রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৪:৫২ am
নিজস্ব প্রতিবেদক, তানোর :
রাজশাহীর তানোরে সরকারি খাল দখল করে ভরাট ও গাছ কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার পাঁচন্দর ইউপির মোহনপুর মৌজায় ঘটেছে এমন ঘটনা। এ ঘটনায় মোহনপুর গ্রামের মৃত মালাবক্সের পুত্র জালাল উদ্দিন, মৃত ইয়াকুবের পুত্র ইমারত আলী, গুড়ইল গ্রামের মৃত তজীব মৃধার পুত্র আব্দুল মালেক, মুসারুল ও আব্দুস সাত্তার বাদি হয়ে গুড়ইল গ্রামের আজিজের পুত্র আব্দুল্লাহিল কাফিকে প্রধান অভিযুক্ত করে ৬ জনের নামে উপজেলা নির্বাহীর দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগের অনুলিপি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) দপ্তর দাখিল করা হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে সোমবার উভয়পক্ষকে নোটিশের মাধ্যমে ইউএনওর দপ্তরে শুনানির জন্য ডাকা হয়। তবে, সরেজমিনে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন ইউএনও বলে জানান কাফি। খালটি ভরাট হলে বর্ষা মৌসুমে এক থেকে দেড় হাজার জমি জলাবদ্ধতায় পড়বে। ফলে দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান এলাকার কৃষকরা।
দখলদার আব্দুল্লাহিল কাফি বলেন, জায়গাটি আমরা আমমুক্তা দলিল করেছি। যারা অভিযোগ করেছেন তারা ওই জায়গা থেকে প্রায় ২০টির মত মেহগনি ও ১৫/২০টির মত তাল, আম ও জাম গাছ কর্তন করেছেন। আমরা বাঁধা দিলে তারা বাচার জন্য আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। সোমবার শুনানির দিন ধার্য্য ছিল। কিন্তু ইউএনও স্যার সার্ভেয়ারকে সরেজমিনে তদন্ত করতে বলেন। তদন্তের পর পুনরায় দিন ধার্য্য করবেন। ড্রেজার মেশিন দিয়ে খাল ভরাট ও সরকারি খাস সম্পত্তি কিভাবে আমমুক্তা দলিল করা যায় জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে গেছেন।
অভিযোগকারী কৃষক ইমারত ও জালালসহ আরো অনেকে জানান, এক একর ৮৮ শতাংশ সরকারি খাল। খালের চারদিকে হাজার হাজার বিঘা কৃষকের জমি। বেশ কিছু দিন ধরে ট্যাক্টর দিয়ে চাষ করে উঁচু জায়গা থেকে মাটি এনে খালটি ভরাট করছে একাধিক জালিয়াতি মামলার আসামী আব্দুল্লাহিল কাফিসহ কয়েকজন। খালটি ভরাট হলে কয়েক হাজার বিঘা জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে এবং চাষাবাদ হবে না। শুধু জমি নয় কয়েক গ্রামের জনসাধারণ জলাবদ্ধতার মধ্যে পড়বে। আর সরকারি খাল কিভাবে ব্যক্তিগত হয় বুঝে আসে না। সামনে রোপা আমন মৌসুম। দ্রুত সময়ের মধ্যে খালটি দখল মুক্ত না হলে কয়েক হাজার বিঘা জমি অনাবাদি হয়ে পড়বে। সোমবার শুনানির দিন ছিল। কিন্তু ইউএনও স্যার সার্ভেয়ারকে সরেজমিনে তদন্ত করতে বলেন। তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে অবহিত করা হয়।
অভিযোগে উল্লেখ, খালটি দিয়ে প্রায় পাঁচ মৌজার বা গ্রামের পানি প্রবাহ হয়। বাদীরাসহ ওই এলাকার পাঁচ ছয়টি গ্রামের কৃষকরা খালটি দীর্ঘ প্রায় ১৪০ থেকে ১৫০ বছর ধরে দখল এবং বিভিন্ন প্রজাতির বনজ ও ফলজ গাছ লাগিয়ে পরিচর্যা করে থাকেন। কিন্তু সম্প্রতি গুড়ইল গ্রামের আজিজের পুত্র আব্দুল্লাহিল কাফি, হাবিবুর, কেতাবুল, রফিকুল ও বাবু রহমান এবং সাদেকুলরা দলীয় ও স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে খালসহ পার্শ্ববর্তী জমি দখলের জন্য ট্র্যাক্টর দ্বারা চাষ করে ড্রেজার মেশিন দিয়ে ভরাটের পরিকল্পনা করছে। কিন্তু খালটি ভরাট হয়ে গেলে চাষাবাদের জমির মারাত্মক ক্ষতি সাধন হবে।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সোমবার শুনানির দিন ছিল। কিন্তু সরেজমিনে তদন্তের জন্য সার্ভেয়ারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্তের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সরকারি খাল দখল করার কোন সুযোগ নেই। যারাই এ ধরণের কাজ করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানা ইউএনও। রা/অ