বৃহস্পতিবর, ১২ িসেম্র ২০২৪, সময় : ০৮:২১ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক, পবা :
ক্রেতা কিনেছেন এক বস্তা সার। পরিবেশক (ডিলার) তাঁর ভাউচারে তুলে রেখেছেন ৪০ বস্তা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ভাউচারে লেখা ক্রেতা এনামুল হকের মুঠোফোন নম্বরে কল করেন। এনামুল হক এক বস্তা সার কেনার কথা স্বীকার করেন। বিক্রেতাসহ উপস্থিত সবাই লাউড স্পিকারে সে কথা শোনেন। এই অভিযোগে রাজশাহীর পবা উপজেলার বায়া বাজারের বিএডিসির (বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন) এক সার পরিবেশককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে পবার ইউএনও মো. সোহরাব হোসেন ভ্রাম্যমাণ আদালতে এই জরিমানা করেন। একই বাজারে বিসিআইসির (বাংলাদেশ রসায়ন শিল্প সংস্থা) এক সার বিক্রেতার মজুতের গড়মিল পাওয়ায় তাঁকেও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এ সময় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা তাসনিম, অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা তন্ময় কুমার সরকার, উপপ্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় সহযোগিতা করেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, মজুতের বেশি সার সংরক্ষণ ও ভাউচারের প্রদত্ত তথ্যের সঙ্গে ক্রেতার বক্তব্যের মিল না থাকায় উপজেলার বায়া বাজারে অভিযান চালানো হয়। এ সময় অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিয়ন্ত্রণ আইন-১৯৫৬ আইনে দুজন সারের পরিবেশককে এই জরিমানা করা হয়।
বিএডিসির পরিবেশক মেসার্স জারমান আলী ট্রেডার্সের ভাউচারে দেখা যায়, উপজেলার বাগধানী গ্রামের এনামুল হক গত ৫ ডিসেম্বর ৪০ বস্তা ডিএপি, ২০ বস্তা এমওপি ও ৮ বস্তা টিএসপি সার কিনেছেন। নিয়ম অনুযায়ী এখন সার বিক্রেতার ভাউচারে ক্রেতার মুঠোফোন নম্বর সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। ইউএনও সবার সামনে ওই বিক্রেতার নম্বরে কল করেন। মুঠোফোনের অপর প্রান্ত থেকে ক্রেতা এনামুল হক এক বস্তা করে সার কেনার কথা স্বীকার করেন। এ কথা শোনার পর মেসার্স জারমান আলী ট্রেডার্সের ব্যবস্থাপক ব্যাখ্যা দেন যে বিভিন্ন দিনে এনামুল তাঁর কাছ থেকে ভাউচারের উল্লেখিত পরিমাণ সার কিনেছেন, যার ভাউচার তিনি এক দিনে করেছেন। তাঁর কথার বিশ্বাসযোগ্যতা না পাওয়ায় তাঁকে জরিমানা করা হয়।
একই বাজারের বিসিআইসির পরিবেশক মেসার্স নাহার এন্টারপ্রাইজের মজুতের গড়মিল পাওয়া যায়। এই পরিবেশকের রেজিস্ট্রারে মজুতের পরিমাণ উল্লেখ করা ছিল ১৩৫ বস্তা। কিন্তু গুদামে পাওয়া যায় ১৮৫ বস্তা। দোকানি এর ব্যাখ্যায় বলেন মঙ্গলবারই আলুর মাঠ থেকে ৫০ বস্তা সার ফেরত এসেছে। এটা তাঁর রেজিস্ট্রারে তোলা হয়নি। ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে এই তথ্য বিশ্বাসযোগ্য না হওয়ায় তাঁকেও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ইউএনও মো. সোহরাব হোসেন বলেন, কৃষকদের ন্যায্যমূল্যে সার কেনার সুবিধার্থে বাজারের ওপর কঠোর নজর রাখা হচ্ছে। বেশি দামে বিক্রির তথ্য পেলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর ধারাবাহিকতায় মজুতের বেশি সার সংরক্ষণ ও ভাউচারের প্রদত্ত তথ্যের সঙ্গে ক্রেতার বক্তব্যের মিল না থাকায় বায়া বাজার এলাকার দুই সারের ডিলারকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। রা/অ