শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৫:১২ am

সংবাদ শিরোনাম ::
তানোরে শিক্ষক সমিতিকে নিজ পকেটে রাখতে মরিয়া বিএনপি নেতা মিজান অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে চান জেড আই খান পান্না নগরীতে বিএনপি নেতাকে ছুরিকাঘাত আগামী ২৯ নভেম্বর খুলছে রাজশাহী সুগার মিল জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের স্মরণে স্মরণসভা রাজশাহীতে যুবলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ১১ বাগমারা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবু তালেবের ইন্তেকাল তানোরে মসজিদের এসি অফিসার্স ক্লাবে, ইমামের অর্থ আত্নসাৎ প্রমান পেয়েছে তদন্ত কমিটি সাংগঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তানোরে বিএনপির কর্মীসভা নগরীতে ছাত্রলীগ নেতাসহ বিভিন্ন অপরাধে ৮ জন গ্রেপ্তার লীজকৃত পুকুর দখল, মালিককে বুঝিয়ে দিতে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ পুঠিয়ায় ভুয়া ডাক্তার ধরে প্রাননাশের হুমকির মুখে সাংবাদিকরা রাজশাহী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে দুর্নীতির প্রতিবাদে মানববন্ধন তানোর থানায় দালালের দৌরাত্ন্য বৃদ্ধি, অসহায় মানুষ দুর্গাপুরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে আটক ৩ জনের কারাদণ্ড গ্রাহকের ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ, বন্ধু মিতালীর চেয়ারম্যানসহ আটক ৪ রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে আ.লীগকে দূরে রাখতে ছাত্রনেতাদের চাপ অর্ন্তবর্তী সরকারকে নিরপেক্ষ না হওয়ার আহ্বান বিএনপি নেতাদের তানোরে সরকারি কর্মকর্তা ও সুধীজনদের সাথে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সাম্প্রতিক সময়ে অটোরিকশা বন্ধের দাবিতে সচেতন নাগরকবাসী
গৃহবধূ থেকে কাটাখালী পৌরসভায় মেয়র হলেন মিতু

গৃহবধূ থেকে কাটাখালী পৌরসভায় মেয়র হলেন মিতু

নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজনীতির মাঠে আগে কখনো দেখা যায়নি। ঘর-সংসার আর সন্তানকে নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন রাবেয়া সুলতানা মিতু। নিছক তিনি একজন গৃহবধূ। এই নারীই প্রথমবারের মতো রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার মেয়র পদের উপনির্বাচনে অংশ নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। হারিয়ে দিয়েছেন প্রতিদ্বন্দ্বী আট প্রার্থীকে। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে মিতুর পাওয়া ভোটের ব্যবধানও প্রায় দ্বিগুণ।

রোববারের এ ভোটের পর এর ফলাফল নিয়ে এখন বিশ্লেষণ চলছে। রাজশাহীর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে মিতুর এই বিজয়কে একটু আলাদা চোখেই বিচার করা হচ্ছে। কারণ তার জয়ের নেপথ্যে রয়েছেন স্বামী সাবেক মেয়র আব্বাস আলী। তিনি কাটাখালী পৌর আওয়ামী লীগের আহবায়ক ছিলেন।

ঘরোয়া আলাপের একটি অডিও ফাঁস হওয়াকে কেন্দ্র করে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয় এবং এই অডিওকে কেন্দ্র করে করা মামলার কারণে প্রায় এক বছর তিনি কারাভোগ করেন। তখন তাকে মেয়রের পদ থেকেও বরখাস্ত করা হয়।

স্থানীয় রাজনীতিতে আব্বাস কোণঠাসা হওয়ার পরে তার জায়গা দখলে নেওয়ার চেষ্টা করেন দলের নেতা আবু শামা। তিনি পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতির পদও পেয়ে যান। এ উপনির্বাচনে তিনি মেয়র প্রার্থীও হয়েছিলেন। তবে ভোট পেয়েছেন মাত্র ৩ হাজার ৪৮৭টি। আর আব্বাসপত্নী মিতু পেয়েছেন ৬ হাজার ৩০৮ ভোট।

আব্বাসবিরোধী হিসেবে পরিচিত পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম রিপন পেয়েছেন মাত্র ১ হাজার ৩৩৯ ভোট। এক সময়ের জামায়াত-শিবির অধ্যুষিত এই এলাকায় সাবেক শিবির নেতা মিজানুর রহমান পেয়েছেন ২ হাজার ৯১৭ ভোট। আর জামায়াত নেতা সিরাজুল হক পেয়েছেন মাত্র ৩৮৪ ভোট। কয়েকজন প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

এ নির্বাচনে মিতুর বিজয়কে স্বামী আব্বাস আলীর বিজয় হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হোসেন দুলাল বলেন, কাটাখালী এলাকাটি একসময় জামায়াত অধ্যুষিত ছিল। এবারের উপনির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী মিজানুর রহমানের বাবা জামায়াত নেতা মাজেদুর রহমান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। পৌরসভা গঠনের পর মেয়রও হন। সবমিলিয়ে প্রায় দেড় দশক তিনি কাটাখালীর জনপ্রতিনিধি হিসেবে জামায়াতকে শক্তিশালী করেন।

তিনি বলেন, পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে দুইবার মেয়র হয়ে আব্বাস আলী জামায়াতের সেই শক্তি ভেঙে দেন। তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ শক্তিশালী হয়; কিন্তু রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীরা তাকেই কোণঠাসা করে তার জায়গা দখলের চেষ্টা করেছিলেন। তারা কিছুদিন সুযোগ পেয়ে কাটাখালীতে সন্ত্রাস শুরু করেছিলেন। এই ভোটে অনেক ষড়যন্ত্রের জবাব দেওয়া হয়েছে। ভোটে আব্বাসের স্ত্রীর জয় মানে আব্বাসেরই জয়।

আগে কখনো রাজনীতি না করেও মিতুর বিপুল ভোটে এ জয়ের কারণ কী, এমন প্রশ্নে কাটাখালী বাজারের ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, কারণ শুধুমাত্র তার স্বামী। স্বামী আব্বাস আলীকে দেখেই পৌরবাসী মিতুকে ভোট দিয়েছেন। কারণ আব্বাস আলী মেয়র থাকা অবস্থায় ভালো কাজ করেছেন। এলাকার উন্নয়ন করেছেন। বিশেষ করে করোনার সময় তিনি যেভাবে খাদ্যসহায়তা দিয়েছেন সে কথা এখনো মানুষের মুখে মুখে। তাকে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে, কিন্তু থামানো যায়নি। এই ভোটেই সেটার প্রমাণ হয়েছে।

এ নির্বাচনে যেকোনো উপায়ে আব্বাসপত্নীকে ঠেকানোই ছিল অন্য প্রার্থীদের লক্ষ্য। আইনগত বাধার কারণে আব্বাস প্রার্থী হতে না পারলে ভোটে আসেন স্ত্রী মিতু। উচ্চ আদালতের নির্দেশে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র উত্তোলন ও দাখিলের সময় শেষ হলেও তিনি মনোনয়নপত্র দাখিলের সুযোগ পান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে অন্য আট প্রার্থী রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরে গিয়ে তার সঙ্গে চোটপাট করেছিলেন।

আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত ও শিবিরের এই আট প্রার্থী একসঙ্গে বলেছিলেন, মিতুকে যেন প্রার্থিতা দেওয়া না হয়। তাদের মধ্যে থেকে সাতজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেবেন। একজন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেন। তবে শেষপর্যন্ত তা হয়নি। ভোটে মিতুই মেয়র হলেন।

এখন স্বামীর দিকনির্দেশনা নিয়েই পৌরসভাকে এগিয়ে নিতে চান মিতু। তিনি বলেন, আমার স্বামী এই পৌরসভার দুইবারের মেয়র ছিলেন। তার অনেক অভিজ্ঞতা আছে। আমি নতুন হলেও তার দিকনির্দেশনা নিয়ে পৌরসভাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কাজ করব।

মিতুর স্বামী সাবেক মেয়র আব্বাস আলী বলেন, ভোটের এই ফল সব ধরনের অন্যায়-অবিচার ও জুলুমের জবাব। এই জয় কাটাখালী পৌরসভার সব মানুষের জয়। তারা যে অন্যায়ের বিরুদ্ধে, এই ভোটের ফল তার প্রমাণ। এখন আগের মতো সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ভূমিদস্যুতা ও ইভটিজিংমুক্ত এলাকা গঠনই আমাদের লক্ষ্য। পৌরসভায় আবার নাগরিক সেবা ফিরে আসবে। রা/অ

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.