মঙ্গবার, ১৭ িসেম্র ২০২৪, সময় : ১০:২৪ pm
এম এম মামুন :
রাজশাহীতে সিএনজি অটোরিকশার স্ট্যান্ডে হামলা চালিয়েছেন বাস শ্রমিকেরা। পুলিশ জানিয়েছে তারা ৭০টি সিএনজি অটোরিকশার সামনের কাঁচ ভেঙে দিয়েছেন। তবে সিএনজি চালকদের দাবি, প্রায় ৯০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এছাড়াও যাত্রী-চালকসহ ৪০ জনকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে রাজশাহী নগরীর রেলগেট এলাকায় সিএনজি স্ট্যান্ডেই হামলা চালান বাস শ্রমিকেরা। এর আগে সোমবার সকালে জেলার তানোর উপজেলা সদরে সিএনজি অটোরিকশার চালকেরা বাসের ছয়জন চালক, হেলপার ও কন্ডাক্টরকে পিটিয়ে আহত করেন। এর জের ধরে দুপুরে রাজশাহী থেকে সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখনই বাস শ্রমিকেরা শিরোইল বাস টার্মিনাল এলাকায় বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা রেলগেটে সিএনজি স্ট্যান্ডের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তবে পুলিশ ও সেনাবাহিনী তাদের শান্ত করে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত রাজশাহী থেকে কোন বাস ছাড়ছে না।
এদিকে মঙ্গলবার সকালে বাস শ্রমিকেরা হাতুড়ি ও লাঠিশোঁটা নিয়ে রেলগেটে চলে আসেন। তারা একের পর এক সিএনজি অটোরিকশা ভাঙচুর করতে শুরু করেন। এ সময় বাধা দিতে গেলে সিএনজি চালক যাত্রীদেরও পিটিয়ে আহত করা হয়। রাজশাহী সিএনজি মালিক সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের প্রায় ৯০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। পিটিয়ে আহত করা হয়েছে কমপক্ষে ৪০ জনকে। এদের বেশিরভাগই চালক, কয়েকজন যাত্রী আছেন। এদের মধ্যে একজন গর্ভবতী নারী।
তিনি বলেন, আহতরা বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নিয়েছেন। পুলিশ এসেছে, সবই দেখেছে। আমরা মামলা করব। এখন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) আমাদের ডেকেছেন। আমরা কথা বলতে যাচ্ছি।
রাজশাহী মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিক আলী পাখিকে ফোন করলে তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের নেতা হেলাল উদ্দিন বলেন, আমরা পুলিশ কমিশনারের কাছে এসেছি। পরে কথা বলছি।
নগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ বলেন, আমরা এসে ভাঙচুর করা ৩২টি গাড়ি পেয়েছি। অন্য গাড়িগুলো চলে গেছে। ভাঙচুর করা গাড়ির সংখ্যা ৭০টি হতে পারে। সব গাড়ির কাঁচ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এরপর কিছু গাড়ি উল্টে ফেলা হয়।
ওসি বলেন, যাত্রী ও চালক মিলিয়ে ১০ জনের মতো আহত হতে পারেন। আমরা সিএনজি চালকদের মামলা করতে বলেছি। তারা মামলা দিলে আমরা নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেব।
রাজশাহীতে সিএনজি চালক ও বাস শ্রমিকদের এই দ্বন্দ্ব অনেক পুরনো। বাস শ্রমিকেরা দীর্ঘদিন ধরেই সিএনজি স্ট্যান্ড শহরের বাইরে নিয়ে যাওয়ার দাবি করছেন। প্রায়ই তাদের মধ্যে ছোটখাট সংঘাত হয়। এর আগেও বাস চালক ও হেলপাররা তানোর উপজেলা সদরে মারধরের শিকার হয়েছেন। তখনও বাস চালকেরা গাড়ি বন্ধ রেখে এর প্রতিবাদ করেছেন।
তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, বাস শ্রমিক ও সিএনজি অটোরিকশার চালকদের সমস্যা পুরনো। এরা শহরে গেলে তাদের সিএনজি আটকানো হয়। এরা তখন তানোরে বাসের চালক-হেলপারদের দাপট দেখায়। এই সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত। তিনি জানান, সোমবার ছয়জন বাস শ্রমিককে মারধরের ঘটনায় রাতে থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলায় ১৮ জন সিএনজি চালকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত আরও আসামি রয়েছে। মামলার পর এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রা/অ