শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৬:০৬ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক :
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও বজ্রপাতে প্রাণহানি কমাতে ২০১৭ সালে সারা দেশে সড়কের দুই ধারে তালগাছের চারা রোপণের নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সেই আলোকে পরের বছর বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ), বন বিভাগ এবং ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর রাজশাহীর চারঘাটে প্রায় ২৬ হাজার তালগাছের চারা রোপণ কর্মসূচি গ্রহণ করে।
প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তারা বলছেন, ৫ বছর আগে সেখানে তালগাছের চারা লাগানো হয়েছে। কিন্তু স্থানীয়রা বলছেন, ওই সময় তারা কাউকে চারা লাগাতে দেখেননি এবং সেখানে কোনো তালগাছই নেই। প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে এত বিপুলসংখ্যক তালগাছ কোথায় গেল? অভিযোগ উঠেছে, চারা রোপণ না করে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
বিএমডিএ সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে বিএমডিএ রাজশাহী অঞ্চলে ১৪ লাখ তালগাছের চারা রোপণের কর্মসূচি গ্রহণ করে। প্রকল্পের আওতায় চারঘাটের জয়পুর বাজার থেকে তালতলা, হলিদাগাছি, দিঘলকান্দী, শলুয়া ও বালাদিয়াড় এলাকার ১০ কিলোমিটার জায়গায় ২৬ হাজার চারা রোপণের সদ্ধিান্ত হয়। প্রকল্পের জন্য ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
সম্প্রতি প্রকল্প এলাকা সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে বিএমডিএর একটি সাইনবোর্ড ছাড়া আর কিছুই নেই। আদৌ তালগাছের চারা রোপণ করা হয়েছিল কিনা তা নিয়েও সন্দেহ পোষণ করছেন স্থানীয় লোকজন। এলাকার কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৪ বছরে তারা কাউকে তালগাছের চারা লাগাতে দেখেননি। এলাকাবাসী জানান, প্রকল্প নেওয়া হলেও ঠিকাদার ও বিএমডিএর কর্মকর্তারা মিলে পুরো টাকা তুলে নিয়েছেন বলে তাদের ধারণা। কারণ এলাকায় তালের চারা রোপণ করতে তারা কাউকে দেখেননি।
চারঘাটের শলুয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জিয়াউল হক মাসুম বলেন, ২০১৮-১৯ সালের দিকে আমাদের এলাকায় কেউ তালবীজ কিংবা চারা রোপণ করেছিলেন বলে কখনও শুনিনি। এমনটা হলে এলাকার লোকজন আমাদের বলতেন। তাছাড়া ঠিকাদার ও কর্মকর্তারা প্রকল্প বাস্তবায়নে চেয়ারম্যানের সহযোগিতার জন্য পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে থাকেন। এমনটা আমি দায়িত্বে থাকাকালে দেখিনি। কীভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে জানি না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ বিএমডিএর চারঘাটের সহকারী প্রকৌশলী আল মামুন বলেন, চারঘাটের প্রস্তাবিত সড়কগুলোর দুই ধারের ১০ কিলোমিটার এলাকায় তালগাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। তালের চারা বেড়ে উঠতে সময় লাগে। এজন্য হয়তো এখনও দৃশ্যমান হয়নি। কিছুদিন পর দেখা যাবে।
চারঘাট উপজেলা বন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, এ প্রকল্পে কোনো অনিয়ম হয়নি। তালগাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। পাশাপাশি আমাদের নার্সারিতে চারা উৎপাদন করছি। সেগুলোও পর্যায়ক্রমে অন্য এলাকার সড়কের ধারে লাগানো হবে।
তবে প্রকল্পের পরিচালক ও বিএমডিএর নির্বাহী প্রেেকৗশলী তরিকুল ইসলাম অনিয়মের কথা স্বীকার করে বলেন, ২০১৯ সালে তালগাছের চারা লাগানো হয়। কিন্তু আমরা পরিদর্শন করে অনিয়ম পেয়েছি। এজন্য ঠিকাদারকে বিল পরিশোধ করা হয়নি। ঠিকাদারের সঙ্গে বিষয়টি সমন্বয় করে পুনরায় তালগাছের চারা রোপণ করা হবে। রা/অ