শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৬:২৩ am

সংবাদ শিরোনাম ::
তানোরে শিক্ষক সমিতিকে নিজ পকেটে রাখতে মরিয়া বিএনপি নেতা মিজান অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে চান জেড আই খান পান্না নগরীতে বিএনপি নেতাকে ছুরিকাঘাত আগামী ২৯ নভেম্বর খুলছে রাজশাহী সুগার মিল জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের স্মরণে স্মরণসভা রাজশাহীতে যুবলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ১১ বাগমারা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবু তালেবের ইন্তেকাল তানোরে মসজিদের এসি অফিসার্স ক্লাবে, ইমামের অর্থ আত্নসাৎ প্রমান পেয়েছে তদন্ত কমিটি সাংগঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তানোরে বিএনপির কর্মীসভা নগরীতে ছাত্রলীগ নেতাসহ বিভিন্ন অপরাধে ৮ জন গ্রেপ্তার লীজকৃত পুকুর দখল, মালিককে বুঝিয়ে দিতে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ পুঠিয়ায় ভুয়া ডাক্তার ধরে প্রাননাশের হুমকির মুখে সাংবাদিকরা রাজশাহী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে দুর্নীতির প্রতিবাদে মানববন্ধন তানোর থানায় দালালের দৌরাত্ন্য বৃদ্ধি, অসহায় মানুষ দুর্গাপুরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে আটক ৩ জনের কারাদণ্ড গ্রাহকের ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ, বন্ধু মিতালীর চেয়ারম্যানসহ আটক ৪ রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে আ.লীগকে দূরে রাখতে ছাত্রনেতাদের চাপ অর্ন্তবর্তী সরকারকে নিরপেক্ষ না হওয়ার আহ্বান বিএনপি নেতাদের তানোরে সরকারি কর্মকর্তা ও সুধীজনদের সাথে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সাম্প্রতিক সময়ে অটোরিকশা বন্ধের দাবিতে সচেতন নাগরকবাসী
গোদাগাড়ীতে মাদক মামলার আসামি বিদেশে, কলেজছাত্রকে ধরে জেলে

গোদাগাড়ীতে মাদক মামলার আসামি বিদেশে, কলেজছাত্রকে ধরে জেলে

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোদাগাড়ী :
গ্রেপ্তারী পরোয়ানার আসামীর সঙ্গে শুধুমাত্র নাম ও পিতার নামের মিল থাকায় মাদক মামলায় এক কলেজছাত্রকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে রাজশাহীর গোদাগাড়ী মডেল থানা পুলিশ। মাতার নাম ও গ্রামের নাম আলাদা হলেও সোমবার ওই কলেজছাত্রকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় এসআই আতিকুর রহমান।

ওই কলেজছাত্রের নাম ইসমাইল হোসেন (২১)। তিনি গোদাগাড়ী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ফাজিলপুর গ্রামের আবদুল করিমের ছেলে। তার মাতার নাম মোসা: মনোয়ারা বেগম। ইসমাইল গোদাগাড়ী সরকারি উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের একাদশ শ্রেণীর মানবিক বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র।

অপরদিকে, মাদক মামলার গ্রেপ্তারী পরোয়ানার আসামীর নাম ইসমাইল হোসেন (২০)। তিনি গোদাগাড়ী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের লালবাগ হেলিপ্যাড গ্রামের আবদুল করিমের ছেলে। তার মাতার নাম মোসা: বেলিয়ারা। আসামি ইসমাইল পেশায় কাঠমিস্ত্রি। মাদক মামলায় আসামি হওয়ার পর থেকে তিনি ভারতের চেন্নাই গিয়ে কাঠমিস্ত্রির কাজ করছেন।

কলেজছাত্র ইসমাইল হোসেনের ভাই আবদুল হাকিম রুবেল জানান, গত রোববার (১২ মে) এশার নামাজের সময় গোদাগাড়ী মডেল থানার এসআই আতিকুর রহমান আমাদের বাড়িতে আসে। এ সময় তিনি একটি মাদক মামলার গ্রেপ্তারী পরোয়ানা দেখিয়ে আমার ভাই ইসমাইল হোসেনকে ধরে নিয়ে যান।

আমরা এসআইকে বার বার বলেছি তার নামে কোনো মাদক মামলা নেই। এ সময় তার জাতীয় পরিচয়পত্রও দেখানো হয়েছে। গ্রেপ্তারী পরোয়ানার সঙ্গে গ্রাম, মাতার নাম ও বয়স মিল নেই সেটিও দেখিয়েছি।

এরপরও এসআই আতিকুর রহমান জোরপূর্বক আমার ভাইকে ধরে নিয়ে যান এবং পরের দিন ৫০ গ্রাম হেরোইন রাখার মাদকদ্রব্য আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠায়। বর্তমানে কলেজছাত্র ইসমাইল কারাগারে রয়েছেন।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২৯ আগস্ট রাত পৌনে ১১টার দিকে গোদাগাড়ীর মাদারপুর জামে মসজিদ মার্কেটের সামনে থেকে রাজমিস্ত্রি ইসমাইল হোসেনকে ৫০ গ্রাম হেরোইনসহ গ্রেপ্তার করে রাজশাহী জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

রাতেই তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে গোদাগাড়ী মডেল থানায় মামলা করেন ডিবির এসআই ইনামুল ইসলাম। এর পরের দিন তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এর এক মাস পর গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ইসমাইল হোসেন জামিনে মুক্তি পান। এরপর তিনি ভারতের চেন্নাই চলে যান। সেখানে গিয়ে তিনি তার পিতার সঙ্গে কাঠমিস্ত্রির কাজ করছেন। তার পিতা আবদুল করিম ছয় বছর ধরে চেন্নাই রয়েছেন।

পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে নাম্বার সংগ্রহ করে ইমু অ্যাপসে যোগাযোগ করা হলে নিজে মাদক মামলার আসামি কথা স্বীকার করেন গ্রেপ্তারী পরোয়ানার আসামি ইসমাইল হোসেন জানান, আমাদের মুল বাড়ি গোদাগাড়ী উপজেলার চর আড়ানিয়াদহ ইউনিয়নের দিয়ার মানিক চক গ্রামে। দুই বছর আগে আমরা লালবাগ হেলিপ্যাড গ্রামে জমি কিনে বাড়ি করেছি। এরপর থেকে আমরা সেখানে বসবাস করি।

তিনি বলেন, আমি গোদাগাড়ীতে থাকা অবস্থায় কাঠ মিন্ত্রীর কাজ করতাম। এক বন্ধুর সাথে ঝামেলা হয়। ওই বন্ধু মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশ আমাকে উপজেলা পরিষদের সামনে ডেকে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তারা আমাকে ধরে নিয়ে গিয়ে ৫০ গ্রাম হেরোইন দিয়ে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠায়।

ইসমাইল বলেন, আমার আগে থেকেই পাসপোর্ট করা ছিল। জামিনে মুক্তি পেয়ে ভারতের চেন্নাই চলে এসেছি। তাদের দাবিকৃত অর্থ না দেওয়ার কারণে জেলা ডিবি পুলিশ আমাকে মাদক মামলা দিয়ে ফাঁসিয়ে দিয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

এদিকে, ভুল আসামি ধরে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় ভুক্তভোগি কলেজছাত্র ইসমাইলের পরিবারের পক্ষ থেকে গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি আবদুল মতিনসহ পুলিশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোন লাভ হয়নি।

সোমবার রাতে ভুক্তভোগির ভাই আবদুল হাকিম রুবেল গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নথিপত্র দেন। রাতে ভূল আসামি ধরে চালান দেওয়ার সকল নথিপত্র দেখানোর পরও সেটি মানতে নারাজ থানার ওসি আবদুল মতিন ও এসআই আতিকুর রহমান। এরপর বিষয়টি নিয়ে গোদাগাড়ী সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার (এএসপি) সোহেল রানাকে অবগত করা হলে তিনি বিষয়টির সত্যতা যাইয়ের জন্য গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি আবদুল মতিনকে নির্দেশ দেন।

মঙ্গলবার সকালে গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি আবদুল মতিন বলেন, মূল আসামীর সঠিক ঠিকানা পাওয়া গেছে। যাকে ভূল করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে তার জন্য আদালতে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। আশা করছি তার জামিন হয়ে যাবে।

গোদাগাড়ী সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার (এএসপি) সোহেল রানা বলেন, ওসিকে আমি পাঠিয়ে ঠিকানা নিশ্চিত হয়েছি। ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সকালে আদালতে প্রতিবেদন দিতে। এতে করে ভুলে গ্রেপ্তার কলেজছাত্র ছাড়া পেয়ে যাবেন। কিভাবে এ ধরণের ভুল হল বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে বলেও জানান তিনি। রা/অ

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.