছে। এসব গভীর নলকূপে গত বছরের অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তায় অপারেটর নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। ফলে অপারেটর পদে এক হাজার ৬৯৬টি আবেদন বিক্রি হলেও জমা পড়ে এক হাজার ৫৩০টির মতো। পরে কর্তৃপক্ষ গত ১৯ ডিসেম্বর, ২২ ডিসেম্বর ও ২৩ ডিসেম্বর অপারেটর পদে নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা নেয়। নিয়োগ বোর্ডের সুপারিশে সম্প্রতি গত ৩০ ডিসেম্বর সোমবার অপারেটর নিয়োগের তালিকা প্রকাশ করে বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক অফিসের এক কর্মচারী জানান, অপারেটর নিয়োগ খুবই স্বচ্ছতার ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তার জানামতে বেশির ভাগ অপারেটর বিএনপি-জামায়ত অনুসারী নেতাকর্মী ও সমর্থকরা নিয়োগ পেয়েছেন। তবে, বিএনপির জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বড় নেতাদের অনুরোধে ভিন্ন দলের কিছু আত্নীয়-স্বজনরাও পেতে পারেন। এব্যাপারে অপারেটর নিয়োগে কোন প্রকার অনিয়ম ও দূর্নীতি হয়নি বলে জানান তিনি।
তবে, এবিষয়ে উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান হুজুর বলেন, পাঁচন্দর ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষ্ণপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জার কুন্দাইন মৌজায় অবস্থিত বিএমডিএর গভীর নলকূপ অপারেটর পদে নিয়োগ পাবার জন্য পাঁচন্দর ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারী আব্দুল গাফফার মেম্বারকে এক লক্ষ টাকা দেন। কিন্তু তার নিয়োগ হয়নি। পরে দেড় লক্ষ টাকার বিনিময়ে মাস্টার শফিকুর রহমানের স্ত্রীকে নিয়োগ পাইয়ে দেন গাফফার মেম্বার। এছাড়াও কৃষ্ণপুর গ্রামের কেতাবুল আলীকে আরেক গভীর নলকুপে অপারেটর পদে নিয়োগ পাইয়ে দেবার নামে দেড় লক্ষ টাকা নেয়। কিন্তু তাকেও নিয়োগ দেয়া হয়নি। ওই গভীর নলকূপে হাবিবুর রহমানের কাছে দ্বিগুণ টাকা নিয়ে তাকে অপারেটর পাইয়ে দেয় বিএনপি নেতা গাফফার মেম্বার। তবে, গাফফার মেম্বার এসব নিয়োগ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে অস্বিকার করে এড়িয়ে গেছেন।
এব্যাপারে তানোর বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলী জামিনুর রহমান বলেন, তানোরে অপারেটর পদে নিয়োগ গ্রহণের জন্য ৫ সদস্য বিশিষ্ট নিয়োগ কমিটি গঠন করেন কর্তৃপক্ষ। ওই কমিটির সদস্য পদেও ছিলেন না তিনি। কারো একক সিদ্ধান্তে নয়, কমিটির সুপারিশে অপারেটর নিয়োগ হয়েছে। আর অপারেটর পদে কারা নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন সবই কর্তৃপক্ষ অবগত আছেন। রা/অ