শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:৪৫ am
নিজস্ব প্রতিবেদক, তানোর :
রাজশাহীর তানোর সদরে অবস্থিত মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়ে দলীয় দাপটে প্রধান শিক্ষক পদ দখল করেন মাইনুল ইসলাম সেলিম। তিনি এরআগে মোহর উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক ছিলেন। দলবাজি করে এই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদ দখল করেন তিনি। বর্তমানে এই দূর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিক অভিযোগ করা হলেও বহাল তবিয়তে তিনি। এঅবস্থায় তার খুঁটির জোর কোথায় এমন প্রশ্ন শিক্ষকসহ সর্বমহলে।
এবার সেলিমের বিরুদ্ধে ভূয়া সনদ ও তথ্য গোপন করে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন ওই তানোর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের আইসিটি শিক্ষক মুঞ্জুর রহমান। চলতি মাসের ১৫ অক্টোবর মঙ্গলবার মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এর অনুলিপি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ছাড়াও যুগ্ম সচিব মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এর আগে প্রায় ৭৫ লাখ টাকার অনিয়ম-দূর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করা হলেও রহস্য জনক কারণে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে দাবি করেন অভিযোগকারী। তার বিরুদ্ধে একের পর এক অনিয়ম-দূর্নীতি খবর প্রকাশ হলেও বহাল তবিয়তে রয়েছেন মাইনুল ইসলাম সেলিম।
অভিযোগে যা বলা হয়েছে তা তুলে ধরা হল, তানোর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় তানোর রাজশাহী এই মর্মে অভিযোগ করিতেছি যে, মন্ত্রনালয়ের সুস্পষ্ট নীতিমালা থাকা সত্ত্বেও তানোর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক মো. মাইনুল ইসলাম প্রথমে সহকারী শিক্ষক হিসেবে মোহর উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। পরবর্তীতে মাইনুল ইসলাম সেলিম তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়ে সাবেক এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী সান্নিধ্যে ও স্কুলের সাবেক সভাপতি লুৎফর হায়দার রশিদ ময়নার সহযোগীতায় ২০১০ সালে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন তানোর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে। কাম্য যোগ্যতা উল্লেখ থাকা সত্বেও যোগ্যতা বিহীন একজন শিক্ষককে কিভাবে তানোর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়। সভাপতি অন্ধকারে থেকে শুধু মাত্র দলীয় বিবেচনায় যোগ্যতা বিহীন সেলিমকে নিয়োগ প্রদান করেন।
শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক হতে হলে নুন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএবিএড হতে হবে। শিক্ষাজীবনে একের অধিক তৃতীয় বিভাগ কোনো ক্রমেই গ্রহন যোগ্য নয়। তাছাড়া বিএড সার্টিফিকেট হতে হবে কোন সরকারী টিচার্স ট্রেনিং কলেজ/কোন পাবলিক বিশ্বিবিদ্যালয় হইতে সার্টিফিকেট গ্রহনকারী হতে হবে। ইহা বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ অনুযায়ী অনুমোদিত।
কিন্তু সেলিমের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসিতে দ্বিতীয় বিভাগ-১৯৮৬ সাল। এইচএসসিতে তৃতীয় বিভাগ-১৯৮৮ সাল। আর স্নাতক-১৯৯৪ সালে তৃতীয় বিভাগ। তাছাড়া বিএড ২০০৮ সালে ৩ পয়েন্ট শান্তা মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয় রাজশাহী ক্যাম্পাস হতে। শিক্ষা মন্ত্রনলয়ের নির্দেশ উপেক্ষা করে কিভাবে উচ্চতর স্কেল প্রাপ্ত হয়ে চাকুরি করে আসছেন তিনি। ইহা বোধ গম্যের বাহিরে।
যেহেতু জনবল কাঠামো অনুযায়ী নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছেন ইহা সম্পূর্ণ বে-আইনী ও নীতি পরিপন্থি। আমার এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে সত্যতা যাচাই পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষণ করেছেন অভিযোগকারী মুঞ্জুর। উল্লেখ্য যে, উক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের প্রায় ৭৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগকারী আইসিটি শিক্ষক মুঞ্জুর রহমান বলেন, একজন প্রধান শিক্ষককে শুধু মাত্র রাজনৈতিক বিবেচনায় নীতিমালা লঙ্ঘন করে নিয়োগ দেয়া হয়। সেলিম প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে প্রায় ৭৫ লাখ টাকা অনিয়ম ও দূর্নীত করেছে। শিক্ষা দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেয়ার পর কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তৃতীয় বিভাগ ও শান্তা মারিয়াম থেকে বিএড সার্টিফিকেট দিয়ে কিভাবে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পান। নিয়োগ হয়েছে রাজনৈতিক নেতার খায়েশ পুরুন করার জন্য। তার নিয়োগের কারণেই মডেল পাইলট স্কুল সরকারি না হয়ে মুন্ডুমালা উচ্চ বিদ্যালয়কে সরকারি করণ করা হয়। যা তদন্ত করলেই বেরিয়ে পড়বে।
এব্যাপারে প্রধান শিক্ষক মাইনুল ইসলাম সেলিমের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও বন্ধ পাওয়া যায়। তবে, এবিষয়ে তানোর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সিদ্দিকুর রহমানের মোবাইলে একাধিক বার ফোন দেয়া হলে তিনিও ফোন রিসিভ করেননি। রা/অ