রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৫:৫৪ am
নিজস্ব প্রতিবেদক, গোদাগাড়ী :
মহানগরীর বোয়ালিয়া থানাধীন টিকাপাড়া (খুলিপাড়া) এলাকায় র্যাব-৫ এর বিশেষ অভিযানে কিশোর গ্যাংয়ের হোতা মো: আজিজ ও গ্যাংয়ের অন্যতম সদস্য মো: হিটলার, মো: রবিন, মো:সজিব ও মো: ইয়াছিন আলীকে গ্রেফতার করেছে ।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২ মে) রাত্রি আনুমানিক ৯টার সময় রাজশাহী র্যাব-৫ এর একটি টিম অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে।
তবে আজিজ বাহিনীর অন্য সদস্যরা কৌশলে পলায়নে সক্ষম হয় বলে জানা যায়। বিশেষ সূত্রে জানা যায়, আসামী কিশোর গ্যাং হোতা আজিজ, মজিদ, রবিন, হিটলার, সজিব, ইয়াছীন, আক্কাস ওরফে আকাই, বাদল, সুইট সহ অজ্ঞাত নামা ১০/১৫ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অত্র এলাকায় মো: আলতাবের ভাড়াবাড়িতে অনধিকার প্রবেশকরে তার ভাগ্নি জামাই ছোটন ও পরিবারের অন্যান্য লোকজনদের হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাথাড়ি মারধর করা শুরু করে। এই সময় মো: আলতাব নিরাপত্তা চেয়ে র্যাব-৫ রাজশাহীতে যোগাযোগ করলে কিছুক্ষণের মধ্যেই র্যাবের টহল দল ঘটনাস্থলে পৌছায়। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পর বিশেষ অভিযান চালিয়ে কিশোর গ্যাং হোতা আজিজ সহ ৫জন কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় । উল্লেখ্য যে, মহানগরীর খুলিপাড়া এলাকার আজিজ ও তার কিশোর গ্যাং অত্র এলাকায় রীতিমতো ত্রাস সৃষ্টি করে রেখেছে। প্রায়ই আজিজ ও তার গ্যাং দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে এলাকায় শো- ডাউন দেয়। বিগত কয়েকবছর থেকে এই গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে আরএমপির বিভিন্ন থানায় নানান নাশকতার অভিযোগ উঠেছে। গতবছর ২২শে জুন আজিজ ও তার কিশোর গ্যাং অত্র এলাকার মো: মনা, মো: মুকুল কে হত্যার উদ্দেশ্যে প্রকাশ্যে দিবালোকে আঘাত করে। একই দিনে আজিজ বাহিনী মো: আলতাবকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে এক হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন করে বিচ্ছিন্ন কব্জি এলাকার একটি নার্সারিতে ফেলে রেখে যায়।
পরবর্তীতে পুলিশের সহায়তায় আহতদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। আহত আলতাবের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে হেলিকপ্টার যোগে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কিন্তু তার বিচ্ছিন্ন কব্জি জোড়া লাগানো সম্ভব হয়নি। ফলে বর্তমানে সে এখন পঙ্গু হয়ে জীবন যাপন করছে। আহত মনাও এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক জীবন যাপনে ফিরতে পারেনি। উক্ত ঘটনায় বাদি হয়ে আলতাবের ছেলে মো: সাকিব বোয়ালিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছিল । মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে। মামলায় জামিনে মুক্ত হয়ে আসার পর আজিজ ও তার বাহিনী পূর্বের চেয়েও আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে বলে জানা গেছে। তারা প্রায়ই মামলা প্রত্যাহার করার জন্য আলতাব ও তার পরিবারকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে, প্রাণনাশের হুমকি দেয়, বাদির বাড়িতে গিয়ে গালিগালাজ ও ভাঙচুর করে। মো: আলতাব ও তার পরিবার বিভিন্ন অভিযোগে আজিজ বাহিনীর বিরুদ্ধে বোয়ালিয়া থানায় ৫টি জিডি করে ও নিরাপত্তা চেয়ে আরএমপি পুলিশ কমিশনার মহাদয় বরাবর ৩বার আবেদন করে।
কিন্তু, অজানা রহস্যের কারণে আসামিদের বিরুদ্ধে কোনোরকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। আজিজ বাহিনীর অস্ত্রের ঝলকানিতে অত্র এলাকা ভীতসন্ত্রস্ত হলেও তা পুলিশ প্রশাসনের কর্ণ অব্দি পৌছায়নি। আজিজ বাহিনীকে হাতেনাতে অস্ত্রসহ আটকের অনেক সুযোগ থাকলেও এই বাহিনীকে আটক করতে পারেনি আরএমপি পুলিশ বা ডিবি। এই প্রথম র্যাব-৫ এর বিশেষ টিম এর কাছে কুখ্যাত এই গ্যাংয়ের নেতাসহ কয়েকজন গ্রেফতার হয়।
উক্ত ঘটনায় ৩রা মে বোয়ালিয়া থানায় মো: আলতাব বাদি হয়ে আজিজ সহ তার গ্যাংয়ের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির।
ভুক্তভোগী মো: আলতাব ও তার পরিবার আসামিদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণসহ প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা দাবি জানান। রা/অ