রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১১:৩১ pm
দেশের সংবিধানে রাষ্ট্র ও সরকারের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। এখানে রাষ্ট্র, সরকার, সরকারি দল সব একাকার। ফলে সরকার ইচ্ছা না করলে সরকারি দলের অন্যায়ের প্রতিকার বা বিচার পাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই।
ভাসানী অনুসারী পরিষদ, ছাত্র-যুব-শ্রমিক অধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন ও রাষ্ট্রচিন্তা—এই চার সংগঠনের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে। আজ শনিবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি পাঠানো হয়েছে।
১৯৭১ সালের এই দিনে (১০ এপ্রিল) নবগঠিত প্রবাসী সরকার ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র’ পাঠ করে। স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র ছিল বাংলাদেশের প্রথম সংবিধান। এই সংবিধানের মাধ্যমেই দেশের প্রথম সরকার সফলভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে। পরবর্তী সময়ে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের ভিত্তিতেই বাহাত্তরের (১৯৭২) সংবিধান রচিত হয়।
চারটি সংগঠনের দাবি, বাংলাদেশের সংবিধানের ৪টি মৌলিক অসংগতি রয়েছে। ১. তৎকালীন পাকিস্তানে ১৯৬২ সালের সংবিধানেও প্রেসিডেন্টকে অপসারণের একটা বিধান ছিল। কিন্তু ১৯৭২ সালে সংবিধান থেকে ‘প্রধানমন্ত্রীকে অপসারণ’ শব্দটিকে পরিকল্পিতভাবে অপসারণ করা হয়েছে, যেন জনগণ শীর্ষ পদাধিকারীদের অপসারণের কথা চিন্তাও করতে না পারে। ২. এই সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রের সব ক্ষমতা অর্থাৎ আইন-বিচার-প্রশাসন সব বিভাগের সবকিছু নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর হাতে কেন্দ্রীভূত। আর প্রধানমন্ত্রীর জবাবদিহির কোনো সাংবিধানিক ব্যবস্থা নেই। তিনি সংবিধানের ঊর্ধ্বে, সংবিধান তাঁর ইচ্ছেপূরণের হাতিয়ারমাত্র। ৩. বাহাত্তরের সংবিধানে রাষ্ট্রটিকে ‘গণপ্রজাতন্ত্র’ বলা হলেও কার্যত ‘এক ব্যক্তির ইচ্ছাতান্ত্রিক’ একটি রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছে। ৪. সংবিধানের দুইটি অংশের মধ্যে একটি অংশে বলা আছে, এ রাষ্ট্রটির লক্ষ্য-উদ্দেশ্য-নীতি সম্পর্কে এবং অপর অংশে বলা আছে এই রাষ্ট্র যাঁরা পরিচালনার দায়িত্ব পাবেন তাঁরা কী কী ক্ষমতা ভোগ করবেন। সংবিধানের এই দুই অংশ পরস্পরবিরোধী।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘এই সংবিধানে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা বদলের পথ রুদ্ধ করা হয়েছে। ফলে হত্যা-ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত-ক্যু-অভ্যুত্থান বা সহিংসতা ছাড়া রাষ্ট্রক্ষমতার পালাবদলের কোনো উপায় নেই। এই সংবিধানে ব্রিটিশ এবং পাকিস্তান আমলের রাষ্ট্র পরিচালনার ‘নিপীড়নমূলক আইনগুলোকে’ বৈধতা ও ধারাবাহিকতা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি গত ৫০ বছরে প্রয়োজন অনুসারে আরও ‘দমন এবং পীড়নমূলক’ করা হয়েছে। সাংবিধানিক এই ‘ভয়াবহ প্রক্রিয়ার ভেতর ফেলে’ ক্রমাগতভাবে সুস্থ, নিবেদিত, ত্যাগী, সৎ ও পরীক্ষিত নেতা-কর্মীদের হাত থেকে রাজনীতিকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। বিপরীতে হত্যা, ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত, ক্যু এবং সহিংসতা করতে সক্ষম এমন ‘দাঙ্গাবাজ, মাস্তান, মাফিয়া, দালাল ও দেশদ্রোহীদের’ কাছে রাজনৈতিক নেতৃত্বকে তুলে দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি’ অংশের সঙ্গে রাষ্ট্রের ক্ষমতাকাঠামোর যে ‘বৈপরীত্য’ তৈরি করা হয়েছে, সেটা দূর করা ছাড়া দেশ এবং জনগণ চলমান সংকট থেকে উদ্ধার পাবে না। সূত্র : প্রথমআলো। আজকের তানোর