রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১২:৪৫ am
নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহী মহানগরের সাগরপাড়া কল্পনা মোড়ে অবস্থিত লবঙ্গ ফাস্টফুড ও চাইনিজ। এই প্রতিষ্ঠানের সামনে প্রতি রাতেই ফ্রি খাওয়ানো হতো এক থেকে দেড়শো সুবিধা বঞ্চিত অসহায় মানুষকে। ফলে লবঙ্গ চাইনিজ পরিচিতি পায় গরীবের মেহমান খানা হিসেবে। গরীবের সেই মেহমান খানা এখন শুধুই ধ্বংসস্তুপ।
রাজশাহীর বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক আজিজুল আলাম বেন্টুর এই প্রতিষ্ঠানে গত ৫ আগস্ট বিকেলে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। হামলার পর অগ্নিসংযোগ করে চালানো হয় লুটপাট। চেয়ার, টেবিল, প্লট, গ্লাস, হাড়ি-পাতিল ও বাসনপত্রসহ সব কিছু লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়। লুট করা হয়েছে গোডাউনও। খুলে নিয়ে যাওয়া হয় এসি, দরজা ও জানালার গ্রীল থেকে শুরু করে ছাদের টিন পর্যন্ত। কিছুই অবশিষ্ঠ নেই এই প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়াও বোলডোজার নিয়ে এসে ভাঙার চেষ্টা করা হয়েছে লবঙ্গ ভবন।
বাদ যায়নি সরকার নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল পদ্মাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকম -এর কার্যালয়। লবঙ্গ ফাস্টফুড ও চাইনিজের সাথে থাকা আজিজুল আলাম বেন্টুর মালিকানাধীন এই মিডিয়া হাউজটিও ধ্বংস করে দিয়েছে দৃর্বৃত্তরা। লুট করে নিয়ে গেছে এসি, কম্পিউটার, চেয়ার, টেবিল থেকে শুরু করে সব কিছু। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে অফিসের যাবতীয় ফাইলপত্র।
অপরদিকে, মানবতার ফেরিওয়ালা খ্যাত আজিজুল আলাম বেন্টুর ব্যবসার প্রধান কার্যালয় ছিল নগরীর কোট স্টেশন মোড়ে। সেখানে রয়েছে তার হাতে গড়া সামাজিক সংগঠন আমরা নতুন প্রজন্মের কার্যালয়ও। এক যুগ ধরে এখানে প্রতি বছর রমজান মাসজুড়ে আয়োজন থাকতো সমাজের সুবিধা বঞ্চিত অসহায় ও পথচারি রোজাদারদের জন্য ইফতার আয়োজন। সেই প্রতিষ্ঠানটিও রক্ষা পায়নি দুর্বৃত্তদের হাত থেকে। ভাংচুর, লুটপাটের পর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়াসহ ধ্বংস করা হয়েছে পুরো অফিস। সেখানেও আগুনে পুড়ে গেছে ব্যবসার গুরুত্বপূর্ন দলিলসহ ব্যবসায়ীক কাগজপত্র। এছাড়াও হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয় আজিজুল আলম বেন্টুর ছোট ভাইয়ের দোকানেও।
দৃর্বৃত্তদের কালো থাবা থেকে রক্ষা পায়নি কয়েক মাস আগে গড়ে তোলা নগরীর মেল্লাপাড়া এলাকায় অবস্থিত সর্বাধুনিক লবঙ্গ কনভেনশন। সেটিও এখন শুধুই ধংসস্তুপ। ভাংচুর, লুটপাটের পর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে নতুন এই প্রতিষ্ঠানটি। এসি, টেবিল-চেয়ার থেকে শুরু করে সব কিছু লুট করা হয়েছে এখান থেকে। এমন কি ওয়াস রুমের বেসিং, টয়লেটের প্যান ও কমড পর্যন্ত হাতুড়ি দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। খুলে নিয়ে যাওয়া হয়ে দেওয়ালের বেশকিছু ইটও।
এছাড়াও লবঙ্গ কনভেনশনের পাশে ছিল শিশু পার্কের আদলে গড়ে তোলা কিড্স জোন। সেখানকারও সব কিছু লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এতেও ক্ষান্ত হয়নি দুর্বৃত্তরা। লবঙ্গ কনভেনশন সেন্টারের জায়গা দখল করতে প্রথমে দেওয়ালে লেখে দেওয়া হয় ছাত্র শিবিরের কাযালয়। এর পর টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে ওই সংগঠনের সাইন বোর্ড। সাইন বোর্ডে লেখা রয়েছে নির্ধারিত স্থান, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, কাশিয়াডাঙ্গা থানা।
দৃর্বৃত্তায়নের কালো থাবা থেকে রক্ষা পায়নি বিশিষ্ঠ সমাজসেবক আজিজুল আলম বেন্টুর যানবাহন গুলোও। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তার দুইটি প্রাইভেট কার ও নয়টি ড্রামট্রাক। পুড়িয়ে দেওয়া ছাড়াও প্রাইভেট কারের ইঞ্চি ও চাকাও খুলে নিয়ে গিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী আজিজুল আলম বেন্টুর ম্যানেজার হাসিবুর রহমান বলেন, আমাদের গাড়িগুলোসহ সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। অবশিষ্ট কিছুই নেই। সব মিলে ১৩ থেকে ১৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়াও বেকার হয়ে পড়েছে দুই শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারি। লুট হওয়া মালামাল উদ্ধারে সেনাবাহিনীসহ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি। রা/অ