শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৮:৫৫ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক, তানোর :
রাজশাহী তানোরে বেসরকারি মাধ্যমিক (স্কুল ও মাদ্রাসা) শিক্ষকদের চাকুরি বৈষম্য দূরীকরণে মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ, জাতীয়করণের পূর্ব পর্যন্ত শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন পদে সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের পদায়ন বন্ধ রাখা ও শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠনের লক্ষ্যে মানববন্ধন করেছে উপজেলা মাধ্যমিক (স্কুল ও মাদ্রাসা) শিক্ষকবৃন্দ।
মঙ্গলবার সকাল ১১ ঘটিকায় তানোর থানার মোড়ে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন উপজেলার বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষকরা।
তানোর আল মাদ্রাসাতুল ইসলাহীয়ার সুপার মো. মকসেদ আলীর সঞ্চালনায় মানববন্ধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, তানোর পৌরসভা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রবিউল ইসলাম, কালীগঞ্জহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান, তানোর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান, তানোর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. বকুল হোসেন, চাঁদপুর দ্বিতীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু হেনা, সহকারী শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমান, তানোর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম, সহকারী শিক্ষক মুনজুর রহমান, মুন্ডুমালা কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. আমির উদ্দিন, চিনাশো আলিম মাদ্রাসার সুপার হারুনর রশীদ ছাঐড় নিন্ম মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুলতান মাহমুদ ও জিওল দারুসচ্ছুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার সুপার আসলাম মিঞা প্রমূখ।
মানববন্ধনে মাধ্যমিক শিক্ষকবৃন্দের সদস্যরা শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে তাদের দাবিগুলো তুলে ধরেন।
দাবিগুলো হলো :
মাধ্যমিক স্তরের প্রতিষ্ঠানের ৯৭% বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানগুলি জাতীয়করণ করা অত্যন্ত জরুরি। একই শিক্ষাগত যোগ্যতা, একই বই পড়ানো, একই বোর্ডের আওতায় পরীক্ষা। অথচ সরকারি ও বেসরকারি নাম দিয়ে আর্থিক ও সামাজিক মর্যাদার মধ্যে বিরাট বৈষম্য তৈরী করে রাখা হয়েছে যা শিক্ষার গুনগত মান উন্নয়নে প্রধান অন্তরায়। শিক্ষার সকল ষ্টকহোল্ডারদের প্রাণের দাবি মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ।
শিক্ষা বিভাগের দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো একাডেমিক ও প্রশাসনিক। শিক্ষকরা একাডেমিক কাজে দক্ষ। তাদের সকল প্রশিক্ষণ পেড্যাগোজি কেন্দ্রিক। ক্লাস রুমের পঠন-পাঠনে তারা দক্ষ। অন্যদিকে, শিক্ষা প্রশাসনে দীর্ঘ ৩১ বছরে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের সকল প্রশিক্ষণ প্রশাসনিক। শিক্ষকতা ও প্রশাসন ভিন্ন চরিত্রের, ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের, কাজের ধরন ভিন্ন, চর্চা বা অনুশীলন ভিন্ন। শিক্ষকরা প্রশাসনে অনভিজ্ঞ, জেলা শিক্ষা অফিসার ও উপ-পরিচালক পদে তাঁদের পদায়ন করা হলে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক শূন্যতা যেমন সৃষ্টি হয় তেমনি ক্লাস রুম শিক্ষকতায় অভিজ্ঞ একজন শিক্ষককে উল্লেখিত পদ সমূহে পদায়ন করা হলে বিভিন্ন বিধি বিধান সম্পর্কে পূর্ব জ্ঞান না থাকার কারণে অফিসের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন নিন্মপদের লোকজনের পরামর্শ দ্বারাই পরিচালিত হতে হয়।
প্রশাসনিক দৃঢ় সিদ্ধান্ত তাঁরা গ্রহণ করতে পারেন না। এছাড়াও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পদে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকগণকে পদায়ন করা হলে প্রশাসনিক অনভিজ্ঞ সিনিয়র শিক্ষকের অধীনে বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার প্রধানগণকে কাজ করতে হবে। এতে শিক্ষাঙ্গনে চরম অসন্তোষ সৃষ্টি হতে পারে।
সে কারণে উপজেলা, জেলা, অঞ্চল ও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শাখায় ৩১ বছর শিক্ষা প্রশাসনে কাজের দক্ষতা সম্পন্ন ৬ষ্ঠ গ্রেড অফিসার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের পদোন্নতি ও পদায়নের জোর দাবি করছি। শিক্ষার মাঠ প্রশাসনে কাজ করা ১০-২২ বছরের দক্ষ, অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষিত ঝঊঝওচ কর্মসূচির ১১৮৭টি পদ জনবলসহ রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের অসমাপ্ত কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।
নানা মাত্রিক সমস্যায় মাধ্যমিক শিক্ষা জর্জরিত। স্কুল, মাদরাসা, সরকারি, বেসরকারি এ রকম নানা রকম প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এদের মধ্যে বৈষম্য প্রকট। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করতে একটি শিক্ষা সংস্কার কমিশন করার জোর দাবি জানানো হয়। মানববন্ধন শেষে মাধ্যমিক শিক্ষক পরিবারের সদস্যরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দায়িত্বরত এসিল্যান্ড এর কাছে স্মারকলিপি পেশ করা হয়। রা/অ