রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৪:২৩ am
এম এম মামুন, নিজস্ব প্রতিবেদক :
অস্বাস্থ্যকর, অনিরাপদ ও নন-ফুডগ্রেড ড্রামে ভোজ্য তেল ব্যবহারের প্রতিবাদে কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) রাজশাহী জেলা কমিটির উদ্যোগে মানববন্ধন ও লিফলেট বিতরণ করা হয়। সোমবার (২২ এপ্রিল) বেলা ১১টায় সাহেব বাজার জিরোপয়েন্টে সর্বস্তরের নাগরিক ও ভোক্তাদের নিয়ে সচেতনতা মূলক লিফলেট বিতরণ ও মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ক্যাব কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা (অভিযোগ) ইঞ্জিনিয়ার খাদেমুল ইসলাম।
ক্যাব রাজশাহী জেলার সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মামুনের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন রাজশাহী ক্যাবের উপদেষ্টা ও সোনালী সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক লিয়াকত আলী, সোনারদেশ পত্রিকার সম্পাদক ক্যাবের সদস্য হাসান মিল্লাত, রাজশাহী ক্যাবের উপদেষ্টা এডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান খান আলম, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা আবুল কালাম আজাদ, রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান, নাগরিক ভাবনার আহবায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব, রাজশাহী ক্যাবের দপ্তর সম্পাদক কবি অনুরুদ্ধ, দিনের আলো হিজরা সংঘের সভাপতি মোহনা,প্রচার সম্পাদক সঞ্জু আহম্মেদ ও সদস্য সুভাস হেমরম প্রমুখ।
সভায় বক্তারা উল্লেখ করেন ভোজ্য তেলে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধকরণ আইন ২০১৩ অনুযায়ী ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধকরণ ব্যতীত ভোজ্যতেল বাজার জাতকরণ দণ্ডনীয় অপরাধ। অত্র আইন এবং “ভোজ্যতেল ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধকরণ বিধিমালা, ২০১৫” অনুযায়ী সকল ভোজ্য তেলে নির্ধারিত মাত্রায় ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধকরণ বাধ্যতামূলক। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, ড্রামে বাজারজাতকৃত ৫৯ শতাংশ ভোজ্য তেল ইভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ নয় এবং ৩৪ শতাংশ ভোজ্য তেলে সঠিক মাত্রায় ভিটামিন ‘এ’ নেই। খোলা ড্রামের অনিরাপদ ভোজ্য তেল ব্যবহারের কারণে মনুষের মধ্যে নানাবিধ রোগব্যাধি বিশেষত অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। গত ১ এপ্রিল ২০২১ ও ১ জুলাই ২০২১ তারিখ থেকে ঐ সকল ড্রামে ভোজ্য তেল বাজারজাত বন্ধে নির্দেশ প্রদান করে তা বাস্তবায়ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, এজেন্সিসমূহ, ভোজ্য তেল রিফাইনারী এবং প্যাকাসর্ সমূহকে অনুরোধ/নির্দেশনা প্রদান করেছে।
তারা আরও বলেন, গত ২ জুন ২০২২ তারিখে শিল্পমন্ত্রণালয় বিভিন্ন পরিস্থিতি বিবেচনা কওে উক্ত সময়সীমা ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে। একই আদেশে উক্ত সময়ের পর শতভাগ ভোজ্য তেল ফুডগ্রেড বোতল/ফয়েল/পাউচ প্যাকে বাজারজাত নিশ্চিত করতে নির্দেশ প্রদান করেছে। পাশাপাশি নির্বাচন এবং রমজান বিবেচনা করে অনানুষ্ঠানিক ভাবে ভোজ্য তেল ব্যবসায়ীগণ রমজান মাস পর্যন্ত সময় পেয়েছেন। তথাপি এখন পর্যন্ত ঐ সকল ড্রামে বাজারজাত করা হচ্ছে এবং শতভাগ প্যাকেট জাত হচ্ছেনা। ফলে জনগণকে অনিরাপদ ভোজ্য তেল খেতে বাধ্য করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ভোজ্য তেল ফুডগ্রেড প্যাকেজিং না করা “খাদ্য স্পর্শক প্রবিধানমালা, ২০১৯” এরপরিপন্থী। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জনস্বাস্থের উন্নয়ন এবং সুরক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। নিরাপদ এবং গুণগত মান সম্পন্ন খাবার নিশ্চিত করা সরকারের অগ্রাধিকারভুক্ত কাজ গুলোর মধ্যে অন্যতম এবং এটি টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট- এসডিজি’র সবার জন্য সুস্বাস্থ্য সংক্রান্ত লক্ষ্য অর্জনের সাথেও সম্পৃক্ত।
সরকারের একার পক্ষে এই কাজ যথাযথভাবে সম্পন্ন করা দুরূহ। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ী, জনস্বাস্থ্যবিদ, সুশীল সমাজ, জনপ্রতিনিধি, উন্নয়ন সহযোগী, গণমাধ্যম, নীতিনির্ধারকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। ভোক্তার স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য অবিলম্বে নন-ফুডগ্রেড ড্রামে ভোজ্যতেল বাজারজাত বন্ধকরণে সরকারি নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে আপনার পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকার ও স্থানীয় প্রসাশনের প্রতি আহবান জানানো হয়। রা/অ