বৃহস্পতিবর, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০১:৫৬ am
আশারাফুল ইসলাম রনজু :
তীব্র তাপপ্রবাহে প্রকৃতি যেন পুড়ে যাচ্ছে। এঅবস্থায় শনিবার (২৭ এপ্রিল) থেকে আরও ৩-৪ দিন হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে এই গরমের মধ্যেও রাজশাহীর তানোরে বোরো ধান কেটে ঘরে তোলার উৎসবে মেতে উঠেছেন কৃষকরা। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন শুরু হয়েছে। তাই মনের আনন্দে গরমে হাঁসফাঁস পরিস্থিতির মধ্যেও ধান কাটতে ক্ষেতে নেমেছে কৃষক ও শ্রমিক আর উপজাতি নারী-পুরুষ।
সরজমিনে দেখা গেছে, তানোর উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সোনালী ধানের সমারোহ। আর এই সোনালী ধানের উপর নির্ভর করে চলে তানোর উপজেলার কৃষক ও শ্রমিক পরিবার। ফলে এলাকার বাইরে থাকা বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ ছুটে আসছে ধান কাটার জন্য। পাকা ধানের ঘ্রাণে মোহিত হচ্ছে তানোর উপজেলার কৃষকদের বাড়ির আঙিনা।
উপজেলার কৃষি অফিসের তথ্যমতে, পুরো উপজেলার দুটি পৌরসভা আর সাতটি ইউনিয়নে ১২ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। এরমধ্যে ১২ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ করা হয়েছে। এসব জমিতে প্রতি বিঘায় কেজির ওজনে ২১ মণ ধানের উৎপাদন ধরা হয়। সেই হিসেব মতে এতোসব জমিতে উৎপাদন ধরা হয়েছে প্রায় ২০ লাখ মেট্রিক টন ধান। অন্যবারের চেয়ে এবার বোরো ধানের ফলন ভালো হচ্ছে। তবে এবার শ্রমিকের তেমন সংকট নেই। আরও ১৫ দিন এরকম আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফলন পাওয়ার আশা প্রকাশ করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
এনিয়ে কৃষক বিজয় বলেন, পুরো উপজেলার বেশিরভাগ জমিতে বোরো ধানে পাক ধরেছে। আবার কেউ কেউ ধান কাটা মাড়াই শুরু করেছে। এবারে বোরো ধানের ফলন ভাল হচ্ছে। আগামী দুই সপ্তা মেঘ-বৃষ্টি না হলেই আমরা বেশি খুশি। তাহলে আমরা জমির ধান কেটে ভাল ভাবে ঘরে তুলতে পারব।
আমশো গ্রামের কৃষক সোহাগ আলী বলেন, আমাদের প্রায় ২০ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছি। এরমধ্যে ১৫ বিঘা জমির ধান কাটা শুরু হয়েছে। এরমধ্যে ২ বিঘা জমির ধান মাড়াই করে ৬৫ মণ পাওয়া গেছে। উৎপাদন খরচের দ্বিগুন লাভ হয়েছে। আর আলুর জমিতে রোপিত ধান কাটতে কিছু দিন সময় লাগবে। এঅবস্থায় আর মাত্র দুই সপ্তা আবহাওয়া ভালো থাকে ধানের বাম্পার ফলন হওয়ার আশা করেন সোহাগ।
এব্যাপারে তানোর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সাইফুল্লাহ আহমেদ বলেন, উপজেলার সব জায়গায় পুরোদমে ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে, এবারে ধান কাটা শ্রমিকর সংকট নেই। বৈরি আবহাওয়া থাকলেও কৃষক-শ্রমিকের কাছে প্রভাব নেই। এজন্য এ বছরও ফলন বেশি হওয়ার আশা করছেন তিনি।
তাছাড়া কৃষকরা যাতে ভালোভাবে তাদের ধান ঘরে তুলতে পারে, সেজন্য আমাদের অফিস থেকে নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছে মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা। আর এবারও বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা। রা/অ