মঙ্গবার, ১৭ েপ্টেম্বর ২০২৪, সময় : ০১:০৭ am

সংবাদ শিরোনাম ::
বৈরী আবহাওয়ার অজুহাতে বিদ্যুতের লোডশেডিং, অসহায় মানুষ বাগমারায় সাবেক এমপি এনামুল হক গ্রেফতার বাগমারায় মোমবাতির আগুনে ব্যবসায়ীর দোকান ও বসতবাড়ি পুড়ে ছাঁই মোহনপুরে চুরির মালামাল উদ্ধার, ১২ ঘন্টা পর চোর আটক মোহনপুরে ঈদে মিলাদুননবী (সা:) পালিত রাজশাহীতে ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপিত বাগমারার সাবেক এমপি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল ঢাকায় গ্রেপ্তার নগরীতে আদিবাসী নারীকে গলাকেটে হত্যা ধোবাউড়া সীমান্তে সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবু-শ্যামল দত্তসহ আটক ৪ মহানবি হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাতের দিন আজ বাগমারায় বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করায় ছেলের আত্নহত্যা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যোগদান করতে পারেননি রাজশাহী কলেজের নতুন অধ্যক্ষ নির্দিষ্ট সময়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে হবে : অধ্যাপক মজিবুর মোহনপুরে দুর্বৃত্তদের আগুনে মুদির দোকান পুড়ে ছাঁই এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি আরেক ফ্যাসিস্টকে জায়গা দিতে নয় : সারজিস মোহনপুরে শিক্ষককে লাঞ্ছিত করে স্কুলের সিসি ক্যামেরাসহ জিনিসপত্র ভাংচুর বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর আদর্শ জীবন : লেখক, দুধরচকী চেয়ারম্যান-ইউএনও-প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে দূর্নীতির অভিযোগ রামেক হাসপাতালে একসঙ্গে ৫ সন্তানের জন্ম দিলেন এক মা রাবির ছাত্রলীগ নেতা পঙ্গু মাসুদ হত্যা ঘটনায় থানায় মামলা
রাকাবে চুক্তিভিত্তিক ৩ দফায় নিয়োগ পাওয়া চেয়ারম্যান এখানো বহাল

রাকাবে চুক্তিভিত্তিক ৩ দফায় নিয়োগ পাওয়া চেয়ারম্যান এখানো বহাল

এম এম মামুন :
২০২০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫ বছর রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন তিনি। টানা তিন বার তাঁকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয় বিগত সরকার। তাঁর সময়কালে রাকাবে ব্যাপক হারে নিয়োগ বাণিজ্য থেকে শুরু করে, পদন্নোতি বাণিজ্য, ঋণ বাণিজ্য বদলি বাণিজ্যসহ ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির খবর বেরিয়ে আসতে থাকে। এসব নিয়ে কালের কণ্ঠসহ একাধিক গণমাধ্যমেও এর আগে খবরও প্রকাশ হয়েছে। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি ব্যাংকটিকে একিভূতকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিগত সরকার। কিন্তু শেষ দিকে এসে সেটি থেমে যায়। দেশজুড়ে বিগত সরকারের আমলে চুক্তিভিত্তি নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের নিয়োগ বাতিলের আদেশ হলেও এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন রাকাব চেয়ারম্যান রউছউল আলম মণ্ডল। এরই মধ্যে তিনি গত ২০ আগস্ট রাকাবের ৫৮৪ তম বোর্ড সভা সম্পন্ন হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে। এসব নিয়ে শুরু হয়েছে ব্যাংকটিতে অস্থিরতা।

রাকাব সূত্র মতে, ২০২০ সালে রাকাবের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে প্রথম চুক্তিভিত্তক নিয়োগ দেওয়া হয় সাবেক সচিব রইছউল আলম মণ্ডলকে। শেষবার চলতি বছরের ২৮ ফ্রেব্রুয়ারি তৃতীয় বারের মতো চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু তিনি রাজশাহীতে থাকেন না। ঢাকায় থাকেন। মাঝে মাঝে রাকাবের প্রধান কার্যালয় রাজশাহীর নওদাপাড়াতে আসেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকে (রাকাব) ব্যাংকটিতে চেয়ারম্যানই সকল কলকাঠি নাড়েন। এই সুযোগে চেয়ারম্যান গোটা প্রতিষ্ঠানে নানা দুর্নীতি ও অনিয়ম করে নিজের পকেট ভারী করছেন। নিয়োগ, বদলি ও গোপন পদোন্নতির মাধ্যমে অবৈধ অর্থ উপার্জন এবং একটি সিন্ডিকেটের মদদদাতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। সাবেক সচিব রইছউল আলম মন্ডল তৃতীয় মেয়াদে রাকাবে নিয়োগ পাওয়ার পর প্রধান কার্যালয়ে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেন। এই চক্রটি ব্যাংকে নিয়োগ (অরনেট ও এসইসিপি প্রকল্প) বাণিজ্য, বদলী, পদোন্নতিতে বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়ে। ‘রাকাব অ্যাপস’ তৈরি করে ৫০ লাখেরও বেশি টাকা অনিয়ম করা হয় বলে অভিযোগ উঠে। আবার ওই অ্যাপস জালিয়াতি করেও গ্রাহকের হিসাব থেকে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে।

পাবনার ইশ্বরদী শাখার ব্যবস্থাপক ও দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা মাহিদুল, জয়পুরহাটের দোগাছি শাখার মেহেদী হাসান, নাটোরের সঞ্চয় কুমার, কুড়িগ্রামের রায়হান কবির এরইমধ্যে কোটি টাকা সরিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। দোগাছি শাখার মৃত ব্যক্তির হিসাব থেকে ২০ লাখ টাকাসহ প্রায় ১ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় জড়িত মেহেদী হাসানকে প্রত্যক্ষ সহায়তা করেন প্রধান কার্যালয়ের ডিজিএম আবুল কালাম, শওকত শহীদুল, মুকুল বর্ধন, হাবিবুর রহামান, ইকবাল হোসেন খানসহ আরো কয়েকজন কর্মকর্তা।

তবে ডিজিএম আবুল কালাম বলেন, এই ধরনের অভিযোগ ঠিক নয়। অ্যাপস করা হয়েছে নিয়মতান্ত্রিকভাবে। ভেন্ডরের মাধ্যমে। কোনো অনিয়মের সুযোগ নাই। গ্রাহকের টাকা কিছু খোয়া গেছে শাখা ভিত্তিক এবং গ্রাহকের সমস্যার কারণে। অ্যাপসের কোনো জটিলতা নাই।’
এদিকে সূত্র জানায়, নওগাঁর প্রসাদপুর শাখার জ্যোতি কোল্ড স্টোরেজ, নীলফামারীর অংকুর সিড ও হিমাগারসহ কয়েকটি প্রায় ৪৮৮ কোটি টাকা ঋণ দিয়ে ১৫০ কোটি টাকা আত্মসাত হয়েছে বলেও দুদকের তদন্তে উঠে আসে। রাকাবের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা ব্যবস্থাতেও রাকাবের নানা অনিয়মের চিত্র। চেয়ারম্যানের মদদে এর বাইরেও শত শত কোটি টাকা ঋণ দিয়ে ব্যাপক অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন ব্যাংকটির ওই চক্রটি।

সূত্র মতে, রাকাব ঢাকা শাখায় কর্মরতদের অধিকাংশই ৩ থেকে ১০ বছর পার হলেও চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে তা তাঁদের আর বদলি করা হয়নি। ব্যবস্থাপক মোখলেছুর রহমান কর্মজীবনে কখনোই মাঠে কাজ না করেও (শর্ত ভঙ্গ করে) সহকারী ব্যবস্থাপক হয়ে ঢাকা শাখার ব্যবস্থাপক পদে আসিন হন। মাহমুদ হোসেন ও শফিকুল ইসলাম টানা ১০ বছর ঢাকা শাখায় কর্মরত থেকে সম্প্রতি বদলি করা হলে হলেও চেয়ারম্যান পুনরায় শফিকুল ইসলামকে ঢাকা শাখায় পদায়ন করেন।

রাকাব সূত্র আরও জানায়, পদন্নোতিতেও ব্যাপক বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়ে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। ৩ জন সিনিয়র জিএম থাকা সত্ত্বেও সম্মান শ্রেণিতে তৃতীয় বিভাগ পাওয়া মো. শওকত শহীদুল ইসলামকে জিএম প্রশাসন (চলতি দায়িত্ব) পদে পদায়ন করা হয়। সাধারণত গুরুত্বপূর্ণ এ পদে সিনিয়র জিএম, জিএম প্রশাসনের দায়িত্ব পেয়ে থাকেন।

রাকাবের নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা জানান, নানা অপকর্ম রাকাব এখন নিমজ্জিত। বর্তমান চেয়ারম্যান নিয়োগ পাওয়ার থেকেই ব্যাংকটিতে সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতি বিরাজমান। আর সেসব অপকর্ম বৈধ করতে ব্যাংকটির ৫৮৪ তম বোর্ড শাখা আহ্বান করা হয়েছে। এ নিয়ে ব্যাংকটির সচিব সানা উল্লাহ স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে। যদিও এখনো ঠিক করা হয়নি ওই বোর্ড সভার কার্যবিবরণী।

এসব বিষয়ে রাকাব চেয়ারম্যান রইছউল আলম মন্ডলের সাথে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভি না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। রা/অ

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.