বৃহস্পতিবর, ৩১ অক্টোব ২০২৪, সময় : ০৯:২১ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক, তানোর :
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর রাজশাহীর তানোরে ডিগবাজি দিয়ে আবারও বিএনপিতে ভিড়েছেন সুবিধাভোগী এক চেয়ারম্যান ও মেম্বার। এরা হলেন- তানোর থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সরনজাই ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক। অপরজন আব্দুল গাফফার। তিনি উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়ন বিএনপির একাংশের সাধারণ সম্পাদক ও অত্র ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার। তার বাড়ি উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামে। দলীয় পদ ব্যবহার করে এবার এই মেম্বার কর্মী সভার সঞ্চালক ছিলেন।
আজ বৃহস্পতিবার ৩১ অক্টোবর বিকেলে পাঁচন্দর ইউপির প্রাণপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পাঁচন্দর ইউনিয়ন বিএনপির একাংশের কর্মীসভার আয়োজন করা হয়। উক্ত সভা সঞ্চালনায় ব্যানারে নাম দেয়া হয়েছে ডিগবাজি দেয়া পাঁচন্দর ইউনিয়ন বিএনপির একাংশের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গাফফার মেম্বার। আর এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন- মোজাম্মেল চেয়ারম্যান।
এই সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ও সাবেক সামরিক সচিব মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) শরিফ উদ্দিন। এতে প্রধান বক্তা ছিলেন- জেলা বিএপির অন্যতম সদস্য ও তানোর পৌরসভার সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিজান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- পাঁচন্দর ইউনিয়ন বিএনপির একাংশের সভাপতি ও অত্র ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মোমিনুল হক মমিন, পাঁচন্দর ইউনিয়ন বিএনপির একাংশের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক মফিজ উদ্দিন সরকারসহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। তবে, ওই কর্মীসভা শুরুর আগে তানোর সদরে অবস্থিত বিএনপির পার্টি অফিসে সাবেক মেয়র মিজানের নেতৃত্বে ওই ইউনিয়ন বিএনপির দুটি পক্ষের মধ্যে অন্ত:দ্বন্দ্বের নিরসন বা ফাইসালা করা হয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২৩ সালের ১৯ অক্টোবর সকালে ডিপ অপারেটরদের সাথে সাবেক এমপি ফারুক চৌধুরীর মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় সরনজাই ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক কাগজের মালা পরে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। কিন্তু যোগদানের বিষয়টি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার বেশ কয়েক দিন পরে চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক যোগদানের বিষয়টি অস্বীকার করে সাংবাদিক সম্মেলন করেন।
পরে চলতি ২০২৪ সালের জানুয়ারী মাসের শেষ সপ্তার দিকে উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এক সংবর্ধণা অনুষ্ঠানে সাবেক এমপি ফারুক চৌধুরীর হাত ধরে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন আব্দুল গাফ্ফার মেম্বার। তিনি পাঁচন্দর ইউনিয়ন বিএনপির একাংশের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতিতে খুব পরিচিত মুখ তিনি। আওয়ামী লীগে যোগদানের পর হাসিনা সরকারের এমপিসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের সাথে তার বিভিন্ন ছবি এখনো ভাসছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সেই সুবাদে এমপি ফারুক চৌধুরীর বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পেয়ে হয়েছেন প্রভাবশালী ও সম্পদের মালিক। আর গত ৫ আগস্টে পটপরিবর্তনের সাথে সাথে অন্য আরও অনেকের মতো বদলে গেছেন তিনি। রাতারাতি হয়ে গেছেন বিএনপি। এসুবাদে বিএনপির বিভিন্ন প্রোগ্রামে এখন সরব তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাঁচন্দর ইউনিয়ন বিএনপির একাংশের বেশ কয়েকজন নেতা জানান, গাফফার মেম্বার ও তার পরিবার আজীবন বিএনপি করেছে। এটা আমাদের এলাকার সবাই জানে। আর গাফফার আমাদের এলাকায় ভেজাইল্যা গাফফার নামে পরিচিত। তিনি একজন চিহ্নিত আওয়ামী লীগ নেতা। হাসিনা সরকারের আমলে তিনি এলাকায় আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে চলেছেন। এনিয়ে গাফফার মেম্বারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়ে এড়িয়ে গেছেন। তবে, এব্যাপারে চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হকের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও রিসিভ হয়নি। রা/অ