রবিবর, ২২ িসেম্র ২০২৪, সময় : ০৮:১৯ am
মো. মমিনুল ইসলাম মুন, বিশেষ প্রতিবেদক :
রাজশাহীর চারঘাটে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে কোন ধরণের কাগজপত্র ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই জনবসতিপুর্ন এলাকায় ইটভাটা পরিচালনার অভিযোগে এমজেড ইটভাটা সিলগালা ও মালিককে নগদ দুই লাখ টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমান আদালত। তবে ভ্রাম্যমান আদালতের এ আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ৭দিনের মাথায় আবারো ইটভাটা চালু করেছেন এমজেড ইটভাটা মালিক মাজদার রহমান।
ইটভাটা মালিকের দাবি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের অনুমতি নিয়েই ইটভাটা চালু করা হয়েছে। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পরিবেশ অধিদপ্তর ইটভাটা মালিকের অনুমতির কথা অস্বীকার করেছেন। উপজেলার ইউসুফপুর ইউনিয়নের নওদাপাড়া এলাকায় অবস্থিত এমজেড ইটভাটায় গণমাধ্যম কর্মী উপস্থিত হলে ভাটা মালিক ও প্রশাসনের এমন দুই ধরণের বক্তব্যে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
জানা যায়, উপজেলার ইউসুফপুর ইউনিয়নের নওদাপাড়ায় জনবসতিপুর্ণ এলাকায় কোন ধরণের কাগজপত্র ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই এমজেড ইটভাটা স্থাপন করেন ওই এলাকার প্রভাবশালী মাজদার রহমান। এলাকার সর্বস্তরের লোকজন বাধা দিলেও ক্ষমতার জোরে প্রভাবখাটিয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ইটভাটা পরিচালনা করে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ এলাকার সচেতনমহল স্থানীয় প্রশাসনসহ পরিবেশ অধিদপ্তরে একাধিকবার অভিযোগ দিলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্য্যকর ব্যবস্থা গ্রহন না করায় ক্ষমতার প্রভাবে ইটভাটা মালিক মাজদার রহমান ইটভাটা বন্ধ করেননি। সর্বশেষ গত ৫ আগষ্ট দেশের পরিবর্তিত পেক্ষপটে আবারো স্থানীয় গ্রামবাসী উক্ত ইটভাটা বন্ধে লিখিত আবেদন করেন স্থানীয় প্রশাসনসহ পরিবেশ অধিদপ্তরে।
এবার টনক নড়ে স্থানীয় প্রশাসনসহ পরিবেশ অধিদপ্তরের। তারই ধারাবাহিকতায় গত ৯ ডিসেম্বর পরিবেশ অধিদপ্তর ও চারঘাট উপজেলা প্রশাসন যৌথ ভাবে অভিযান পরিচালন্া করেন বির্তকিত এমজেড ইটভাটায়। এ সময় আটক করা হয় ভাটা মালিক মাজদার রহমানকে। দেখতে চাওয়া হয় কাগজপত্র। তবে কোন কাগজপত্র দেখাতে না পাড়ায় এবং কাঠ পুড়ানোসহ একাধিক অভিযোগে অভিযুক্ত মাজদার রহমানকে নগদ ২ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) আরিফ হোসেন। এ ছাড়া সরকারী কোন কাগজপত্র না থাকায় এবং জনজসতিপুর্ণ এলাকায় অবৈধ ভাবে ইটভাটা পরিচালনা করার জন্য ইটভাটাটি সিলগালা (বন্ধ) ঘোষনা করেন। তবে অভিযানের ৭ দিনের মাথায় আবারো অবৈধ ভাবে ইটভাটা পুনরায় চালু করায় চরম ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন এলাকাবাসী। এলাকাবাসীর দাবি প্রশাসনকে ম্যানেজ করে মাজদার অবৈধ ইটভাটা আবারো চালু করেছেন।
ইউসুফপুর এলাকার জিল্লুর রহমান বিপ্লবসহ একাধিক ব্যাক্তির অভিযোগ, হাজার হাজার এলাকাবাসীর বাধা উপেক্ষা করে সম্পুর্নরুপে অবৈধ পন্থায় জনবসতিপুর্ন এলাকায় ইটভাটা পরিচালনা করে আসছেন প্রভাবশালী মাজদার রহমান। এলাকার মানুষের প্রানের দাবি উপেক্ষা করে মাজদার ইটভাটা স্থাপন করায় এই এলাকার আমসহ বিভিন্ন ধরণের ফসল মারাক্তাক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ। এরপর প্রশাসন অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করে সিলগালা করার পরেও মাজদার কিভাবে আবারো সাত দিনের মাথায় ইটভাটা চালু করতে পারে। এলাকাবাসীর দাবি স্থানীয় প্রশাসন মাজদারকে সহায়তা করে ভাটা চালু করিয়েছেন।
সরজমিনে স্থানীয় সাংবাদিকরা গেলে অবৈধ ইটভাটার মালিক মাজদার রহমানের দাবি আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের অনুমতি নিয়েই ইটভাটা পুনরায় চালু করেছি। অবৈধ ইটভাটা মালিক মাজদার রহমানের এমন বক্তব্যে প্রশাসনের উপর এলাকাবাসীর চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টি সম্পর্কে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক নীল রতনের দাবি, অবৈধ ইটভাটা চালূ করতে অনুমতি দেয়ার কোন ধরণের সুযোগ নেই। ভাটা মালিক এমন বক্তব্য দিয়ে থাকলে তিনি মিথ্যা বলছেন। তবে পুনরায় ভাটা চালু করলে দ্রুত সময়ের মধ্যেই আবারো অভিযান পরিচালনা করে আইনের সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান নিশ্চিত করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা সুলতানার দাবি অবৈধ ইটভাটা মালিককে অনুমতি দেয়ার প্রশ্নই আসে না। সিলগালা করে দেয়া ভাটা পুনরায় অবৈধ ভাবে চালু করলে আইনী ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান। রা/অ