শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৬:১৫ pm

সংবাদ শিরোনাম ::
দুর্গাপুরে হোজা নদী পুন:খনন ও দখলমুক্ত দাবিতে ইউএনও’কে স্মারকলিপি রাজশাহীতে সমন্বয়ক পেটানোর ব্যাখ্যা দিল মহানগর ছাত্রদল আঘাতের দাগে সম্পর্কের রূপান্তর ! রাজু আহমেদ তানোরে শিক্ষক সমিতিকে নিজ পকেটে রাখতে মরিয়া বিএনপি নেতা মিজান অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে চান জেড আই খান পান্না নগরীতে বিএনপি নেতাকে ছুরিকাঘাত আগামী ২৯ নভেম্বর খুলছে রাজশাহী সুগার মিল জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের স্মরণে স্মরণসভা রাজশাহীতে যুবলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ১১ বাগমারা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবু তালেবের ইন্তেকাল তানোরে মসজিদের এসি অফিসার্স ক্লাবে, ইমামের অর্থ আত্নসাৎ প্রমান পেয়েছে তদন্ত কমিটি সাংগঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তানোরে বিএনপির কর্মীসভা নগরীতে ছাত্রলীগ নেতাসহ বিভিন্ন অপরাধে ৮ জন গ্রেপ্তার লীজকৃত পুকুর দখল, মালিককে বুঝিয়ে দিতে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ পুঠিয়ায় ভুয়া ডাক্তার ধরে প্রাননাশের হুমকির মুখে সাংবাদিকরা রাজশাহী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে দুর্নীতির প্রতিবাদে মানববন্ধন তানোর থানায় দালালের দৌরাত্ন্য বৃদ্ধি, অসহায় মানুষ দুর্গাপুরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে আটক ৩ জনের কারাদণ্ড গ্রাহকের ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ, বন্ধু মিতালীর চেয়ারম্যানসহ আটক ৪ রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে আ.লীগকে দূরে রাখতে ছাত্রনেতাদের চাপ
রাজশাহীতে জীবিকার সংকটে শ্রমজীবী মানুষ

রাজশাহীতে জীবিকার সংকটে শ্রমজীবী মানুষ

ডেস্ক রির্পোট : রাজশাহীতে সর্বাত্মক লকডাউনে সংকুচিত হয়েছে শ্রমজীবী মানুষের কাজের সুযোগ। এতে জীবিকার সংকটে পড়েছেন এ অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষ। রিকশাচালক, পরিবহণ শ্রমিক, দিনমজুর, কৃষি শ্রমিক, হোটেল শ্রমিক, সাধারণ দোকানদার এবং ফুটপাতের ছোট ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার খেটে খাওয়া মানুষ জানান, কাজ না থাকায় এসব পেশার মানুষের হাতে টাকা নেই। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন তারা। অনেকেই তিনবেলা খেতে পাচ্ছেন না।

জরুরি প্রয়োজনেও নিতে পারছেন না চিকিৎসা সেবা। এছাড়া অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় প্রয়োজনও মেটাতে পারছেন না। অভাব আর অনটনে পার করছেন দুর্বিষহ জীবন।

শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান চত্বরের পার্শ্ববর্তী জেলা স্টেডিয়াম, তালাইমারি এবং কোর্টস্টেশনসহ কয়েকটি পয়েন্টে জেলার নয়টি উপজেলা থেকে প্রতিদিন ২০ থেকে ২২ হাজার দিনমজুর রাজশাহী মহানগরীতে কাজের জন্য আসেন। এসব দিনমজুর নির্মাণ ও গৃহস্থালিসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করেন। মহানগরীতে বসবাসরতরা দৈনিক পারিশ্রমিকের ভিত্তিতে তাদের কাজ করান।

কিন্তু বর্তমানে স্বাস্থ্য ঝুঁকির ভয়ে তাদের কাজে নিচ্ছেন না অনেকে। এসব দিনমজুর সকাল ৭টার মধ্যে মহানগরীর মোড়গুলোতে সমবেত হচ্ছেন। তবে এদের মধ্যে শতকরা সর্বোচ্চ ১০ ভাগ কাজ পাচ্ছেন। বাকি ৯০ ভাগ কোদাল, ডালি, দাও নিয়ে কয়েক ঘণ্টা বসে থেকে ফিরে যাচ্ছেন।

মঙ্গলবার সকালে শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান চত্বরে কাজের জন্য আসেন পবা উপজেলার হরিয়ান এলাকার হাসেম আলী। তিনি বলেন, ১০ দিনে মাত্র একদিন কাজ পেয়েছি। আমার পরিবারের সদস্য সংখ্যা বেশি। এর মধ্যে বৃদ্ধ মা খুব অসুস্থ। মায়ের জন্য প্রতিদিন ওষুধ কিনতে হয়। এছাড়াও রয়েছে খাবারের খরচ। খেয়ে না খেয়ে কোনো রকমে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বেঁচে আছি।

জেলা স্টেডিয়াম এলাকায় কাজের জন্য অপেক্ষা করছিলেন দুর্গাপুর উপজেলা সদরের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম। কিন্তু তিনি কাজ পাননি। সকাল ১০টার দিকে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, সাইকেল নিয়ে প্রায় ৩০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে রাজশাহী মহানগরীতে এসেছি। টানা সাত দিন কাজ পাইনি। বাড়ির লোকজন ঠিকভাবে খেতে পাচ্ছে না। ছেলেমেয়েগুলো কান্নাকাটি করছে। চরম অসহায় অবস্থার মধ্যে দিন পার করছি।

রাজশাহী মহানগরীতে স্বাভাবিক অবস্থায় গড়ে প্রতিদিন ২৮ হাজার অটোরিকশা চলাচল করে। এর সঙ্গে রয়েছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাও। কিন্তু কঠোর লকডাউনের কারণে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন রাস্তায় এসব যানবাহন নামতে দিচ্ছেন না। ফলে বিপুলসংখ্যক অটোরিকশাচালক বেকার হয়ে পড়েছেন।

গোদাগাড়ী উপজেলার ভাটোপাড়া এলাকা থেকে প্রতিদিন রাজশাহী মহানগরীতে অটোরিকশা চালাতে আসেন আরসাদ আলী। কিন্তু ৫ এপ্রিল থেকে কঠোর লকডাউনের কারণে তিনি অটোরিকশা চালাতে পারেননি। তিনি বলেন, আমি ১৫ দিন কর্মহীন। এক টাকা রোজগার নেই। কিন্তু বাড়িতে বউ-বাচ্চা মিলে ৫ জন। একবেলা খেলে আরেক বেলা আমাদের আর খাদ্য জুটছে না।

রাজশাহীতে বাস ও ট্রাকসহ বিভিন্ন পরিবহণে প্রায় ৩৫ হাজার শ্রমিক কর্মরত। ১৪ এপ্রিল কঠোর লকডাউন ঘোষণার পর থেকে পরিবহণ শ্রমিকদেরও কাজ নেই। তারাও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চরম অসহায়ত্বের মধ্যে দিন পার করছেন। রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন চৌধুরী বলেন, এক বছর থেকে করোনাকালীন সময়ে আমরা বড় দুঃসময় পার করছি। ইউনিয়নের তহবিল থেকে শ্রমিকদের সহযোগিতা করা হয়েছে। কিন্তু এখন তহবিল শূন্য। শ্রমিকদের বর্তমান দুর্দশা কীভাবে দূর করব, সেটি নিয়ে চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছি।

এদিকে রাজশাহীর হোটেল শ্রমিকরাও ভালো নেই। করোনার পাশাপাশি রোজার কারণে মহানগরীর বেশির ভাগ হোটেলেই স্বাস্থ্যঝুঁকির ভয়ে মানুষ যাচ্ছেন না। মহানগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকার তৃপ্তি হোটেলে কাজ করেন রহমত আলী। তিনি বলেন, আগে হোটেলে ১০ ঘণ্টা কাজ করলে ৫০০ টাকা পেতাম। এখন বড় জোর চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা কাজ হয়। এ কারণে মালিক পারিশ্রমিক দেন ২০০ টাকা। এ টাকা দিয়ে সংসার চলে না। রহমত আলীর মতো মহানগরীতে প্রায় ২০ হাজার হোটেল শ্রমিকের একই অবস্থা।

এছাড়া সমস্যায় রয়েছেন ফুটপাতের ছোট ব্যবসায়ী এবং দোকান মালিকরা। মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ১০ হাজার মানুষ এ পেশার সঙ্গে যুক্ত আছেন। মহানগরীর প্রাণ কেন্দ্র সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে রিকশাভ্যানে পোশাক বিক্রি করেন শফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, লকডাউনের কারণে পুলিশ ফুটপাতে বসতে দিচ্ছে না। আমার সংসার বড়। আর কয়েকদিন এভাবে চললে আমরা না খেয়ে মারা যাব। এর আগে করোনার সময় চাল ও ডালসহ খাদ্য সহায়তা পেয়েছি। এবার তাও পাচ্ছি না।

সার্বিক বিষয়ে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল বলেন, এবার খাদ্য সহায়তা নেই। তবে সরকারের পক্ষ থেকে চলতি মাসে ভিজিএফ এবং জিআর বাবদ ৯ কোটি ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এ টাকা ইতোমধ্যেই রাজশাহী সিটি করপোরেশন, পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদকে দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো অতিদ্রুত এ টাকা উপকারভোগীদের মধ্যে বিতরণ করবে। সূত্র : যুগান্তর। আজকের তানোর

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.